নাগরিকত্ব আইনের পক্ষ নেয়ায় বিধায়ককে সাসপেন্ড মায়াবতীর !!
ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) পক্ষে কথা বলায় নিজ দলের বিধায়ককে সাময়িক বরখাস্ত (সাসপেন্ড) করেছেন বহুজন সমাজবাদী পার্টি (বিএসপি) সুপ্রিমো মায়াবতী। মধ্যপ্রদেশের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ওই নারী বিধায়কের নাম রমাবাই পারিহার। এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।
রোববার এক টুইট বার্তায় দলের শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানানো হয়। টুইট বার্তায় মায়াবতী লেখেন, শৃঙ্খলাভঙ্গ করলেই দলের সংসদ সদস্য এবং বিধায়কদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে শনিবার মধ্যপ্রদেশের পাথেরিয়ার (বিএসপি) বিধায়ক রমাবাই পারিহার এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ প্যাটেলও। অনুষ্ঠানে একপর্যায়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএএ) অনায়াসে সংসদে পাস করানোয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ আর প্রহ্লাদ প্যাটেলকে অভিনন্দন জানান। পাশাপাশি তিনি ও তার পরিবার এই আইনকে সমর্থন করেন বলেও জানান।
এ ঘটনার একদিন পরই টুইটে সরব হয়ে মায়াবতী বলেন, বিএসপি শৃঙ্খলাপরায়ণ দল। সেই দলে শৃঙ্খলাভঙ্গ হলেই সংসদ সদস্য কিংবা বিধায়কদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাথেরিয়ার দলীয় বিধায়ক রমাবাই পারিহারকে বিএসপি থেকে সাসপেন্ড করা হল। পাশাপাশি এখন থেকে দলের সব বৈঠক এবং অনুষ্ঠানে, তার উপস্থিতির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
এরপর সিরিজ টুইটে প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ লেখেন, একদম প্রথমদিন থেকে বিএসপি বলে আসছে সিএএ বিভেদমূলক এবং সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর পরিপন্থী। আমাদের দল সংসদে এই বিলের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। এমনকি, আমরা রাষ্ট্রপতিকে অবিলম্বে এই বিল খারিজ করতে অনুরোধ করেছি। এতকিছুর পরও রমাবাই পারিহার দলের ঘোষিত নীতির বিপক্ষে গেছেন।
বিএসপি সূত্রে জানা গেছে, এর আগেও দলের বিরুদ্ধাচারণ করার জন্য ওই নারী বিধায়ককে সতর্ক করা হয়েছিল।
এদিকে, বিএসপির ওই নারী বিধায়কের অবস্থানকে কুর্নিশ জানিয়ে বিজেপির মুখপাত্র রজনীশ আগরওয়াল বলেছেন, বিজেপি রমাবাই পারিহারের সাহসী মন্তব্যকে স্বাগত জানায়। মধ্যপ্রদেশের শাসক শিবিরের অনেকেই মনে করেন এই আইন যুক্তিযুক্ত। কিন্তু প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতে পারছেন না। আশা করা যায় এরপর তারা মুখ খুলবেন। ২৩০ সদস্যের মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় বিএসপি, সমাজবাদী পার্টি আর চার নির্দল বিধায়কের সমর্থনে সরকার চালাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ।
এর আগে বিএসপির কয়েকজন সদস্য রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করে অবিলম্বে এই আইন খারিজের অনুরোধও করেছেন। পাশাপাশি রাষ্ট্রপতির কাছে জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অভিযুক্ত’ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে চলা বিচারবিভাগীয় তদন্ত খারিজের আবেদন জানিয়েছেন ওই প্রতিনিধি দল।