বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে মঞ্চে থাকা মজিবুলের নামও রাজাকারের তালিকায় !!
সদ্য প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও স্বাধীনতা সংগ্রাম কমিটির সভাপতি আলহাজ মজিবুল হকের নাম প্রকাশ হওয়ায় জেলার বিজয় দিবসের মঞ্চে নিন্দা জ্ঞাপন করা হযেছে।
সোমবার সকালে পাথরঘাটা সরকারি কেএম মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির ভাষণে পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির এ নিন্দা জ্ঞাপন করেন। এ সময় উপস্থিত শত শত মুক্তিযোদ্ধা করতালির মাধ্যমে এ নিন্দার সমর্থন জানান।
গোলাম কবির বলেন, পাথরঘাটা আওয়ামী লীগ বলতে প্রথমে যার নাম নিতে হয়, তিনি মজিবুল হক। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার সংগ্রাম কমিটির মাধ্যমে পাথরঘাটা উপজেলা রাজাকার মুক্ত হয়েছিল।
আজ সেই ইতিহাস উল্টে গেছে। মজিবুল হকের নাম রাজাকারের তালিকায় প্রকাশ পাওয়ায় এই এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিপক্ষের শক্তিরা আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য মিথ্যা তথ্য প্রদান করে পাথরঘাটার আট রাজাকারের নামের তালিকায় মজিবুল হককে এক নম্বরে রেখে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এসব চক্রান্তকারীর বিচার দাবি করেন উপজেলা চেয়ারম্যান।
পাথরঘাটা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি আ. মন্নান হাওলাদার জানান, মজিবুল হক তার জীবন-যৌবন সব আওয়ামী লীগকে দান করে গেছেন। তিনি এক সময় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে একই মঞ্চে আ’লীগের রাজনীতি করতেন।
দক্ষিণাঞ্চলে বঙ্গবন্ধু যাকে আওয়ামী লীগ বলে চিনতেন, তিনিই মজিবুল হক। ১৯৮৬ সালে বরগুনা-২ আসন থেকে মজিবুল হক আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে সাংসদ নির্বাচন করেন। এ সময় তিনি বিপুল ভোটে জয়লাভ করলে জাতীয় পার্টির প্রার্থী তার সংসদ সদস্য পদ ঘোষণা দিয়ে নিয়ে যায়। তিনি মারা যাওয়ার পর পাথরঘাটায় মুক্তিযোদ্ধারা প্রতি বছর তার জন্য দোয়ার আয়োজন করেন। এসব আয়োজন আজ মিথ্যা হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আমরা আজ মহান বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠান থেকে মজিবুল হকের বিরুদ্ধে চক্রান্তকারীদের বিচার দাবি করছি। এ ছাড়া পাথরঘাটা উপজেলায় আট রাজাকারের তালিকা প্রকাশের মধ্যে তিনজন মুক্তিযোদ্ধার নামও রয়েছে। এ নিয়ে পাথরঘাটায় চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়েছে।
পাথরঘাটা উপজেলা বিজয় দিবস অনুষ্ঠানে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পাথরঘাটা থানার ওসি মো. শাবুদ্দিন, পাথরঘাটা উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুব্রত মল্লিক প্রমুখ।
সূত্রঃ যুগান্তর