আগামী ১০ বছর যাদের দিকে পুরো বিশ্বের নজর থাকবে !!
তাদের অনেকেই স্কুলের গণ্ডিও পার করেননি এখন। অথচ গোটা বিশ্ব চষে বেড়াচ্ছেন এক কিশোরী। উদ্দেশ্য একটাই, মানব সমাজের হাত থেকে পরিবেশকে রক্ষা করা। গ্রেটা থুনবার্গের মতোই গত কয়েক বছরে ভিড়ের মধ্যে অনন্য হয়ে উঠেছেন বেশ কিছু মানুষ, আগামী এক দশকে যাদের উপর নজর থাকবে গোটা বিশ্বের। ফোর্বস ম্যাগাজিনের তরফে এমনই কিছু ব্যক্তিকে চিহ্নিত করেছে। তাদের দেখে নিন এক নজরে।
গ্রেটা থুনবার্গ: পরিবেশ রক্ষার জন্য বিশ্বের তাবড় রাষ্ট্রনেতাদেরও ভুল ধরিয়ে দিতে পারেন তিনি। চোখে চোখ রেখে অবলীলায় বলতে পারেন, ‘তোমরা আমার শৈশব নষ্ট করেছ।’ এই সপ্তদশীকে আগামী দিনে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবেন বলে আশাবাদী গোটা বিশ্ব।
হাসান মিনহাজ: ভারতীয় বংশোদ্ভূত হাসান ‘স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান’ হিসাবেই পরিচিত ছিলেন এত দিন। কিন্তু গত কয়েক বছরে নিজেকে আমূল বদলে ফেলেছেন তিনি। ক্রিকেট দুর্নীতি হোক বা আন্তর্জাতিক রাজনীতি, সব কিছু নখদর্পণে তার।
অনলাইন স্ট্রিমিং প্লাটফর্ম নেটফ্লিক্সে ‘দ্য প্যাট্রিয়ট অ্যাক্ট’-এ তা নিয়ে আলোচনা করেন হাসান। লোকসভা নির্বাচনের সমালোচনা করায়, হিউস্টনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অনুষ্ঠানেও ঢুকতে দেওয়া হয়নি তাকে।
আদিত্য মিত্তল: বিশ্বের বৃহত্তম স্টিল উৎপাদনকারী সংস্থা আরসেলর মিত্তল ইউরোপের সিইও আদিত্য। বাবা লক্ষ্মী মিত্তল তার হাতেই সংস্থার সমস্ত অর্থনৈতিক দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন।
পিটার বটিজাজ: মাত্র ৩৭ বছর বয়সে ইন্ডিয়ানার সাউথ বেন্ডের মেয়র নির্বাচিত হয়েছে পিটার। আগামী মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসাবে তাকে দাঁড় করানো হতে পারে।
গোতাবায়া রাজাপক্ষ: যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষের ভাই গোতাবায়া সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। সংখ্যালঘু তামিল বিরোধী হিসাবেও পরিচিত তিনি। আগামী দিনে ভারত এবং চিনের সঙ্গে কী ভাবে ভারসাম্যে রেখে চলেন তিনি, সেদিকে নজর থাকবে গোটা বিশ্বের।
মহম্মদ বিন সালমান: যুবরাজ সলমনের হাত ধরেই সৌদিতে গাড়ি চালানোর অধিকার পেয়েছেন সৌদি আরবের মহিলারা। ধর্মীয় গোড়ামি ছেড়ে উন্নয়নই আসল লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যায় নাম জড়ানোয় সম্প্রতি তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে।
গোদরেজ পরিবার: রিয়েল এস্টেট থেকে বৈদ্যুতিন সামগ্রী, গোদরেজ পরিবারের ১২ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের সাম্রাজ্য গড়ে উঠেছে তিলে তিলে। এশিয়া, আফ্রিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকাতেও রীতিমতো জাঁকিয়ে বসেছে তারা। তবে সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক দ্বন্দ্বের খবরে অস্বস্তি বেড়েছে এই শিল্পপতি পরিবারের।
দুষ্যন্ত চৌটালা: সর্বকনিষ্ঠ সাংসদ হিসাবে পরিচিতি ছিলই, সম্প্রতি হরিয়ানা ভারতের বিধানসভা নির্বাচনে ‘গেম চেঞ্জার’ হিসাবে উঠে আসেন তিনি। এই মুহূর্তে হরিয়ানার উপ মুখ্যমন্ত্রী তিনি।
আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও কর্তেজ: বারটেন্ডার থেকে মার্কিন হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভের সদস্য, দীর্ঘ যাত্রাপথ পেরিয়েছেন আলেকজান্দ্রিয়া। ইরানকে যুদ্ধের হুমকি দেয়ায় প্রকাশ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমালোচনা করতেও পিছপা হননি তিনি।
মহুয়া মৈত্র: ব্যাঙ্কার হিসাবে জেপি মরগ্যানে কাজ করেছেন এক সময়। সেখান থেকে অল্প সময়ের মধ্যেই নতুন রাজনীতিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। সংসদে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকেও একহাত নিতেও দেখা গিয়েছে তাকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার সেই সব ভিডিও অত্যন্ত জনপ্রিয়।
কানহাইয়া কুমার: দেশদ্রোহের অভিযোগে জেলে যেতে হয়েছিল দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের এই প্রাক্তন সভাপতিকে। এ বছরই জাতীয় রাজনীতিতে পা রেখেছেন তিনি। সিপিআইয়ের হয়ে বিহারের বেগুসরাই থেকে নির্বাচন লড়ে ছিলেন। তাতে পরাজিত হলেও আগামী দিনে ভারতীয় রাজনীতিতে কানহাইয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারেন বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
প্রশান্ত কিশোর: রাজনীতি বলতে এত দিন কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত হওয়াকেই বুঝতেন আম জনতা। সেই ধারণাটাকেই বদলে দিয়েছেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। মাটির কাছাকাছি থেকে দেশবাসীর নাড়ি-নক্ষত্র কী ভাবে মেপে নিতে হয়, তা এখন তার নখদর্পণে। যে কারণে, বিজেপি, কংগ্রেস, জেডিইউ এবং তৃণমূলের মতো হাই প্রোফাইল ক্লায়েন্ট পেতে কোনো অসুবিধা হয়নি তার।