দেশের খবর

করোনায় মৃ’তের বাড়িতে এলাকাবাসীর তালা, ভেতরে শিশুসহ ৬ জন !!

চট্টগ্রাম নগরের পশ্চিম বাকলিয়ার বাসিন্দা আহমেদ আরমান (৫৫)। করোনাভা’ইরাসে আ’ক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন গত সোমবার (৪ মে)। সেদিনই তার স্ত্রী-পুত্রসহ পুরো পরিবারকে ১৭ নম্বর পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ডের রাহাত্তার পুল চান্দা পুকুর পাড় এলাকার বাড়িতে লকডাউন করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, গত পাঁচ দিনেও পরিবারটির খবর নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি কিংবা স্বাস্থ্য বিভাগ।

ইতোমধ্যেই আরমানের ১৪ মাসের এক নাতিসহ পরিবারের ৬ সদস্যের মাঝে জ্বর-সর্দিসহ করোনা উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করেছে। পরিবারটি পক্ষ থেকে বিভিন্নভাবে নানা পর্যায়ে যোগাযোগ করেও তাদের নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা যায়নি। উপরন্তু পরিবারটির বাসার দরজায় তালা মেরে দিয়েছে অতি উৎসাহী এলাকার কিছু লোক। ফলে বাড়িতে আটকা পড়ে আছে শিশুসহ পরিবারটি।

মৃত আহমেদ আরমানের ছেলে আবিদের অভিযোগ, স্থানীয় কাউন্সিলর এ কে এম আরিফুল ইসলাম ডিউজের নেতৃত্বে তাদের বাড়িতে তালা দেয়া হলেও এই পাঁচদিনে খবর নেয়নি কেউ। বাড়িওয়ালা আর আত্মীয় স্বজনের সহায়তায় তারা এই পর্যন্ত কোনোভাবে দিন কাটাচ্ছেন।

আবিদ জাগোনিউজকে বলেন, ‘বাবা হঠাৎ অসুস্থ বোধ করায় ৩ মে বিকেলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। পরদিন সোমবার ভোর ৪টার দিকে বাবার মৃত্যু হয়। সাড়ে ৫টার দিকে বিআইটিআইডির (বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস) টিম নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। সেদিন বিকেলেই বাবাকে পটিয়ার গ্রামের বাড়িতে দাফন করে আমরা রাহাত্তার পুলের বাসায় ফেরত আসি। রাত ৯টার দিকে সিভিল সার্জন অফিস থেকে জানানো হয়, বাবা করোনায় আ’ক্রান্ত ছিলেন। ওই রাতেই কাউন্সিলর ও পুলিশ প্রশাসন আমাদের বাসা লকডাউন করে, কাউন্সিলর এসে গেটে দেন তালা।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘সবাই মিলে সেদিন আমাদের তালা মেরে গেল। ভেতরে আমার মা-ভাই-ভাবী ও তাদের ১৪ মাসের শিশুসহ ৬ জন মানুষ। গত পাঁচদিনে কেউ একবার ফোন করে জিজ্ঞেসও করেনি, আমরা কি বেঁচে আছি না মরে গেছি। বাড়িওয়ালা কিছুটা সহায়তা করছেন, পাশাপাশি আত্মীয় স্বজনরা যা এনে দিচ্ছেন, তা খেয়ে বেঁচে আছি।’

পরিবারের সবার মধ্যে করোনা উপসর্গ দেখা দিয়েছে জানিয়ে আরিফ বলেন, ‘গত তিন দিন ধরে পরিবারের সবাই জ্বরে ভুগছি। বড় ভাই ছাড়া সবার অবস্থা খারাপ। গতকাল থেকে এলাকার কাউন্সিলর, থানার ওসি ও সিভিল সার্জনের সঙ্গে দফায় দফায় যোগাযোগ করেছি। যাতে অন্তত আমাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়, নয়তো এ ঘর থেকে আরও লাশ বের হবে। কিন্ত ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তা করা হয়নি।’

এ বিষয়ে জানতে ১৭ নম্বর পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এ কে এম আরিফুল ইসলাম ডিউককে ফোন করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। পরে তার বন্ধু পরিচয় দিয়ে একজন এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলেন। মুঠোফোন তিনি বলেন ‘কাউন্সিলর এখন ব্যস্ত আছেন, ঘণ্টাখানেকের আগে ফ্রি হবেন না।’
পরে করোনা আ’ক্রান্ত পরিবারটির কথা বলতেই ওই লোকটি বলেন, ‘আমরা বিষয়টা জানি, আসলে তারা ভুল বলছেন না, টানা পাঁচদিন এভাবে বন্দি থাকলে আপনিও বলবেন। তাদের নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’

শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘পরিবারটি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আজ বিকেলেই তাদের নমুনা পরীক্ষার জন্য টিম পাঠানো হয়েছে।’কয়টায় তাদের নমুনা পরীক্ষার জন্য টিম পাঠানো হয়েছে জানতে চাইলে তখন ওসি বলেন, ‘বিকেল ৩টায়।’যদিও ভুক্তভোগী পরিবারটির অভিযোগ, ‘এ কথা ডাহা মিথ্যা, তাদের কেউ নমুনা পরীক্ষা করাতে নিয়ে যেতে আসেনি, তারাও যাননি।’

আবিদ বলেন, ‘গত দুই দিনে কতজনের সঙ্গে কথা বলেছি, কিন্তু এ বলে ওর সাথে কথা বলতে, সে বলে তার সাথে কথা বলতে, কিন্তু কাজের কথা কেউ বলে না। একান্ত অনুরোধ, আমাদের একটি গাড়ির ব্যবস্থা করে দেয়া হোক। আমরা নিজেরা গিয়েই নমুনা দিয়ে আসবো, আমরা বাঁচতে চাই।’

এ ব্যাপারে চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) হাসান শাহরিয়ার কবিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এমন তো হবার কথা নয়, লকডাউনে থাকা পরিবারকে দেখভালের দায়িত্ব স্থানীয় প্রশাসনের। আপনি এখনই বিষয়টি সিভিল সার্জনকে অবহিত করুন, আমিও দেখছি।’

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি জাগোনিউজকে বলেন, ‘আমি বিষয়টি জেনেছি, তাদের নমুনা পরীক্ষার জন্য আজ একটি অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করার কথা ছিল, কিন্তু তা করা যায়নি। আগামীকাল সকালেই পুরো পরিবারটিকে পরীক্ষার জন্য বিআইটিআইডিতে পাঠানো হবে। কিন্তু ওরা যে খাবার-দাবার নিয়ে সমস্যায় আছে সেটি দেখবেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ প্রশাসন। তারা কেন তা করেননি তা তো জনি না।’

সূত্র- জাগোনিউজ

J A Suhag

Local News: J A Suhag writes Local News articles for industries that want to see their Google search rankings surge. His articles have appeared in a number of sites. His articles focus on enlightening with informative Services sector needs. he holds the degree of Masters in Business and Marketing. Before he started writing, he experimented with various professions: computer programming, assistant marker, Digital marketing, and others. But his favorite job is writing that he is now doing full-time. Address: 44/8 - North Dhanmondi, Dhaka Email: [email protected]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button