অভাবে সন্তান বিক্রি করতে চাওয়া সেই পরিবারের পাশে চেয়ারম্যান !!
নারায়ণগঞ্জে অভাবের কারণে সন্তান বিক্রি করতে চাওয়া একটি অসহায় পরিবারের পাশে ঈদ সামগ্রী নিয়ে দাঁড়িয়েছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান।সদ্যভূমিষ্ঠ শিশুসন্তান বিক্রি করতে চাওয়ায় মা ও সন্তানদের দায়িত্ব নিয়ে মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক ও পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম।বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি ঈদের বাজার, শিশুদের খেলনা ও ঈদের নতুন জামা-কাপড়সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে হাজির হন অসহায় ওই পরিবারটির বাড়িতে।
জানা যায়, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের আষাঢ়ীয়ারচর এলাকায় ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন বাবুর্চি সাইফুল ইসলাম। প্রায় পাঁচ মাস আগে তার গর্ভবতী স্ত্রী মনি বেগমকে দুই সন্তানসহ ফেলে রেখে পালিয়ে যান তিনি। এ অবস্থায় মনি বেগম স্থানীয় একটি শিল্পকারখানার মেসে শ্রমিকদের রান্নাবান্নার কাজ করে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন। এরই মধ্যে করোনার প্রার্দুভাবের কারণে রান্নাবান্নার কাজও বন্ধ হয়ে যায়। শুরু হয় মানবেতর এক অনিশ্চিত জীবনযাত্রা।
গত ৪ মে মনি বেগম সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। এ অবস্থায় মনি বেগম সদ্যেজাত শিশুসন্তানকে বিক্রি করে দেনা পরিশোধ ও সংসারের খরচ জোগানোর চেষ্টা করেন।বিষয়টি জানতে পেরে সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক ও পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম ওই মা সন্তান ও পরিবারের দায়িত্ব নেন।
দায়িত্ব নেওয়ার পর বৃহস্পতিবার আষাঢ়ীয়ারচর গ্রামের বাড়িতে চেয়ারম্যান মাসুম গিয়ে ওই শিশুসন্তানকে কোলে নিয়ে আদর করেন। পাশাপাশি ওই পরিবারের ঈদ বাজার, সন্তানদের জামাকাপড় ও খেলনা দিয়ে আসেন। এর আগে তিনি ওই পরিবারকে ১০ হাজার টাকা দেন।এসময় উপস্থিত ছিলেন, পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আলমগীর কবির ও সোনারগাঁও উপজেলা যুবলীগ নেতা লুৎফর রহমান।
বাড়ির মালিক জুয়েল মিয়া জানান, গত ৪ মে মনি বেগম সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি কন্যাসন্তান জন্ম দেন। পরে টাকার অভাবে ওই শিশুটিকে বিক্রি করে দেয়ার চেষ্টা করেন। বিষয়টি জানতে পেরে সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক ও পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম ওই পরিবারটির ভরণপোষণের দায়িত্ব নেন।
শিশু সন্তানের মা মনি বেগম আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, আমাকে অসহায় অবস্থায় আমার স্বামী আমাকে ফেলে চলে যাওয়ার পর সন্তান জন্ম দেই। ক্ষোভে ও দুঃখে এ সন্তান বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। পরে বিষয়টি চেয়ারম্যান মাসুম জেনে আমার ও আমার সন্তাদের ভরণ পোষণের দায়িত্ব নেন। এ মানবিকতার জন্য আল্লাহ ওনাকে ভালো রাখবেন।
পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম বলেন, টাকার অভাবে একজন মা তার সন্তানকে বিক্রি করে দেবেন কোনোভাবে এটা মেনে নেয়া যায় না। এটা একটি ম’র্মস্পর্শী ঘটনা। আমি ওই অসহায় পরিবারের পাশে থাকবো। উৎস: নয়াদিগন্ত।