Probashi News

ঋণ পেলেন ৬১৬ বিদেশ ফেরত প্রবাসী !!

করোনাকালে দেশে ফেরা প্রবাসীদের জন্য সরকার যে ঋণ সহায়তা কর্মসূচি চালু করেছিল, তার আওতায় পাঁচ মাসে ঋণ পেয়েছেন ৬১৬ জন। দেশে ফেরা প্রবাসীর সংখ্যার তুলনায় এ সংখ্যা খুবই নগণ্য, শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশ। শর্ত শিথিলসহ নানা উদ্যোগের পরও এ ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।

দেশে ফিরে আয়ের উৎস হারানো প্রবাসীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে সরকার স্বল্প সুদে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিচ্ছে। এ উদ্যোগ প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের। এ জন্য ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংককে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড সূত্র বলছে, গত বছর ৪ লাখ ৮ হাজার প্রবাসী কর্মী দেশে ফিরেছেন। এর মধ্যে প্রায় ৪৯ হাজার নারী কর্মী। তাঁদের বেশির ভাগ কাজ হারিয়ে ও পুলিশের হাতে আটকের পর বাধ্য হয়ে ফিরে আসেন। কেউ কেউ এসেছেন কাজের চুক্তির মেয়াদ শেষে। দেশে ফিরে অধিকাংশ প্রবাসী আয়হীন অবস্থায় দুর্দশার মধ্যে রয়েছেন। আবার যাওয়ার সুযোগও সীমিত হয়ে পড়েছে

প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক গত বছরের ১৫ জুলাই এই প্রবাসীদের কাছ থেকে ঋণের আবেদন নেওয়া শুরু করে। ব্যাংকটি প্রবাসীদের ৪ শতাংশ সুদে কৃষি, মৎস্য ও ছোট আকারের বাণিজ্যিক খাতে ঋণ দিচ্ছে। তবে শুরুর দিকে ঋণ ছাড়ে ব্যাপক ধীরগতি ছিল। এ কারণে গত সেপ্টেম্বরে শর্ত কিছুটা শিথিল করা হয়। শুরুতে গত বছর মার্চের পর দেশে ফেরা প্রবাসীদের ঋণের যোগ্য হিসেবে বিবেচনা করা হতো। পরে শর্ত শিথিল করে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারির পর ফেরা সবাইকে ঋণ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়।

কর্মসূচির আওতায় দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণে কোনো জামানত লাগত না। নতুন বছরের শুরু থেকে জামানতবিহীন ঋণের পরিমাণ তিন লাখ টাকা করা হয়। জামানত দিয়ে ঋণ পাওয়া যায় ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। অবশ্য এখন পর্যন্ত যাঁরা ঋণ নিয়েছেন, তাঁরা সবাই দুই লাখ টাকা করে পেয়েছেন। গত বছর ৪ লাখ ৮ হাজার প্রবাসী কর্মী দেশে ফিরেছেন। এর মধ্যে প্রায় ৪৯ হাজার নারী কর্মী। তাঁদের বেশির ভাগ কাজ হারিয়ে ও পুলিশের হাতে আটকের পর বাধ্য হয়ে ফিরে আসেন। কেউ কেউ এসেছেন কাজের চুক্তির মেয়াদ শেষে। দেশে ফিরে অধিকাংশ প্রবাসী আয়হীন অবস্থায় দুর্দশার মধ্যে রয়েছেন। আবার যাওয়ার সুযোগও সীমিত হয়ে পড়েছে।

প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে জানান, শর্ত শিথিল করার পর ঋণ নিতে আগ্রহীরা আরও বেশি সংখ্যায় ব্যাংকে গিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন। আবেদনও পড়ছে নিয়মিত। সব মিলিয়ে গত মাস থেকে ঋণ ছাড় হওয়ার পরিমাণ বাড়ছে। প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের তথ্য বলছে, নভেম্বর পর্যন্ত ঋণ গ্রহীতার সংখ্যা ছিল ২১২ জন। ডিসেম্বরে এটি বেড়ে প্রায় তিন গুণ হয়েছে। সব মিলিয়ে ১২ কোটি ১৯ লাখ টাকার ঋণ নিয়েছেন প্রবাসীরা।

