দেশের খবর

পাশে বসা লোকটি ব্যাগের ফাঁক দিয়ে পুরুষাঙ্গ দেখাচ্ছিল, এরপর…

“সেদিন একটা কাজে যেতে বাসে উঠেছিলাম। হঠাৎ খেয়াল হলো আমার পাশের সিটের পুরুষ যাত্রী আমার শরীর ঘেঁষে বসার চেষ্টা করছেন।” “আমি জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে ছিলাম। গায়ে মৃদু ধাক্কা লাগার পর চোখ ফেরাতেই একেবারে হতভম্ব হয়ে যাই। লোকটার কোলে একটা ব্যাগ রাখা ছিলো। ব্যাগের ফাঁক দিয়ে লোকটা পুরুষাঙ্গ দেখাচ্ছিলো। লোকটি আমার গা ঘিনঘিন করছিলো। কিন্তু প্রতিবাদ করতে পারিনি। আমি শুধু সিট থেকে উঠে বাসের পেছনের দিকে অন্য সিটে গিয়ে বসে পড়ি।” বলছিলেন সাবিহা আফরোজ, তিনি স্বামীর সঙ্গে মিলে একটি ট্যুর কোম্পানি পরিচালনা করেন। ব্যবসা কিংবা ব্যক্তিগত কাজে প্রায় প্রতিদিনই তাকে বাড়ির বাইরে বের হতে হয়।

মিসেস আফরোজ বলছেন, যে হারে ধ’র্ষণ, যৌ’ন নির্যাতনের মতো ঘটনা বাড়ছে তাতে করে প্রতিদিনই নিজের নিরাপত্তা নিয়ে একরকম টেনশন কাজ করে তার মধ্যে। “আগে চিন্তা হতো যে, সড়ক দুর্ঘটনা, ছিনতাই বা এরকম কোন সমস্যায় পড়বো কি-না। বেঁচে ফিরবো কি-না। এখন সেরকম কোন চিন্তা মাথায় কাজ করে না। এখন সবার আগে মাথায় এই চিন্তা আসে যে, আমি নিজের সতীত্ব নিয়ে বাসায় ফিরতে পারবো তো?”

‘ব্যাগে কাঁচি নিয়ে বের হই’

সম্ভাব্য যৌ’ন হয়রানি কিংবা এধরণের বিপদ এড়াতে অনেক নারী এখন নিজেরাই বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে থাকেন। এরকমই একজন তামজিন নাইমা। তিনি একজন স্কুলশিক্ষক। নিজেকে নিরাপদ রাখতে তিনি কারাতে শিখেছেন। “কারাতে আমাকে কনফিডেন্স দিয়েছে। কিন্তু সত্যি কথা বলতে আমি শারীরিকভাবে বেশ দুর্বল। ফলে ব্যাগে করে আমি কাঁচি বা এধরণের জিনিস নিয়ে বের হই।” সাবিহা আফরোজও বলছেন একই ধরণের সতর্কতার কথা। “আমি কোথাও গেলে অনেক কিছু চিন্তা করে বের হই। যেখানে মানুষজন কম, সেখানে থাকি না। অনেক সময় বাসে কম যাত্রী থাকলে উঠি না। এজন্য অনেকক্ষণ অপেক্ষায় থাকতে হয়। এছাড়া সঙ্গে সেফটি পিন রাখি, এন্টি কাটার রাখি কোন বিপদে পড়লে যেন কিছুটা কাজে আসে সেজন্য।”

অভিভাবকদেরও দু:শ্চিন্তা বেড়েছে

বাংলাদেশে শুধু যে নারীরা ধ’র্ষণের শিকার হচ্ছেন, তা নয়। শিশুরাও ধ’র্ষণ কিংবা যৌ’ন হয়রানির মুখে পড়ছেন। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের তথ্যে দেখা যায়, গেলো বছরে শিশু ধ’র্ষণের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। ফলে অভিভাবকদেরও দু:শ্চিন্তা বেড়েছে। এরকমই একজন ঢাকার নাজমা রশীদ। তার এক ছেলে, এক মেয়ে। ছেলের বয়স ষোলো। আর মেয়ের বয়স তেরো। মিসেস রশীদ বলছেন, ছেলেকে নিয়ে তার ততটা ভাবতে হয় না। যতটা ভাবতে হয় মেয়েকে নিয়ে। তিনি বলছেন, “আমার ছেলে বাইরে খেলতে যায়। মেয়েকে কোথাও একা যেতে দিই না। সারাক্ষন চোখে চোখে রাখি। কাউকে বিশ্বাস করা যায় না তো।” “ওর বয়স যখন একবছর হয়, তখন থেকেই ওকে কোন পুরুষ আত্মীয়ের কোলেও দিতাম না। মেয়েকে যেনো নিরাপদে রাখতে পারি, এজন্যই সাত বছর আগে চাকরিটাও ছেড়ে দিয়েছি। এরপরও ভরসা পাই না। সবসময় তো আর নজরে রাখা সম্ভব হয় না”

পরিস্থিতি কতটা স্বাভাবিক

নারীরা বলছেন, তাদের মধ্যে যৌ’ন নির্যাতনের শিকার হবার ভয় ঢুকে গেছে। এমনকি শিশুদের ক্ষেত্রেও এ ভয় তাড়া করে ফিরছে অভিভাবকদের। কিন্তু এ ধরণের পরিস্থিতি একটা সমাজের জন্য কতটা স্বাভাবিক? সমাজবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন, সাদেকা হালিম বলছেন, এধরণের পরিস্থিতি মোটেই স্বাভাবিক নয়।

“প্রত্যেকটা নারীর নিজস্ব বলয় আছে। বাংলাদেশে জনসংখ্যার পঞ্চাশ শতাংশেরও বেশি নারী। তাদের মধ্যেই আবার প্রায় ৬২ শতাংশ নারী কর্মজীবী। এখন তাদের যদি নিরাপত্তা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়, রাতে বের হবো কি-না সেটা ভাবতে হয়, তাহলে এটাতো তো তাদের পদে পদে বাধা সৃষ্টি করবে।” তিনি বলছেন, এ ধরণের মানসিক চাপ বা ভীতি নিয়ে ব্যক্তির উপর যেমন প্রভাব ফেলে, তেমনি সেটা সামাজিক অগ্রগতিকেও ব্যহত করে।-বিবিসি বাংলা।

J A Suhag

Local News: J A Suhag writes Local News articles for industries that want to see their Google search rankings surge. His articles have appeared in a number of sites. His articles focus on enlightening with informative Services sector needs. he holds the degree of Masters in Business and Marketing. Before he started writing, he experimented with various professions: computer programming, assistant marker, Digital marketing, and others. But his favorite job is writing that he is now doing full-time. Address: 44/8 - North Dhanmondi, Dhaka Email: [email protected]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button