নরসিংদীতে দুধের শিশু ঘরে রেখে করোনা যুদ্ধে মা-বাবা !!
প্রা’ণঘাতী করোনায় আ’ক্রান্ত সোনার বাংলাদেশ। দেশের প্রায় ৫৪ টি জেলা করোনা’ক্রা’ন্ত হয়ে আছে। তেমনই দেশের নরসিংদী জেলাতেও পড়েছে করোনা মরণ ছোবল। নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলায় এই ভা’ইরাসকে ঠেকাতে জনসাধারণকে সচেতন ও ঘরমুখি করতে দিনরাত কাজ করছেন উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগ। বাসায় মাত্র ১১ মাস বয়সী দুধের শিশু সন্তান রেখে মাঠে রয়েছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুনমুন জাহান লিজা। এছাড়া ৪ বছর বয়সী এক শিশু সন্তানও রয়েছে এই এসিল্যান্ডের ঘরে।
করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ও মানুষজনকে সচেতন করতে শিবপুর উপজেলা জুড়ে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে যাচ্ছেন তিনি। জানা গেছে, করোনা মোকাবিলায় শিশু সন্তানদের বিশেষ করে দুধের শিশুকে বাসায় রেখে মাঠ পর্যায়ে নিয়মিত নিরলসভাবে কাজ করতে হচ্ছে এ কর্মকর্তাকে। এছাড়া তার স্বামী মো. মোশারফ হোসেনও ঢাকা পিজি হাসপাতালের একজন চিকিৎসক। তিনিও সন্তানদের রেখে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। একইসঙ্গে বাবা-মা দুজনই নিজ নিজ কর্মস্থলে করোনা যুদ্ধের দায়িত্ব পালন করায় বাবা-মায়ের আদর স্নেহ থেকে বঞ্চিত দুই সন্তান। দিনভর বাসার বাইরে থাকায় ১১ মাসের শিশু সন্তান বুকের দুধের জন্য কষ্ট করলেও করোনা প্রতিরোধ ও মানুষের সেবায় দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট রয়েছেন এসিল্যান্ড। তিনি জনগণের কাছে গিয়ে সরকারের নির্দেশনা ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার অনুরোধ করছেন। শিশু সন্তান রেখে কর্মস্থলে সাধারণ মানুষের জন্য তার এ যুদ্ধকে প্রশংসনীয় বলে দাবি করছেন স্থানীয়রা।
এলাকাবাসী জানান, এসিল্যান্ড মুনমুন জাহান লিজা করোনা প্রতিরোধে যে ভূমিকা রেখে চলেছেন তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তিনি অত্যন্ত দক্ষতা ও মানবিকতার সাথে এই করোনা মোকাবিলায় কাজ করছেন। এই করোনা সঙ্কটের সময়ে যে সব মুক্তিযোদ্ধা ইন্তেকাল করেছেন তাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিতেও তিনি ছুটে গেছেন।
স্থানীয়রা জানান, করোনা ছাড়াও শিবপুরের টেক টিলা রক্ষা, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করা, বাল্য বিবাহ বন্ধ, ভেজাল খাদ্য নিরোধ, মাদক নির্মূল ও ওষুধের দোকানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ইতোপূর্বে প্রশংসিত হয়েছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম ভূঞা রাখিল সময় সংবাদকে বলেন, আমাদের এসিল্যান্ড মুনমুন জাহান লিজা বাসায় দুই শিশু সন্তান রেখে শিবপুরবাসীকে করোনা থেকে বাঁচাতে বিরামহীন কাজ করে চলেছেন। তার এ পরিশ্রম শিবপুরবাসীর নজর কেড়েছে। এসিল্যান্ড মুনমুন জাহান লিজা সময় সংবাদকে জানান, নরসিংদীর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন স্যার এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হুমায়ুন কবীর স্যারের নির্দেশনা ও তদারকিতে শিবপুরে করোনা মোকাবিলায় আমি কাজ করে যাচ্ছি। এখন ব্যক্তিগত সমস্যার চেয়ে জনস্বার্থ অনেক জরুরি। করোনা পরিস্থিতিতে শিবপুরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বিগত ১ মাসে মোট ১৩৪টি মামলা দেয়া হয়েছে এবং ১ লাখ ৬৫ হাজার ৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে জানান এসিল্যান্ড মুনমুন জাহান লিজা।