এ বিষয়ে প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. এবনুজ জাহান প্রথম আলোকে বলেন, ব্যাংকের শাখা ও জনবল বাড়ানো হচ্ছে। শাখা পর্যায়ে ঋণ ছাড়ের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। জামানত ছাড়া ঋণের সীমা ও প্রচার বাড়ানো হয়েছে। এতে ঋণের সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে।

অবশ্য প্রবাসীদের অভিযোগ, ব্যাংকে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে যথাযথ সহায়তা পাচ্ছেন না তাঁরা। প্রয়োজনীয় নথিপত্রও তৈরি করতে বিপত্তিতে পড়ছেন। আবার দেশে ফেরা অনেক প্রবাসী ঋণের বিষয়ে তেমন কিছুই জানেন না। অনেকের ব্যবসা করার মতো দক্ষতা নেই। তাই ঋণের ঝুঁকি নিতে চাইছেন না।

করোনার মধ্যে ব্যবসায় অনভিজ্ঞ প্রবাসীদের জন্য ব্যবসা শুরু করাটা ঝুঁকিপূর্ণ। ঋণের আগে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া জরুরি ছিল। এরপর প্রবাসীদের ছোট ছোট দল গঠন করে সমবায়ের মতো ঋণ দেওয়া যেতে পারে। তিনি বলেন, এসব করা না হলে বিশেষ পুনর্বাসন ঋণ তেমন কার্যকর হবে না। প্রবাসীদের অনেকের এককালীন নগদ সহায়তার দিকে ঝোঁক বেশি। ওমান থেকে ফেরা নরসিংদীর নূরজাহান বেগম বলেন, জমানো শেষ সম্বল দিয়ে তিনি নিজেই গরু-ছাগল কিনে পালন শুরু করেছেন। ঋণের বিষয়ে ধারণা না থাকায় ব্যাংকে যাননি।

লিবিয়া থেকে গত নভেম্বরে খালি হাতে দেশে ফেরেন হবিগঞ্জের শাহ আলম নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, এখনো কিছু করছেন না। প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক যে ঋণ দেয়, সেটা তাঁর জানা ছিল না। ব্যাংকে গিয়ে আবেদনের চেষ্টা করবেন। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দুজন কর্মকর্তা জানান, ঋণ ছাড় বাড়াতে অন্য সরকারি ব্যাংকগুলোকে এ প্রকল্পে যুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা চলছে।

এ ছাড়া বেসরকারি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোকেও যুক্ত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে মন্ত্রণালয়। বিশেষ পুনর্বাসন ঋণের পাশাপাশি আরও ৫০০ কোটি টাকার পুনর্বাসন ঋণ চালু করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ফিরে আসা প্রবাসীদের মধ্যে পুরুষেরা ৯ শতাংশ ও নারীরা ৭ শতাংশ সুদে ১১টি খাতে ঋণ পাবেন।

অভিবাসন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ঋণ দেওয়ার আগে ব্যবসার উদ্যোগ ও সংশ্লিষ্ট স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণ চালু করা, সুদহার ৪ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করা ও নারীদের জন্য আলাদা পুনর্বাসন কর্মসূচি চালু করা দরকার। এ বিষয়ে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, করোনার মধ্যে ব্যবসায় অনভিজ্ঞ প্রবাসীদের জন্য ব্যবসা শুরু করাটা ঝুঁকিপূর্ণ। ঋণের আগে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া জরুরি ছিল। এরপর প্রবাসীদের ছোট ছোট দল গঠন করে সমবায়ের মতো ঋণ দেওয়া যেতে পারে। তিনি বলেন, এসব করা না হলে বিশেষ পুনর্বাসন ঋণ তেমন কার্যকর হবে না।

J A Suhag

Local News: J A Suhag writes Local News articles for industries that want to see their Google search rankings surge. His articles have appeared in a number of sites. His articles focus on enlightening with informative Services sector needs. he holds the degree of Masters in Business and Marketing. Before he started writing, he experimented with various professions: computer programming, assistant marker, Digital marketing, and others. But his favorite job is writing that he is now doing full-time. Address: 44/8 - North Dhanmondi, Dhaka Email: [email protected]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button