করোনা থাবায় চাকরি হারাচ্ছে দেশের অন্তত দেড় কোটি মানুষ !!
দেশে শুধু স্বাস্থ্যগত সংকটই নয়, বৈশ্বিক ম’হামা’রি করোনা ভা’ইরাস থাবা বসিয়েছে দেশের শ্রমবাজারেও। বেসরকারি একটি সংস্থার জরিপ বলছে, করোনাকালীন অর্থনৈতিক টানাপোড়েনে চাকরি হারাতে যাচ্ছেন অন্তত দেড় কোটি মানুষ আর এতে ক্ষতির মুখে পড়বেন প্রায় ৬ কোটি জনগোষ্ঠী। এর বাইরেও রয়েছে বেকারত্ব, আংশিক বেকারত্ব ও কাজ হারিয়ে দেশে ফেরা প্রবাসীরাও। রাতারাতি ইতিবাচক পরিবর্তনের সুযোগ নেই জানিয়ে, পরিকল্পিত উপায়ে কর্মসংস্থান বাড়নোর পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
এদিকে জীবনের হিসেবটা অনেক সময়ই মেলে না সহজ সমীকরণে। শত প্রচেষ্টা, অধ্যবসায় আর একনিষ্ঠতার পরেও ক্ষণে ক্ষণে ঘিরে ধরে হতাশা। এই যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একনিষ্ঠতার স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করা মুবিন। তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে লড়ছেন চাকরির বাজারে। তবুও ধরা দিচ্ছে না কাঙ্ক্ষিত সাফল্য। এর মাঝেই মরার উপর খাড়ার ঘা করোনা। দুই মাসেরও বেশি সাধারণ ছুটির সময়ে হয়নি কোনো চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ। ফলাফল, বাড়ছে বয়স, ফিকে হচ্ছে চাকরির আশা।
মুবিন বলেন, যারা বেকার আছি তারা বেশি সংকটে পরে গেছি। যাদের বয়স শেষ বা শেষের পথে চাকরির আশা প্রায় ছেড়ে দিচ্ছি।এতো গেলো চাকরি প্রত্যাশি মুবিনের হতাশার গল্প। কিন্তু প্রত্যাশিত বেতন আর সম্মানের পেশায় থেকেও ফজলে রাব্বির ট্রাজেডি কোনো অংশে কম নয়। করোনার কড়াল থাবায় তিনিসহ আজ চাকুরিহীন একই প্রতিষ্ঠানের আড়াই হাজারেরও বেশি কর্মী।
ফজলে রাব্বি বলেন, আমরা মেট্রো রেলের একটা প্রজেক্টে আছি। টার্মিনেশন বলে একটা লিস্ট দিয়ে দিছে। এ সময়টা আমুরা পুরোটাই বেকার।বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের হিসেবে করোনার প্রভাবে চাকরি হারাতে যাচ্ছেন অন্তত দেড় কোটি মানুষ। যাদের মধ্যে গার্মেন্টস, ব্যাংক, ইন্স্যুরেন্সসহ আছে আরো অনেক খাত। চাকরি হারানো বিপুল এই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন কর্মহীন প্রবাসী শ্রমিক ও বেতন কাটছাট হওয়া মানুষও।
এক কুয়েত প্রবাসী বলেন, সাড়ে তিন মাস ধরে কুয়েতের সব কোম্পানির কাজ বন্ধ। এই অবস্থায় প্রবাসীদের জীবন যাপন করা খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে।দেশ ও বৈশ্বিক অর্থনীতিতে চাহিদার বড় ধরণের ধস নামায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য আলাদা পরিকল্পনার কথা জানালেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী। ফরহাদ হোসেন বলেন, করোনার মত পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ভাবে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রত্যেকের কথা প্রধানমন্ত্রী চিন্তাভাবনা করেছেন।
অর্থনীতিবিদ ড আহসান এইচ মনসুর বলেন, কর্মহীন জনগোষ্ঠীকে কর্মক্ষেত্রে ফিরিয়ে আনার মাধ্যমেই এই সমস্যার সমাধান হবে।শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত ও অশিক্ষিতসহ দেশে মোট বেকারের সংখ্যা প্রায় ২৭ লাখ।
সূত্র-বিডি২৪রিপোর্ট