কথা দিতে পারি, কোন ঘর অন্ধকারে থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী !!
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চল অর্থাৎ প্রতিটি ঘরে আমরা আলো জ্বালাবো এটিই আমাদের লক্ষ্য। কোন ঘর অন্ধকারে থাকবে না। সে কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চল এবং দুর্গম অঞ্চল থেকে শুরু করে সকল জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সোলার প্যানেল উপহার এবং প্রতিষ্ঠা করে যাচ্ছি। এর জন্যই আমরা কর্মসূচি নিয়েছি। এই কর্মসূচির আওতায় কোন বাড়ি, বাজার এবং রাস্তাঘাট অন্ধকার থাকবে না এটুকু কথা দিতে পারি। যেভাবে প্রকল্প নিয়েছি সেভাবে বাস্তবায়ন করবো।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকার সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ শীর্ষক প্রকল্প এবং কাপ্তাই হ্রদে ভাসমান মৎস্য গবেষণা তরী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম এক সময় সংকটাপন্ন পরিবেশ ছিল। রাজনৈতিক ও ভ্রাতৃত্ব সংঘাত ছিল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তখন পার্বত্য চট্টগ্রামের এ সমস্যা সমাধানে সংসদে একটি কমিটি গঠন করা হয়। আমরা ভাবলাম, মিলিটারী দিয়ে নয়, এই সমস্যা রাজনৈতিকভাবে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। সকল কাজ শেষ করে অবশেষে ১৯৯৭ সালে ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তির জন্য চুক্তি করা হয়। যারা অস্ত্রধারী ছিল ১০ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়িতে ১৮শ জন আত্মসমার্পণ করে এবং তাদের সবাইকে পুনর্বাসনও করা হয়। ৬৪ হাজার উদ্বাস্তু পরিবারকে ভারত থেকে ফিরিয়ে এনে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এরপর ৭ বছর পর ২০০৮ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করি। সে সময় পার্বত্য চট্টগ্রামে মোবাইল নেটওয়ার্ক নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল বিএনপি সরকার। আমরা এসে তা চালু করি এবং ঐ অঞ্চলে বিদ্যুৎ দেয়ার জন্য গ্রিড লাইনে যেহেতু সম্ভব না, যথেষ্ট দুর্গম এলাকা। একটি এলাকা থেকে আরেকটি এলাকা অনেক দূর। সেহেতু প্রতিটি এলাকায় ব্যাপক হারে সোলার প্যানেল দেয়া শুরু করি। হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট, ব্রীজ নির্মাণসহ ব্যাপক হারে উন্নয়নের কাজ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি এবং এই অঞ্চলের মানুষের জন্য আত্মসামাজিক উন্নয়নের জন্য ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী ভাসমান মৎস্য গবেষণা তরী নিয়ে বলেন, কাপ্তাই হ্রদে কিভাবে মৎস্য উৎপাদন আরও বৃদ্ধি করা যায়,তার জন্য একটি গবেষণার প্রয়োজন। সেই কারণে চট্টগ্রাম ভেটেনারি অ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে ‘সিভাসু’ জাহাজটি নেয়া হয়েছে। আমাদের যারা সেরা পাঁচ গবেষণা কর্মী তারা সেখানে গবেষণা করতে পারবে। ঐ হ্রদের কোন অঞ্চলে কোথায় অভয়ারণ্য করা যায়। কোন জায়গাটি বিশেষ করে, মাছ ডিম পাড়ার জন্য কোন জায়গা সংরক্ষরণ করা যায় এবং এটিতে মাছের উৎপাদন আরো বহুমুখী হবে। এ কারণে কাপ্তাই হ্রদে ভাসমান গবেষণা তরী নির্মাণ করা হয়েছে। যারা বিজ্ঞানী বা মৎস্য গবেষক তারাও গবেষণা করতে পারবে। ফলে মৎস্য উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে এবং জেলেরাও খুব লাভবান হবে।
এসময় ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন, সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি বাসন্তি চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা, চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়, ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ শাহিনুল ইসলামসহ আইনশৃঙ্খলার উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সুবিধাভোগীরা।