অবসরপ্রাপ্ত সেনা সার্জেন্টের আত্মহত্যা, ২ নারী গ্রেফতার
একটি বেসরকারি স্কুলে পড়ানোর ছদ্মবেশে দুই নারী মানুষকে ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করত। অবশেষে, পুলিশ আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সার্জেন্টকে গ্রেফতার করে।
তারা হলেন আইরিন ইয়াসমিন লিজা (৩৪) এবং শামীমা আক্তার (২৪)। আইরিনের গ্রামের বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলার বালিচ গ্রামে। আর শামীমা ঢাকার সাভারের ডেন্দাবর নাটুনপাড়ার বাসিন্দা। দুজনেই ঢাকার সাভারের একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক।
রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া পুলিশ রবিবার রাতে ঢাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। তাদের বিরুদ্ধে মজিবুর রহমান নামে একজনকে আত্মহত্যার জন্য উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, মজিবুর রহমান রাজশাহীতে প্লট ব্যবসা করতেন এবং প্রাইভেট কার ভাড়া করতেন। গত ফেব্রুয়ারি মহানগরের উপকণ্ঠ ২ নং সেক্টরের একটি ভাড়া বাসা থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তার ছেলে থানায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছে।
মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে দুই নারী শিক্ষকের জড়িত থাকার বিষয়টি সামনে আসে। এরপর তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে মরহুম মজিবুর রহমানের মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার বিকেলে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, শিক্ষকতা পেশার ছদ্মবেশে এই দুই নারী মানুষকে ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করতেন। জিজ্ঞাসাবাদে আইরিন জানায়, মজিবুর রহমানের সঙ্গে তার অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল। গত ১ফেব্রুয়ারি তারা দুজন স্বেচ্ছায় মজিবুরের বাড়িতে আসে। রাতে তারা মজিবুরের পাশের রুমে ঘুমাত। এরপর মজিবুর রহমান মেসেঞ্জারের মাধ্যমে আইরিনকে তার বাড়িতে ডেকে পাঠান। যদি আইরিন না যায়, তারা মেসেঞ্জারে একটি তর্কে জড়িয়ে পড়ে। মজিবুর তখন বলেছিলেন যে, আইরিন যদি বিকাল ৫ টার মধ্যে না চলে যান তাহলে তিনি আত্মহত্যা করবেন। এরপর আইরিন মজিবুর রহমানকে মেসেঞ্জার ও এসএমএসের মাধ্যমে মরতে বলেন। গর্বের কারণে মজিবুর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
পরে সকালে আইরিন ও শামীমা তার ঝুলন্ত লাশ দেখে মজিবুরের মোবাইল ফোন, বাড়ির চাবি এবং নগদ চার লাখ টাকা এবং কিছু কাগজপত্র নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে আরএমপি কমিশনার বলেন, প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে যে দুই মহিলা ব্ল্যাকমেইল রিংয়ে জড়িত ছিলেন। তিনি আরও বলেন, মজিবুরকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।