ওসি পরিচয়ে আমিরাতের নাগরিকের কাছ থেকে টাকা নেয়ায় এসআই প্রত্যাহার !!
ওসি পরিচয়ে প্রবাসীকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থানার এসআই শিশির কুমার বিশ্বাসকে প্রত্যাহার করে নোয়াখালী জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
শনিবার রাতে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেনের নির্দেশে অভিযুক্ত শিশিরকে প্রত্যাহার করা হয়।কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভায় ৮নং ওয়ার্ডে খালপাড়ে দুবাই ওয়ালার বাড়িতে আরব আমিরাতের শেখ পরিবারের এক নাগরিক মোহাম্মদ আলী আহম্মদ আবদুল্লাহ শেখসহ তার কর্মচারী দুবাই প্রবাসী ফাতেমা বেগমের পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার এসআই শিশির কুমার বিশ্বাস বহিরাগত কয়েকজনসহ আরব আমিরাতের নাগরিকসহ ওই পরিবারের সদস্যদেরকে থানার ওসি পরিচয় দিয়ে গ্রেফতার করার ভয়ভীতি দেখিয়ে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। এসময় উপায়ান্তর না দেখে প্রবাসী পরিবারের সদস্যরা এসআই শিশির কুমার বিশ্বাসকে ১২ হাজার টাকা দেয়।
বিষয়টি ভুক্তভোগি পরিবার তাৎক্ষণিকভাবে (শুক্রবার রাতে) নোয়াখালী পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন ও ডিআইও (ওয়ান) মো. আসাদুজ্জামানকে অবহিত করেন। অভিযোগটি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় নোয়াখালী জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত শিশির কুমার বিশ্বাসকে প্রত্যাহার করে নোয়াখালী পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করে।ওই অভিযোগের বিষয়ে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী আবদুর রহিম অভিযোগটি তদন্ত করছেন।
নোয়াখালীর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী আবদুর রহিম কোম্পানীগঞ্জ থানার এসআই শিশির কুমার বিশ্বাসকে প্রত্যাহারের বিষয় নিশ্চিত করেন।
তিনি আরো জানান, এসআই শিশির কুমারের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। তবে প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় শিশিরকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ফাতেমা বেগম দীর্ঘদিন ধরে আরব আমিরাতের ব্যবসায়ী আলী আহম্মদ আবদুল্লাহ শেখের (৬০) অধীনে চাকরি করেন। একইভাবে তার দুই ভাইসহ বেশ কয়েকজন আত্মীয়-স্বজন একই মালিকের (কফিল) দুবাইয়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে আসছেন।
গত ৩ নভেম্বর আরব আমিরাতের নাগরিক আলী আহম্মদ শেখ তাদের সঙ্গে আরব আমিরাত থেকে কোম্পানীগঞ্জের গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। এরপর তিনি তার থাকার সুবিধার্থে বসুরহাটে একটি বাসা ভাড়া নেন। সেখানে ফাতেমা বেগমরা পুরো পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন।
বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ফাতেমা বেগমদের বাসায় কোম্পানীগঞ্জ থানার এসআই শিশির কুমার বিশ্বাসসহ কয়েকজন বহিরাগত যান। তিনি ঘরে ঢুকে নানা অশ্লীল কথাবার্তা বলেন পরিবারটিকে। এক পর্যায়ে তাদেরকে থানার ওসি পরিচয় দিয়ে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে দুজনকে গ্রেফতারের হুমকি দেন।
এ সময় তিনি শিশিরকে ‘ভাই’ডেকে তার হাতে-পায়ে ধরে এ বিষয়ে কোনো কিছু না করার আকুতি জানান ফাতেমা বেগম। পরে এসআই শিশিরের হাতে ১২ হাজার টাকা তুলে দিলে তিনি চলে যান।