করোনা আ’তঙ্কে রোগী’কে ছেড়ে পালিয়ে গেলেন নার্স !!
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাঁপানি, জ্বর ও কাশি নিয়ে এক রোগী ভর্তি হওয়ায় আ’তঙ্কে ওয়ার্ডে যাচ্ছেন না নার্সরা। একই সঙ্গে ভয়ে হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছে ভর্তি থাকা কয়েকজন রোগী। এ নিয়ে আ’তঙ্ক বিরাজ করছে হাসপাতালে কর্মরতদের মাঝে। অপরদিকে বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই এ হাসপাতালটিতে জ্বর-সর্দি-কাশির রোগীদের সেবা দেয়া বন্ধ প্রায়। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন সাধারণ রোগীরা। এসব ঘটনায় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন ভুক্তভোগীরা।
গাড়াডোব ৫২ বছর বয়সী এক ব্যক্তি গেল ৪ দিন ধরে জ্বর, হাঁপানি আর সর্দি কাশিতে ভুগছিলেন। করোনা আ’ক্রান্ত হয়েছেন বলে গ্রামে আ’তঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে তাকে কেউ চিকিৎসা দেয়নি।রোগীর ছেলে বলেন, করোনা ভা’ইরাস আ’তঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মীরা গেল সোমবার তাকে পর্যবেক্ষণ করেন। করোনা ভা’ইরাসের উপসর্গ নেই জানিয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন স্বাস্থ্যকর্মী। সোমবার সন্ধ্যায় তাকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে একটি প্রেসক্রিপশন লিখে বিদায় করেন কর্তৃপক্ষ।
প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) তাকে ইনজেকশন দেয়ার চেষ্টা করলেও গ্রাম্য চিকিৎসকরা আমাদের বাড়িতে আসতে রাজি হননি। নিরুপায় হয়ে মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (গাংনী হাসপাতাল) তাকে নেওয়া হলে ভর্তি করেন কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে চার তলায় রোগীর ওয়ার্ড কেবিনে তাকে রাখার পরে করোনা আ’তঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ওয়ার্ড ছেড়ে চলে যান কর্তব্যরত নার্সরা। পালিয়ে যায় ভর্তি হওয়া রোগী ও তাদের স্বজনরা।
মঙ্গলবার রাত এগারটার দিকে হাসপাতালে গিয়ে রোগী পালিয়ে যাওয়ার সত্যতা মেলে। তখনও এক রোগী স্বজন নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছিলেন। তবে এখনো আ’তঙ্কের মধ্যে ভর্তি রয়েছেন চার জন রোগী।
গ্যাস্টিক নিয়ে হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন মাত্র একজন। তিনি গাংনী উপজেলার গাড়াবাড়ীয়া গ্রামের জীবন মিয়া। তিনি বলেন, ওই রোগী কেবিনে ভর্তি হওয়ার পর নার্সরা আমাদেরকে জীবন বাঁচাতে হাসপাতাল ছেড়ে চলে যেতে বলেন। এ কথা শুনে পুরুষ ওয়ার্ডে থাকা সবাই পালিয়ে গেছে। আমি আর আমার স্ত্রী রয়ে গেছি।
হাসপাতালটির মহিলা ওয়ার্ডেও একই অবস্থা। সেখানে আ’তঙ্ক নিয়ে দরজা বন্ধ করে বসে ছিলেন ৩/৪ জন নারী। রোগীর স্বজন শুকিলা খাতুন বলেন, ওই রোগী ভর্তির পর থেকে নার্সরা নিচে নেমে গেছেন। আর ওয়ার্ডে আসছেন না। ডাক্তারও আসছে না। এ বিষয়ে ওই সময়ে কর্তব্যরত নার্স হোসনেয়ারা বলেন, আমি হাইপার টেনশনের রোগী। চাপ নিতে পারছি না তাই ওয়ার্ড ছেড়ে দোতলায় এসেছি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রিয়াজুল আলম বলেন, বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।
সূত্রঃ বিডি২৪লাইভ