দেশের খবর

টেলিটকে ম্যাসেজ দিয়ে জানলেন ফেল, মার্কশিট তুলে দেখলেন পাশ !!

বরিশালে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০১৯ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন বরগুনা সরকারি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী তাহিরা খানম। গত ১৭ জুলাই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হলে টেলিটকের বার্তার মাধ্যমে দেখেন তিন বিষয়ে ফেল করেছেন তিনি। পরে কৌতুহলি হয়ে মার্কশিট তোলেন এই ছাত্রী। দেখেন ফেল নয় বরং জিপিএ ৩.৮৩ (এ-) পেয়ে পাশ করেছেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাহিরার বাবার নাম জাকির হোসেন তরু খান। তার বড় ভাই ফেরদাউস খান ইমন ঢাকার একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের বরগুনা জেলা প্রতিনিধি। তাদের বাড়ি পাথরঘাটা পৌর শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে।

বরগুনার পাথরঘাটা তাছলিমা মেমেরিয়াল একাডেমি থেকে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে ৪.৮২ জিপিএ পেয়ে পাশ করেছিলেন তাহিরা। পরে ভর্তি হন বরগুনা সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে। অবশ্য তার আগে ঢাকা মাইলস্টোন কলেজে ভর্তি হয়ে কয়েকদিন ক্লাস করেন তিনি।

শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাহিরাকে ভারতে নিয়ে চিকিৎসা করায় পরিবার। সেখান থেকে ফেরার পর ফের বরগুনা সরকারি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে ট্রান্সফার হন তিনি।

১৭ মার্চ এইচএসসির ফল প্রকাশ হলে সরকারি মুঠোফোন অপারেটর কোম্পানি টেলিটকে ক্ষুদে বার্তা পাঠান তাহিরা। ফিরতি বার্তায় জানতে পারেন জীববিজ্ঞান, রসায়ন ও উচ্চতর গণিত বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছেন তিনি।

তাহিরার মার্কশিট ও এসএমএস
২০২০ সালে অনুষ্ঠেয় এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে গত ১৭ ডিসেম্বর বরগুনা সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে পুনরায় ফরম পূরণ করেন তাহিরা। এ সময় কৌতুহলি হয়ে গত পরীক্ষার মার্কশিট তোলেন তিনি। দেখেন ফেল নন বরং জিপিএ ৩.৮৩ (এ-) পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি।

বাড়ি ফিরে তিনি আবারও টেলিটকের মাধ্যমে নিজের ফলাফল জানার চেষ্টা করেন তাহিরা। মেসেজে সেই তিন বিষয়ে এখনো ফেল দেখানো হচ্ছে তাকে।

তাহিরা খানম জানান, ফলাফল বিভ্রাটের কারণে তার শিক্ষা জীবন থেকে মূল্যবান একটি বছর হারিয়ে গেছে। তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না, এত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এমন ভুল হতে পারে।

তাহিরা বলেন, ‘এইচএসসি ফলাফল প্রকাশের কিছুদিন আগে বাবা-মা তাদের পছন্দের পাত্রের কাছে আমাকে বিয়ে দেন। পরীক্ষার ফলাফলে শ্বশুরবাড়িসহ নিজের পাড়া মহল্লা এবং সহপাঠী মহলে নানা তিরস্কারের শিকার হতে হয়েছে আমাকে। আমি যে রেজাল্ট পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি তাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরসহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারতাম। কিন্তু বোর্ডের ভুলের কারণে এখন আর সে সুযোগ নেই।’

তাহিরার বড় ভাই ইমনজানান, বোনকে এইচএসসিতে ভালো ফল করার জন্য বিজ্ঞান বিভাগের সবগুলো এবং ইংরেজি বিষয়ে প্রাইভেট পড়িয়েছেন তিনি। পরীক্ষাও ভালোভাবে দেন তাহিরা। তার আশা ছিল ছোট বোন পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করবে। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যারয়ে ভর্তির জন্য রাজধানীতে রেখে বোনকে কোচিংও করান তিনি।

তাহিরার মা সেলিনা খানম জানান, তাহিরা এ প্লাস (এ+) পাবে বলে আশা করেছিলেন তিনি। কিন্তু ফল দেখে হতাশ হয় পুরো পরিবার। কিন্তু নতুন করে রেজাল্ট দেখার পর তারা তাহিরার ক্ষতির জন্য দায়িদের শাস্তি চান। প্রয়োজনে আইনের সহায়তা চাইবেন বলে জানান তিনি।

বরগুনা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর আবদুস সালামের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা হলে তিনি জানান, বিষয়টি কেন কীভাবে ঘটল তা কলেজ কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে না। এটা বোর্ডের বিষয়। বোর্ডই বিষয়টির উত্তর দিতে পারবে।

গত ২২ ডিসেম্বর তাহিরার ফলাফলের বিষয়টি নিশ্চিত হতে বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুসের কাছে আবেদন করেন বড় ভাই ইমন। বিষয়টি খতিয়ে দেখতেও অনুরোধ করেন। কিন্তু পুনরায় ফেল আসায় ইমন বোর্ডের মার্কশিটে উত্তীর্ণ হওয়ার প্রমাণ দেখান চেয়ারম্যানকে। পরে তিনি বোর্ডের সিস্টেম এ্যানালিস্টকে ডেকে আনান।

এ্যানালিস্ট চেয়ারম্যানকে তাদের কিছু ভুলত্রুটির কথা জানান। তবে পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে ভুল সংশোধন করে দেওয়ার কথা বলেন চেয়ারম্যান। এ ছাড়া ভুলের দায় তিনি টেলিটকের ওপর চাপাতে চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত বোর্ড কর্তৃপক্ষের কোনো সদুত্তর না পেয়ে অফিস ত্যাগ করেন ইমন।

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মো. আনোয়ারুল আজিম জানান, টেকনিকেল সমস্যার কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। ফল ঘোষণার ১৫ দিন পর ফের ফল সংশোধন করে দেওয়া হয়েছে। তখন তাহিরা আবেদন করলে যাচাই-বাছাই করে সংশোধন করে দেওয়া হতো।

সূত্রঃ দৈনিক আমাদের সময়

J A Suhag

Local News: J A Suhag writes Local News articles for industries that want to see their Google search rankings surge. His articles have appeared in a number of sites. His articles focus on enlightening with informative Services sector needs. he holds the degree of Masters in Business and Marketing. Before he started writing, he experimented with various professions: computer programming, assistant marker, Digital marketing, and others. But his favorite job is writing that he is now doing full-time. Address: 44/8 - North Dhanmondi, Dhaka Email: [email protected]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button