বিনা ভাড়ায় আর প্রবাসীদের লা’শ আনবে না বিমান মন্ত্রণালয় !!
দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম প্রধান খাত রেমিটেন্সের সঙ্গে জড়িত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। আর বিশ্বের নানা প্রান্তে কর্মরত অভিবাসী বাংলাদেশিদের পরিবহনে বিমান সবসময়ই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।
প্রবাসে কোনো বাংলাদেশি মারা গেলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বিনা ভাড়ায় সেই লা’শ পরিবহন করে দেশে নিয়ে আসে। কিন্তু একেবারে বিনা ভাড়ায় রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থার মাধ্যমে প্রবাসীদের লা’শ পরিবহনে আপত্তি জানিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।লা’শ পরিবহনের ক্ষেত্রে খরচ চেয়ে শিগগিরই বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হচ্ছে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মহিবুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রতি বছর শতশত প্রবাসী বাংলাদেশির লা’শ বিনা ভাড়ায় পরিবহন করে থাকে বিমান। মানবিক বিষয়গুলোতে বিমান সবসময়ই অগ্রাধিকার দেয়। কিন্তু আর কতদিন বিমান এভাবে করবে। তাদের তো একটা খরচ আছে। ন্যূনতম খরচটা তো তাদের পেতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে আমরা শিগগিরই একটা চিঠি পাঠাব। লা’শ পরিবহনের ক্ষেত্রে আমরা তাদের কাছে টাকা চাইব। কারণ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তো প্রবাসীদের জন্য ফান্ড আছে। প্রবাসে কোনো বাংলাদেশি মারা গেলে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সেই ফান্ড থেকে লা’শ পরিবহনের জন্য ন্যূনতম একটা ভাড়া বিমানকে দিতে পারে।’
বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, গত এক বছরে প্রবাসীদের কী সংখ্যক লা’শ পরিবহন করেছে, কত খরচ হয়েছে- তা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তাদের দ্রুত মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া একটি লা’শ পরিবহন করতে কত খরচ হয় এবং এ সংক্রান্ত কী কী কাগজপত্র তাদের আছে তাও মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হয়েছে। এগুলো পাওয়ার পর প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হবে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এক তথ্য অনুযায়ী, সম্পূর্ণ বিনা ভাড়ায় ২০১৬ থেকে ২০১৭ অর্থবছরে ৮৬১ প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকের মরদেহ বহন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। এসব মরদেহ বহনে অর্থ নেওয়া হলে বিমানের আয় হতো ৮ কোটি ৪০ লাখ ৮৭ হাজার টাকা।
জানা যায়, ৮৬১ শ্রমিকের মরদেহের মধ্যে আরব আমিরাতের আবুধাবি থেকে ২৭, দুবাই থেকে ৫৯, কাতারের দোহা থেকে ৮, সৌদি আরবের দাম্মাম থেকে ৯৩, জেদ্দা থেকে ৩২, রিয়াদ থেকে ৩১৬, মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর থেকে ৬২, কুয়েত থেকে ৯১ এবং ওমানের মাসকাট থেকে ১৭৩ প্রবাসীর লা’শ দেশে এনেছে বিমান। দুর্ঘটনাসহ নানা কারণে মারা যাওয়া প্রবাসী এসব শ্রমিকের মরদেহ বিনা খরচে বহন করেছে।