চাকরির পরীক্ষা বাদ দিয়ে, আহত বয়স্ক লোককে নিয়ে হাসপাতালে যুবক !!
সড়ক দুর্ঘটনায় আহত বৃদ্ধকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াতে আর দেয়া হলো না চাকরির পরীক্ষা। সম্প্রতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মেচেদায় ঘটেছে এ ঘটনা। ঘটনার একটি ছবি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
তিনি জানতেন দুর্ঘটনায় আহত বৃদ্ধকে নিয়ে হাসপাতালে গেলে আর চাকরির পরীক্ষা দেওয়া হবে না। এরপরও ভিন্ন কিছু ভাবেননি শেখ ওয়ালিদ আলী। ছুটে গেলেন হাসপাতালেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেরিই হয়ে গেল। এ জন্য শেখ ওয়ালিদ আলীকে বসতে দেওয়া হলো না কলেজশিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায়।
জানা গেছে, কাঁথির শ্রীরামপুরের বাসিন্দা ওয়ালিদ প্রাণিবিদ্যায় স্নাতকোত্তর। অরাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন স্টুডেন্টস্ ইসলামিক অর্গানাইজেশনের পূর্ব মেদিনীপুর এর জেলা সভাপতি এই যুবক। সাত বছর ধরে হাওড়ার উলুবেড়িয়ার আল আমিন মিশন কলেজে অতিথি শিক্ষক হয়ে কাজ করছেন তিনি। অধ্যাপক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে রবিবার ভোরে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন ওয়েস্ট বেঙ্গল কলেজ সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা দিতে। পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল পাঁশকুড়া বনমালী কলেজে।
এ ব্যাপারে ওয়ালিদ জানান, সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে তিনি মেচেদায় ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের আন্ডারপাসে নামেন। তখনই দেখতে পান পথচারী এক বৃদ্ধ বাইকের ধাক্কায় রাস্তায় পড়ে যায়। অনেকে দেখলেও কেউ বৃদ্ধকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি। জরুরি নাম্বার ১০০-তে ফোন করে পুলিশের সাড়াও মেলেনি। অগত্যা নিজেই বৃদ্ধকে নার্সিংহোমে নিয়ে যান বলে জানান তিনি।
এরপর ওই বৃদ্ধের পরিজনকে খবর দেন ওয়ালিদ। সব শেষে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছান ১০টার পর। যদিও পরীক্ষা ছিলো সাড়ে নয়টায়।এ ব্যাপারে ওয়ালিদ জানান, দেরি হওয়ায় তাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। মোবাইল ফোনে তোলা বৃদ্ধের ছবি দেখিয়ে ওয়ালিদ কেন তার দেরি হওয়ার কারণ বোঝানোর চেষ্টা করেন। তবে কলেজের অধ্যক্ষ পর্যন্ত বিষয়টি পৌঁছালেও পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাননি তিনি।
এ সময় ওয়ালিদ আরো বলেন, ‘চাকরির পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ তো আবার আসবে। কিন্তু মানুষ হিসেবে জীবনের একটা বড় পরীক্ষায় তো উতরে গেলাম।’ পরীক্ষা দিতে না পারায় তেমন আক্ষেপ নেই ওয়ালিদের। পরে আহত বৃদ্ধ শেখ নুরজামানকে দেখতে সোমবার কাঁথির মুকুন্দপুরেও যান।