কুয়েত খোলা আকাশের নিচে দিনভর পড়েছিল প্রবাসীর লা’শ !!
উঠানে দিনভর বৃষ্টিতে ভিজে রোদে শুকিয়েছে কুয়েত প্রবাসীর ম’র’দে’হ; এগিয়ে আসেনি কোনো আত্মীয়স্বজন। দিনশেষে খবর পেয়ে ছুটে আসে শেষ বিদায়ের বন্ধু সংগঠনের সদস্যরা, সম্পন্ন করেন মৃ’ত’দেহের দা’ফ’ন-কা’ফনের কাজ।যে পরিবারের কথা চিন্তা করে নিজের সুখ বিসর্জন দিয়ে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে যান বিদেশের মাটিতে। সুখ আর শান্তির সময়টুকু প্রবাস নামের দেয়ালবিহীন জে’ল’খানা কে’টে যায়।
তেমনি একজন চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ৫নং ওসমানপুর ইউনিয়নের সাহেবপুর এলাকার কালাবক্সবাড়ির কুয়েত প্রবাসী ছালেহ আহমদ।দীর্ঘদিন প্রবাস জীবন শেষে দুই বছর আগে দেশে চলে আসেন, এর পর থেকে পরিবার নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে থাকতেন। সবাই হাসপাতালে ব্যস্ত ছেলের ঘরে নাতি হয়েছে, এদিকে ঘরে তার কুয়েত প্রবাসী বাবা মরে পড়ে আছে।
প্রাণ’ঘা’তী ক’রো’না’য় চট্টগ্রামে মারা যাওয়ার পর ৩ জুন ভোরে বড় ভাই নুর আহম্মদ ম’র’দেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ি আসেন দা’ফ’নের জন্য।ম’র’দে’হের সঙ্গে পরিবারের কোনো সদস্য– এমনকি স্ত্রী-সন্তান কেউ আসেনি দা’ফ’নের জন্য। সালেহ আহম্মেদের লা’শ বাড়ি আনার পর দা’ফ’ন করতে এগিয়ে আসেনি কেউ।
লা’শে’র সঙ্গে স্ত্রী-সন্তান না আসার কারণে ক’রো’নার ভ’য়ে শেষবারের জন্য চোখের দেখাও দেখতে আসেননি বাড়ির অন্য লোকজন, সবাই চলে যায় অন্যত্র।আসেনি গ্রামবাসীও। দিনভর বাড়ির উঠানে ঘরের কোণে মসজিদের খাটিয়ার ওপর পড়েছিল নিথর দে’হটি। চাদরে ডাকা প্রবাসীর ম’র’দে’হ দিনভর বৃষ্টিতে ভিজেছে, আবার রোদে শুকিয়েছে।
সারা দিন বৃষ্টিতে ভিজে রোদে শুকানো ম’র্মা’ন্তিক খবর পেয়ে লা’শ দা’ফ’নের জন্য আসে মিরসরাই উপজেলায় সম্প্রতি ক’রো’না পরিস্থিতিতে গঠিত শেষ বিদায়ের বন্ধু নামে একটি সংগঠন।ক’রো’না ম’হা’মা’রীতে সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ। এই সংগঠনের কাজ হলো কেউ মা’রা গেলে দা’ফ’ন করা। জীবনের সবটুকু দিয়ে যাদের জন্য ব্যাংক ব্যালেন্স, বাড়ি ও জমি রেখে যাচ্ছেন, ক’রো’না আ’ক্রা’ন্ত হওয়ার পর পরিবার প্রিয়জনদের পাওয়া যাচ্ছে না কাছে।
শেষ বিদায়ের বন্ধু সংগঠনটি ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগকে সবাই প্রশংসা করছেন। সংগঠনের উদ্যোক্তা মিরসরাই প্রেসক্লাবের সভাপতি নুরুল আলম বলেন, যে পরিবারের জন্য এত বছর এতকিছু করল, নিজের সব কিছু বিলিয়ে দিল, আজ সেই মানুষটির সঙ্গে শেষ সময়ে এমন আচরণ কারওই কাম্য নয়।
তিনি আরও জানান, মিরসরাইয়ে যদি কোনো মানুষ ক’রো’নায় আ’ক্রা’ন্ত হয়ে মারা যান, তার দা’ফ’নকাজে সামাজিকভাবে কেউ না এলেও আমাদের খবর দিলে তার ব্যবস্থা আমরা করব। অবশ্যই আমরা ধর্মীয় রীতিনীতি এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী তা করছি।
সুত্রঃ যুগান্তর