আম্পানের তাণ্ডবে বিমানবন্দর হয়ে উঠলো সমুদ্রবন্দর !!
এমন তাণ্ডব কোনোদিন দেখেনি শহর কলকাতাবাসী। এক ভ’য়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছে গোটা রাজ্যবাসী। ঘূর্ণিঝঢ় আম্পান ভয়াবহ তাণ্ডব চালিয়ে ভারতের গোটা কলকাতাসহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল ধ্বংস স্তুপে পরিনত করেছে। বিমান বন্দরকে সমুদ্র বন্দর পরিনত হয়েছে। বুধবার (২০ মে) বিকেল থেকে টানা কয়েক ঘণ্টার ঝড়ে পানির নিচে বিমানবন্দরের রানওয়ে এবং হ্যাঙার। এমনকি ভয়াবহ এই ঝড়ের দাপটে ভেঙে গিয়েছে টার্মিনালের কিছু অংশ। ভারতের পত্রিকায় তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আম্পানের জেরে অতিবৃষ্টির ফলে পানিতে অর্ধেক তলিয়ে গেছে কলকাতা বিমানবন্দরের রানওয়ে এবং হ্যাঙারে থাকা বিমানগুলি। ক্ষতিগ্রস্ত বিমানবন্দরের একাংশের ছাদও। এ ব্যাপারে বিমানবন্দরের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দু’টি হ্যাঙারের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। তবে ওগুলি ব্যবহার করা হত না বলে জানিয়েছেন তিনি।
অন্তত ৪২টি বিমান ছিল এয়ারপোর্টে। একেকটির ওজন ৪০ টন। ১৩০ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতিবেগের ধাক্কায় সেগুলো রীতিমত টলমল হয়ে যায়। যদিও সামনের দিকে ও পিছনের দিকে আটকানো ছিল, তা সত্বেও বিমানগুলি যেভাবে দুলছিল তাতে ভয়ই পেয়ে যান এয়ারপোর্টের কর্মীরা। ১০টি ছোট ছোট বিমানকে আগেই কলকাতা থেকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অন্য জায়গায়। কর্মীদের আশঙ্কা ওই বিমানগুলি থাকলে সেগুলি তো উল্টে যেতই, অন্য বিমানেরও ব্যাপক ক্ষতি হত। অনেকেই ভেবেছিলেন ঝড়ের আঘাত ভিতরে পৌঁছতে পারবে না। কিন্তু কাচের জানলা ভেদ করে আঘাত সহজেই পৌঁছে যায় বিমানবন্দরে। টার্মিনালের সব দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মোটা কাচে সজোরে ধাক্কা মারতে থাকে ঝড়। এমার্জেন্সি ডিউটিতে থাকা কর্মীরা রীতিমত ভয় পেয়ে যান। ছাদে লাগানো লম্বা স্টিলের শিটগুলো যেন ছিঁড়ে দেওয়ার চেষ্টা করে আমফান। রীতিমত মত উদ্বিগ্ন হয়ে ছিলেন কলকাতা এয়ারোপোর্টের ডিরেক্টর কৌশিক ভট্টাচার্য।
আগেই খুলে নেওয়া হয়েছিল বিজ্ঞাপনের বোর্ড। সেগুলি ভেঙে পড়লে অনেক বেশি ক্ষতি হতে পারত। লকডাউনের জন্য বিমান পরিষেবা আপাতত বন্ধই আছে। কার্গো বিমানও বন্ধ রাখা হয়েছে। শুক্রবারের আগে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে কোনও বিমান উড়তে পারবে না।এদিকে আম্পানের জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে গতকাল থেকে আজ, বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা পর্যন্ত কলকাতা বিমানবন্দর থেকে সমস্ত উড়ান বন্ধ রাখা হয়েছিল। এদিন সকাল হতেই দেখা যায়, বিমানবন্দরের রানওয়েতে পানি থইথই করছে। ফলে রানওয়ে এবং হ্যাঙারের জমা পানি না সরলে আপাতত বন্ধ থাকবে বিমান পরিষেবা।তবে জানা গেছে, বিমান পরিষেবা আপাতত ব্যাহত হলেও আগামী সোমবার (২৫ মে) থেকে শুরু হচ্ছে দেশীয় উড়ান পরিষেবা। সেজন্য আগে থেকে কলকাতাসহ দেশের সমস্ত বিমানবন্দরকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে।