লাইভে যে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন মামুনুল হক !!
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার রয়েল রিসোর্টে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে অবরুদ্ধ রেখে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের রয়্যাল রিসোর্টে ২য় স্ত্রী দাবি করা এক নারীর সাথে বেড়াতে গিয়ে স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়েছেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক। শনিবার (৩ এপ্রিল) বিকাল ৩টায় রয়াল রিসোর্টের ৫ম তালার ৫০১ নম্বর কক্ষে তাকে অবরুদ্ধ করা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
শুরু থেকেই ওই নারীকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করছেন মামুনুল হক। বিষয়টি নিয়ে আজ রবিবার (৪ এপ্রিল) জাতীয় সংসদে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরই ফেসবুক লাইভে আসেন মামুনুল হক। সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কথার প্রতিবাদ জানান। মামুনুল হক বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে যেভাবে আমার চরিত্রের ওপর কালিমা লেপনের চেষ্টা করেছেন, তাতে আমি অত্যন্ত মর্মাহত। আমি মনে করছি, তিনি আমার সম্পর্কে পুরোপুরি না জেনে, অসত্য তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এসব মন্তব্য করেছেন।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী কিংবা সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী এবং একাধিক ব্যক্তি আমার চরিত্র নিয়ে এসব কথা বলেছেন। আমি স্পষ্ট ভাষায় বলছি, গতকাল (শনিবার) আমার সঙ্গে আমার স্ত্রী ছিল। শরিয়ত সম্মত উপায়ে সে আমার বৈধ স্ত্রী। তার সম্পর্কে আমি যে তথ্য দিয়েছি তা সত্য। আমার এই কথা যদি ভুল হয়ে থাকে বা আমি যদি মিথ্যা বলে থাকি তাহলে কুরআনের আয়াত অনুযায়ী আমার ওপর যেন আল্লাহর গজব পড়ে, আমি যেন ধ্বংস হয়ে যাই। আর যারা আমার ও আমার স্ত্রী সম্পর্কে গুজব ছড়াচ্ছেন, আমার চরিত্র নিয়ে মনগড়া কথা বলছেন, তারা যদি মিথ্যা বলে থাকেন তাহলে তাদের ওপর যেন আল্লাহর গজব নাজিল হয়। তারা মিথ্যাবাদী হয়ে থাকলে তাদের বংশ যেন নিরবংশ হয়ে যায়।’
এসময় তিনবার আল্লাহর কাছে মিথ্যাবাদীদের ওপর গজব নাজিল করার ফরিয়াদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ আমি তোমাকে সাক্ষী রেখে বললাম, আমার সম্পর্কে যারা মিথ্যা ছড়াচ্ছে, তাদের ওপর তুমি গজব নাজিল কর। পরে তিনি বলেন, আমি যদি মিথ্যা বলে থাকি আমার ওপর গজব নাজিল হবে। আর যারা আমার সম্পর্কে এইসব ছড়াচ্ছে তারাও এমন ঘোষণা দিক। যদি তাদের সৎ সাহস থাকে, তাহলে তারাও প্রকাশ্যে এমন কথা বলুক।
‘আমি সৎ সাহস নিয়ে বলছি, যদি তারা এমন ঘোষণা দিতে পারে তাহলে আমার কোনো অভিযোগ থাকবে না। আর যদি না পারে আমি আশা রাখি আমি সত্যবাদী।এর আগে শনিবার (৩ এপ্রিল) রাত ৮টা ৫১ মিনিটে ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি থেকে মামুনুল হক একটি স্ট্যাটাস দেন। নারীসহ অবরুদ্ধ হওয়া হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার রয়েল রিসোর্ট থেকে বের হয়ে তিনি লিখেন, ‘আমি নিরাপদে আছি, পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক! কেউ কোনো গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না!!’
রাজধানীর অদূরে সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে নারীসহ অবরুদ্ধ হেফাজত নেতা মামুনুল হককে ছিনিয়ে নিয়েছেন সংগঠনটির কর্মীরা। রয়্যাল রিসোর্ট থেকেই শনিবার সন্ধ্যায় তাকে স্থানীয় একটি মসজিদে নিয়ে যায় ধর্মভিত্তিক সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
জানা যায়, মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করা হয়েছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পরই হেফাজতের হাজারও কর্মী মিছিল নিয়ে রিসোর্টটিতে যান। তারা রিসোর্টে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। একপর্যায়ে মামুনুল হককে উদ্ধার করে পাশের একটি মসজিদে নিয়ে যান।
এর আগে রিসোর্টটিতে মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করার পর পুলিশের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা সেখানে যান। পুলিশ বলছে, মামুনুলের একজন নারীসহ এখানে অবস্থানের খবর পেয়ে স্থানীয় কিছু লোকজন, ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁর কক্ষটি ঘেরাও করেন। আর মামুনুল হক বলছেন, দ্বিতীয় স্ত্রীসহ অবকাশযাপনে গেলে কিছু লোক তাঁকে নাজেহাল করে। স্ত্রীকে নিয়ে তিনি সেখানে ঘুরতে গিয়েছিলেন।