আসামে তৈরি হচ্ছে বৃহত্তম ডেটেনশন ক্যাম্প !!
আসামে তৈরি হচ্ছে বৃহত্তম ডেটেনশন ক্যাম্প। সেখানে থাকবেন অনন্ত তিন হাজার মানুষ। যারা দেশটির নাগরিকত্ব থেকে বাদ পড়েছেন। এ ক্যাম্পটি আসামের গোয়ালপাড়ার মাতিয়ায় এলাকায় ২৫ বিঘা জমির ওপর নির্মিত হচ্ছে। গুয়াহাটি শহর থেকে ১২৫ কিলোমিটার দূরত্বে এ ক্যাম্পটির দেয়াল ২০ ফুট থেকে ২৫ ফুট উঁচু।
যদিও গত সপ্তাহে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক জনসভায় দাবি করেছিলেন, দেশে কোনো ডিটেনশন ক্যাম্প নেই। বিরোধীরা অপপ্রচার করছে।আসাম সরকারের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে কলকাতার প্রভাবশালী গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, মার্চ মাসে দেশের বৃহত্তম ডিটেনশন ক্যাম্পটির কাজ পুরোপুরি শেষ হবে।
নির্মাণের দায়িত্বে থাকা সাইট সুপারভাইজার মুকেশ বসুমাতারি বলেন, এ মাসের মধ্যেই আমাদের কাজ শেষ করার কথা ছিল। তেমনই বলা হয়েছিল। কিন্তু বর্ষায় কাজ বন্ধ থাকায় দেরি হয়ে গেল। কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য কাঁচামাল সময় মতো পৌঁছবে কি না, সেটা নিয়েই এখন আমি বেশি চিন্তিত।
সাইট সুপারভাইজার জানান, ডিটেনশন ক্যাম্পে চার তলার ১৫টি বাড়ি বানানো হবে। এর প্রত্যেকটি বাড়িতে থাকবেন ২০০ জন মানুষ। ক্যাম্পে থাকবে স্টাফ কোয়ার্টার, হাসপাতাল, স্কুল, অফিস কমপ্লেক্স, রান্নাঘর, খাওয়ার ঘর ও নানা অনুষ্ঠানের জন্য কমিউনিটি হল।
ক্যাম্পে আলাদা জায়গায় বানানো হচ্ছে টয়লেট কমপ্লেক্স। তার ৬টি ব্লক বানানো হচ্ছে। প্রত্যেকটি ব্লকে থাকবে ১৫টি টয়লেট ও ১৫টি বাথরুম।ডিটেনশন সেন্টারের কাজ দেখতে আশপাশের এলাকা থেকে বহু মানুষ ভিড় করছে। সেখানে গড়ে উঠেছে চায়ের দোকান।
প্রতিবেদনে আসাম সরকারের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, প্রদেশটির বিভিন্ন জায়গায় এমন আরও ১০টি ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরি করা হবে। এ বছরই জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) অনুযায়ী আসামের ১৯ লাখ মানুষ তাদের নাগরিকত্ব হারিয়েছেন। যা আসামের মোট জনসংখ্যার ৬ শতাংশ। এ মানুষদের রাখা হবে এ সব ডিটেনশন ক্যাম্পে।
এর আগে ২০০৯ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে আসামে মোট ৬টি ডিটেনশন ক্যাম্প বানানো হয়েছিল। এগুলো হল- গোয়ালপাড়া, কোকড়াঝাড়, যোরহাট, ডিব্রুগড়, তেজপুর ও শিলচরে। যারা নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছেন, তাদের রাখা হয়েছে এ ক্যাম্পগুলোতে। তাদের নাম- ‘ডি-ভোটার’।
সেখারকার জীবন কেমন জানিয়েছেন তার বর্ণনা দিয়েছেন মোহাম্মদ সানাউল্লা। তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ৩০ বছর চাকরির পর অবসর নিয়েছিলেন। তিনি গত মে মাসে নাগরিকত্ব হারিয়েছেন।
সানাউল্লা বলেন, ক্যাম্পগুলোর একেকটা ঘরে ৪০/৪৫ জন করে রাখা হয়। জায়গার অভাবে রাতে মেঝেতে ঘুমাতে হয়। বাথরুমগুলো খুবই নোংরা। আর যে খাবারদাবার পরিবেশন করা হয়, তা মুখে তোলার মতো নয়।