করোনার চিকিৎসায় ‘আর্সেনিক আলবাম’ বিক্রি হচ্ছে দশগুণ দামে !!
চিকিৎসা বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম হোমিও। এই হোমিও ওষুধ দিয়ে বর্তমান করোনাভা’ইরাস পরিস্থিতিতে চলছে প্র’তারণা। ‘আর্সেনিক আলবাম’ নামের একটি ওষুধ সেবনে করোনা আ’ক্রান্ত রোগীরা সেরে উঠছেন বা সং’ক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব-এমন প্রচার চলছে নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের হোমিও ওষুধের দোকানগুলোতে।
প্র’চারণা যেমন, প্রসারও তেমন, শহরের হোমিও ওষুধের দোকানগুলোতে রয়েছে উপচে পড়া ভিড়। এ সুযোগে ব্যবসায়ীরা আর্সেনিক আলবাম ওষুধটির কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে ইচ্ছেমতো দাম হাঁকাচ্ছেন। ১০ টাকা মূল্যের এক ড্রাম (শিশি) ওষুধ বিক্রি করছেন ১০০ থেকে ১৫০ টাকা দামে। তারপরও ‘তরল’ অবস্থায় মিলছে না ওষুধটি।আজ মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে সৈয়দপুর শহরের বেশ কয়েকটি হোমিও ওষুধের দোকানে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক সপ্তাহ আগে শহরময় ছড়িয়ে পড়ে করোনাভা’ইরাস মোকাবিলায় হোমিও ওষুধ আর্সেনিক আলবাম খুবই কার্যকর। মহামারির দিনে একটি প্রতারক চক্র পুরো শহরে এই প্রচারণা চালায়। এতে ওষুধটি কিনতে শহরের মানুষ হোমিও ওষুধের দোকানগুলোতে ভিড় জমায়। প্রতারক চক্রের পাশাপাশি এ সুযোগ নিয়েছে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী। তারা ওষুধটি দশগুণ বেশি দামে বিক্রি করছে বাজারে। এ ছাড়া একটি সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে সৈয়দপুরের ওষুধের বাজারে। তাই করোনা পরিস্থিতিতে সাধারণ ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করা সম্ভব হচ্ছে।
সকালে শহরের মডার্ণ হোমিও ফার্মেসিতে আর্সেনিক আলবাম কিনতে আসা মুন্না দাস নামের এক ক্রেতা আমাদের সময়কে বলেন, ‘তরল অবস্থায় ওষুধটি পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে গুলি মিশ্রিত অবস্থায় ওষুধটি (এক ড্রাম) ৮০ টাকায় কিনলাম। গত এক সপ্তাহ আগে ১৫ টাকায় কিনেছি। এটি খেলে নাকি করোনা প্রতিরোধ সম্ভব। তাই কিনেছি।’
উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের সোনাখুলী গ্রামের কৃষ্ণ কমল রায় একই পরিমান ওষুধ ওই একই ফার্মেসি থেকে কেনেন ১০০ টাকায়। শহরের এমন অনেকেই আছেন যারা ৮০ থেকে ১৫০ টাকায় ওষুধটি কিনছেন। আসলেই এই ওষুধে কোনো কাজ হয় কি না, জানেন না তারা।
মডার্ণ হোমিও ফার্মেসির মালিক মো. জাবেদ আলমের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হলে আমাদের সময়কে তিনি বলেন, ‘ওষুধটির চাহিদার তুলনায় বর্তমানে সরবরাহ খুবই কম। তাই বিক্রয় প্রতিনিধিদের কাছ থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। ফলে ওষুধটির দাম বর্তমানে কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।’
নীলফামারীর হোমিও চিকিৎসক ডা. শামছুল হক আমাদের সময়কে বলেন, ‘কতিপয় ব্যবসায়ী বেশি মুনাফার লোভে সিন্ডিকেট করে ওষুধটির দাম দশগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। ওষুধটি বিভিন্ন রোগে ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া এটি সেবন করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। করোনার যে ধরনের উপসর্গ এতে করে আর্সেনিক আলবাম দিয়ে চিকিৎসা করা সম্ভব এবং প্রতিরোধেও কার্যকর।’
সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাসিম আহমেদ বলেন, ‘শহরে আর্সেনিক আলবাম নিয়ে যে ধরনের প্রতারণা চলছে, তা নির্মূলে শিগগির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’নীলফামারী জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরী আমাদের সময়কে বলেন, ‘বিষয়টি জেনেছি। এই পরিস্থিতিতে প্রতারণা কিছুতেই কাম্য নয়। ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
উৎস: দৈনিক আমাদের সময়।