চিকিৎসা সামগ্রী হাসপাতালে বিক্রির সময় পরিচ্ছন্ন কর্মীকে গ’ণধো’লাই !!
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের চিকিৎসা সংক্রান্ত সার্জিকাল সামগ্রী কালোবাজারে বিক্রির সময় এক পরিচ্ছন্ন কর্মীকে আটক করে গ’ণধো’লাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে জনতা।বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আটক হওয়া যুবকের নাম বিশ্বনাথ হেলা (৩১)। সে সাতক্ষীরা শহরের রসুলপুরের রণজিৎ হেলার ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, সদর হাসপাতালের অস্থায়ী পরিচ্ছন্ন কর্মী বিশ্বনাথ হেলা একটি কাটুনে করে হাসপাতালে সরবরাহকৃত অপারেশন সুতা, হ্যাণ্ড গ্লাবস, ক্যানুলাসহ বিভিন্ন সরকারি সার্জিকাল সামগ্রী কালোবাজারে বিক্রির জন্য একটি দোকানে নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় পাশের এক দোকানি সন্দেহ করলে তার কাছে থাকা কার্টুন খুলে সরকারি সরবরাহকৃত ওইসব সার্জিকাল সামগ্রী দেখতে পান।
এরপরপরই তাকে গণধোলাই দিয়ে খুলনা রোডের মোড়ে অবস্থানকারি ট্রাফিক পুলিশে সোপর্দ করা হয়। সেখান থেকে সদর থানার উপপরিদর্শক শরিফ এনামুল হক উদ্ধারকৃত মালামালসহ বিশ্বনাথকে থানায় নিয়ে যান। বিশ্বনাথ সদর হাসপাতালের মধ্যেই বসবাস করে।
এদিকে সদর হাসপাতালের পার্শ্ববর্তী কয়েকটি ঔষধের দোকান সূত্রে জানা গেছে, সদর হাসপাতালের স্টোর কিপার দীপঙ্কর বর্মণসহ একটি অসাধু চক্র পরিচ্ছন্ন কর্মী নিরীহ বিশ্বানাথকে দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের সরকারি ঔষধ, ভ্যাকসিন ও সার্জিকাল সামগ্রী কালোবাজারে বিক্রি করে আসছিল। সার্জিকাল সামগ্রী সাধারণত মা সার্জিকাল ও আহছানিয়া সার্জিকাল কম দামে কিনে থাকে।
বৃহষ্পতিবার মাল নিয়ে বিশ্বনাথের সঙ্গে মসা সার্জিকালের মালিকের দরকষাকষি হয়। মা সার্জিকালের কাছে কম দামে বিক্রি করতে রাজি না হয়ে আহছানিয়া সার্জিকালকে বিক্রি করতে যাওয়ায় ওই মাল কৌশলে পাবলিক লেলিয়ে দেয় মা সার্জিকাল কর্তৃপক্ষ। যদিও নিজেদের পিঠ বাঁচাতে স্টোর কিপার দীপঙ্কর কার্টুনে থাকা বড় অংকের মাল সরিয়ে ফেলে শুধুমাত্র ৬০০ পিচ ক্যানুলার রাখে যার দাম সাড়ে আট হাজার দেখিয়ে নিজে বাদি হয়ে বিশ্বনাথের নামে মামলা করার প্রস্তুতি নিয়েছে।
জানতে চাইলে সদর হাসপাতালের পরিচ্ছন্ন কর্মী বিশ্বনাথ হেলা ওরফে দাস বলেন, এক এক বার ঔষধ বা সার্জিকাল সরঞ্জাম বিক্রি করতে দীপঙ্করসহ কয়েকজন তাকে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা দিয়ে থাকেন। বিক্রির সকল টাকা তিনি দীপঙ্করকে দিয়ে থাকেন। আহছানিয়া সার্জিকালে তিনি ৬০ হাজার টাকা মূল্যের অপারেশনের সেলাই সুতা, হ্যাণ্ড গ্লাবস ও ক্যানুলা নিয়ে গিয়েছিলেন। কয়েকবার তিনি মা সার্জিকালেও বিক্রি করেছেন উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে।
জানতে চাইলে সদর থানার উপপরিদর্শক শরিফ এনামুল হক বলেন, তিনি বিশ্বনাথের কাছে থাকা কার্টুনে ৬০০ পিচ ক্যানুলা পেয়েছেন। যার বাজার মূল্যে আট হাজার টাকার সামান্য বেশি।এদিকে আহছানিয়া সার্জিকাল, মা সার্জিকাল এর মালিগণ দাবি করেছেন তারা কোনদিনও হাসপাতালের মালামাল কেনেননি। সদর হাসপাতালের স্টোর কিপার দীপঙ্কর বর্মণ বলেন, হাসপাতালের কোন সরকারি মাল কালোবাজারে বিক্রির সঙ্গে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই।