তলানিতে ইমরানের জনপ্রিয়তা – সরকারের দখল নিচ্ছে পাক সেনাবাহিনী !!
ফের সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে পাকিস্তান! ইমরান খান এখনও প্রধানমন্ত্রীর পদে আছেন বটে, বকলমে দেশ চালাচ্ছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। গত কয়েক মাসের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সিদ্ধান্ত এমনই ইঙ্গিত করছে।ইমরান খানকে ক্ষমতায় রেখেই সরকারের উপরে ছড়ি ঘোরাচ্ছে পাক সেনা। মূলত সরকারের গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারণের ক্ষমতা নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছে তারা।
বর্তমানে অন্তত এক ডজন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভূমিকা পালন করছেন সেনাবাহিনীর কর্মরত এবং অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিকরা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থা, বিদ্যুৎ নিয়ামক সংস্থা এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ (NIH)। এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের হর্তাকর্তার ভূমিকায় এখন সেনাবাহিনীর মনোনীত অফিসাররা। এর মধ্যে চলতি করোনা মহামারী মোকাবিলায় মুখ্য ভূমিকা NIH নিচ্ছে। গত অন্তত দু’মাসের মধ্যে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সরকরি শীর্ষপদে সেনাবাহিনীর লোকজনকে বসিয়েছে ইমরান খান সরকার।
পাক পার্লামেন্টের ৪৬ শতাংশ আসন ইমরান খানের দল PTI-এর দখলে। ক্ষমতা ধরে রাখতে বেশ কয়েকটি ছোট দলের সঙ্গে জোট করতে বাধ্য হয়েছে তারা। এই পরিস্থিতিতে সরকারে টিকে থাকার জন্য ইমরান খানের পক্ষে সেনাবাহিনীর সহায়তা একান্ত প্রয়োজন। এর মধ্যে সময়টা মোটেই ভালো যাচ্ছে না ক্রিকেটের মাঠ থেকে রাজনীতির ময়দানে পা দেওয়া ইমরানের জন্য। অর্থনৈতিক শ্লথতা এবং জিনিসপত্রের আকাশ ছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধির জেরে পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ ক্ষুদ্ধ। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর একাধিক ঘনিষ্ঠ সহযোগীর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ। আর সব কিছু মিলিয়ে সাধারণ মানুষকে ‘নতুন পাকিস্তান’ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়ে পাকিস্তানের মসনদ দখল করা ইমরানের জনপ্রিয়তা পড়ন্ত। নিম্নমুখী তাঁর প্রভাব। এই পরিস্থিতিতে ফের সক্রিয়তা বেড়েছে পাক সেনাবাহিনীর। একের পর এক অফিসারকে সরকারি উচ্চ পদে বসিয়ে অসামরিক এই সরকারের উপরে নিয়ন্ত্রণ আরও শক্ত করছে তারা।
বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনার গ্রাস থেকে মুক্ত নয় পাকিস্তান। সেদেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আ’ক্রান্তের সংখ্যা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারকে সহায়তা করছে সেনাবাহিনী। এখানেই সীমাবদ্ধ নেই সেনার ভূমিকা। করোনা নিয়ে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত সাংবাদিক বৈঠকে দেখা গিয়েছে উর্দিধারী পাক সেনাকর্তাদের। এর মধ্যে চলতি সরকারের উপরে সেনাবাহিনীর প্রভাব বিস্তারের লক্ষণ দেখতে পারছেন বিশেষজ্ঞরা।
পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা প্রশ্নাতীত। দেশের সাত দশকের ইতিহাসের একটা দীর্ঘ সময় সেনা শাসনে থেকে পাকিস্তান। ফের সরকারি নীতিনির্ধারণে সেনাবাহিনীর এই ধরনের সক্রিয়তায় চর্চা শুরু হয়েছে পাক রাজনীতির অন্দরে।
সূত্র- এই সময়