পুলিশের ভুলে বিনা অপরাধে জেল খাটলো নিরীহ রাজন !!
অবশেষে বিনা অপরাধে ২৬ দিন কারাগারে থাকা মো. রাজন ভুইয়াকে কারামুক্তির আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এক টাকা মুচলেকায় রাজনের এ কারামুক্তির আদেশ দেন।
সেই সঙ্গে রাজনকে গ্রেফতারকারী কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া থানার এসআই আরশাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না- এই মর্মে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন।
আগামী ৪ ডিসেম্বর ওই নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে রাজনের পরিবার-পরিজনকে হয়রানি না করারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রাজন ভুইয়ার আইনজীবী নিকুঞ্জ বিহারী আচার্য্য বলেন, গত ১৬ অক্টোবর গাড়ির ওয়ার্কশপের কর্মচারী মো. রাজন ভুইয়াকে (১৯) গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ যে পরোয়ানা মূলে তাকে গ্রেফতার করে সেখানে নাম লেখা ছিল মো. হাবিবুল্লাহ রাজন এবং পিতা- আব্দুল মান্নান। গ্রেফতারের পর নামের পার্থক্য ও রাজনের পিতার মৃত্যুর কথা জানালেও পুলিশ তা আমলে নেয়নি।
তিনি জানান, ‘যার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা তিনিও একই এলাকার। তবে রাজধানী ঢাকার রমনা থানাধীন মগবাজার এলাকায় তার আরেকটি ঠিকানা রয়েছে। মামলার প্রকৃত আ’সামি মো. হাবিবুল্লাহ রাজন (৩৩) গত ৭ নভেম্বর একই আদালতে আত্মসমর্পণ করতে এসেছিলেন। কিন্তু ভুল আ’সামি মো. রাজন ভুইয়া এ মামলায় কারাগারে থাকায় ওইদিন আদালত তার আত্মসমর্পণ নিতে পারেননি।
এরপর আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত নিশ্চিত হন যে কারাগারে থাকা রাজন এ মামলার প্রকৃত আ’সামি নন। পরে আদালত রাজনকে জামিন ও মামলা থেকে অব্যাহতির আদেশ দিয়েছেন। শুধুমাত্র নামের মিল থাকার কারণে রাজনকে বিনা অপরাধে ২৬ দিন কারাগারে থাকতে হয়েছে।’
আদালত সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ৯ মে মো. হাবিবুল্লাহ রাজন ২৮ পিস নেশাজাতীয় ইনজেকশনসহ রাজধানীর বংশাল থানাধীন তাঁতীবাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার হয়। মামলায় চার্জশিট (অভিযোগপত্র) হওয়ার পর ২০১২ সালের ১ জুলাই বিচারিক আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। জামিন পেয়েই সে পলাতক হয়। এরপর ২০১৩ সালের ৬ জুন আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
সর্বশেষ গত বছর ১৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করা হয়। ওই পরোয়ানা পেয়ে পুলিশ ভুল আ’সামিকে গ্রেফতার করে।