চিনে দেখা মিললো করোনাভাইরাস রোগী পোড়ানোর আলামত !!
করোনাভাইরাস বিস্তারের কেন্দ্রভূমি চীনের উহানে উচ্চমাত্রার সালফার ডাইঅক্সাইডের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এটি দেশটিতে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের মরদেহ পুড়িয়ে মারার আভাস দিচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক উপগ্রহ থেকে নেয়া মানচিত্রে দেখা গেছে, উহানের চারপাশে এসও২-এর উপস্থিতি উদ্বেগজনকহারে বেড়েছে। এ ছাড়া কোয়ারেন্টিনের অধীনে থাকা চোংকিং শহরেও উচ্চমাত্রার সালফার ডাইঅক্সাইডের উপস্থিতি রয়েছে।-মেইল অনলাইন
বিজ্ঞানীরা বলছেন, মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার সময় সালফার ডাইঅক্সাইড উৎপাদিত হয়। এ ছাড়া মেডিকেল বর্জ্য ভস্মীভূত করলেও এমনটি ঘটে।কিন্তু সামাজিকমাধ্যম ব্যবহারকারীরা মানচিত্র পর্যালোচনা করে বলছেন, শহরের প্রান্তেই মরদেহগুলো পুড়িয়ে ফেলা হতে পারে।
বড় জমায়েত এড়িয়ে চলতে অল্পসংখ্যক লোকের উপস্থিতিতে মরদেহ পুড়িয়ে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছে চীন সরকার। দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন বলছে, যথাসম্ভব দ্রুত সময়ে লাশগুলো ভস্মীভূত করে ফেলতে হবে, যাতে করে ভাইরাস না ছড়ায়।কিন্তু বারবার দাবি করা হচ্ছে যে, ব্যাপক গণভস্মীভূতকরণের মধ্য দিয়ে মৃতের সংখ্যা লুকাচ্ছে চীন সরকার। যদিও এমন দাবির সত্যতা নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি।
ব্যাপকসংখ্যক মরদেহ ভস্মীভূত করার সঙ্গে উহানের অতিমাত্রায় সালফার ডাইঅক্সাইডের উপস্থিতির একটি সম্পর্ক থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।চেকভিত্তিক আবহাওয়াবিষয়ক ওয়েবসাইট উইন্ডি ডটকম দেখিয়েছে, সপ্তাহের শেষ দিনে প্রতি ঘনমিটারে এক হাজার ৩৫০ মাইক্রোগ্রামের কাছাকাছি সালফার ডাইঅক্সাইড দেখা গেছে উহানে।
সেই তুলনায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, প্রতি ঘনমিটারে ৫০০ মাইকোগ্রামের ডোজ ১০ মিনিটের বেশি ছাড়িয়ে যাওয়া উচিত না।যুক্তরাজ্য সরকার বলছে, প্রতি ঘনমিটারে ৫৩৩ মাইক্রোগ্রামের ঘনীভবন অতিমাত্রায় বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।কিন্তু ম্যাপ অনুসারে, যদিও এসও২-এর মাত্রা আজ কম দেখা যাচ্ছে। কিন্তু অধিকাংশ চীনের সঙ্গে তুলনা করলে উহান ও চোংকিং শহরে সালফার ডাইঅক্সাইডের উপস্থিতি উল্লেখ করার মতো।
সোমবারেও উহানের অধিকাংশ স্থানে প্রতি ঘনমিটারে ৫০০ মাইক্রোগ্রামের বেশি সালফার ডাইঅক্সাইডের উপস্থিতি দেখা গেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মরদেহ ভস্মীভূতকরণে এসও২-এর পাশাপাশি নাইট্রোজেন অক্সাইডের মতো দূষণও ছড়িয়ে পড়ে।
মার্কিন পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থা বলছে, মেডিকেল বর্জ্য পুড়িয়ে ফেলার কারণেও সালফার ডাইঅক্সাইডের নির্গমন হতে পারে।তবে এটি নিশ্চিত না যে, অতিমাত্রায় এসও২-এর উপস্থিতির সঙ্গে করোনাভাইরাসের কোনো সম্পর্ক রয়েছে। জীবাস্ম জ্বালানি ও অন্যান্য রাসায়নিক প্রক্রিয়ায়ও রঙহীন এই গ্যাস উৎপাদন ঘটতে পারে।
এক কোটি ১০ লাখ লোকের শহর উহানকে বিচ্ছিন্ন করে অচল করে দেয়া হয়েছে। কাজেই সেখান থেকে আসা সব খবরের সত্যাসত্য যাচাই করা সহজ না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, অতিমাত্রায় ও দীর্ঘ সময় সালফার ডাইঅক্সাইডের উপস্থিতি স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
অ্যাজমা, ফুসফসের প্রদাহ ও ফুসফুসের কার্যক্রম কমিয়ে দেয়াসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করতে পারে এই গ্যাস বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এসও২-এ মানুষের শ্বাসপ্রশ্বাস ব্যবস্থা, ফুসফুসের কার্যক্রমে ক্ষতিকর প্রভাবসহ চোখে জ্বালাপোড়া দেখা দিতে পারে।
সূত্র : যুগান্তর