তিন বোন ও স্ত্রী’কে নিয়ে গড়া সেই বিদ্যালয়টি আজ বিভাগে সবার সেরা !!
পড়তে, যেখানে কোনো শিক্ষক নেই! আর কে-ইবা চাইবে সেই স্কুলে শিক্ষক হতে যেখানে পড়াতে হবে বিনা বেতনে? কিন্তু নানা প্রতিবন্ধকতা পাড়ি দিয়ে ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে তোলা এই স্কুলটিই এবার সেরা হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে রংপুর বিভাগে।ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী বকুয়া ইউনিয়নের নিভৃত গ্রামের এ স্কুলটি ভবিষ্যতে আরও সফলতার মুখ দেখবে বলে প্রত্যাশা শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়দের।
প্রধান শিক্ষক এরফান আলী নিজের উদ্যোগে বিদ্যালয়ে ৫ থেকে ১৮ বছরের শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (নিয়োগ শাখা) একেএম সাফায়েত আলম এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
এরফান আলী বলেন, চরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবার রংপুর বিভাগে সেরা হয়েছে। আশা করি, সবার সহযোগিতা পেলে জাতীয় পর্যায়ে সেরা হওয়ার গৌরবও অর্জন করতে পারব। সে লক্ষ্যেই কাজ করছি। আসন সমস্যা দূর হচ্ছে। খুব অল্প সময়েই নতুন ভবনে উঠতে পারব।
তিনি বলেন, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যখন স্কুলের কাজ শুরু করেছিলাম, আশপাশের লোকজন তখন বলত, পাগল হয়ে গেছি! না হলে এ রকম নিভৃত গ্রামে কেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করতে যাব? তাদের তখন বলতাম, আপনারা দোয়া করেন, তাহলে একদিন নিশ্চয় সফল হবো। এবার বিভাগে সেরা স্কুল ঘোষণা করায় কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। আমাদের দায়িত্ব আরও বেড়ে গেছে। কারণ এ বিদ্যালয়কে দেশের সেরা বিদ্যালয় হিসেবে পরিচিতি করাতে চাই।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হারুণ অর রশীদ বলেন, মাত্র ৪০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু হওয়া চরভিটা বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০১। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত এ স্কুলের কোনো শিক্ষার্থী ফেল করেনি। আশা করি, আগামীতে আরও ভালো করবে।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ( ভারপ্রাপ্ত) নুর কুতুবুল আলম বলেন, চরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও এরফান আলী শিক্ষাক্ষেত্রে দেশের মডেল। চরভিটা এলাকায় একটি বিদ্যালয় জরুরি ছিল। এরফান সে চাহিদা পূরণ করতে পেরেছেন। নিজের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠান করে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন তিনি। সত্যিই এটি মুগ্ধ হওয়ার মতো বিদ্যালয়।