দেশের খবর

পৃথিবীতে এক অনন্য নজির স্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা !!

পৃথিবীতে এক অনন্য নজির স্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একযোগে প্রায় ৭০ হাজার গৃহহীন পরিবারকে বাড়ি করে দিয়ে তাদের নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখিয়েছেন তিনি। দিয়েছেন বেঁচে থাকার অবলম্বন। এটি পৃথিবীর ইতিহাসে মানবতা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে প্রায় নয় লাখ মানুষকে জমিসহ পাকা ঘর করে দেয়ার প্রক্রিয়া চলমান। ইতিমধ্যে প্রথম পর্যায়ে প্রায় ৭০ হাজার বাড়ি নির্মাণ হয়েছে। আজ শনিবার (২৩ জানুয়ারি) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কর্মসূচি উদ্বোধন করেছেন।

আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর পরিচালক মো. মাহবুব হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, পৃথিবীতে এটিই প্রথম এবং একমাত্র ঘটনা; একসঙ্গে এতো মানুষকে জমির মালিকানা দিয়ে পাকা ঘর করে দেয়া। এটি মূলত মুজিববর্ষে গরীব ও অসহায় মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার।

তিনি বলেন, একটি ঘর শুধু একটি আশ্রয়স্থল নয়, যার কিছুই ছিল না এই ঘরটি তার জন্য আত্মমর্যাদার। এই ঘরের মালিকরা সপরিবারে বিভিন্ন সেবা পাবে; শিক্ষা-স্বাস্থ্য, সুপেয় পানিসহ সকল নাগরিক সুবিধা দেয়া হবে। প্রশিক্ষণের আওতায় এনে স্বনির্ভর করা হবে। এতে দারিদ্র্যতা বিমোচন হবে। অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও খুলনার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শেখ হাসিনার এ উপহার পেয়ে অসহায় পরিবারে ঈদের আনন্দ বইছে। পাকাঘরে ঘুমানোর স্বপ্নে বিভোর তারা। তাদের সে-কি উচ্ছ্বাস! জেগেছে আশা, বেড়েছে স্বপ্ন। অথচ কদিন আগেও তাদের কোনো থাকার যায়গা ছিল না। ছিল না কোনো ঘর। বেঁচে থাকাই ছিল যন্ত্রণা।

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার ধানসাগর ইউনিয়নের রথিয়া রাজাপুর গ্রামের বেলুকা বেগম (৫৫) জাগো নিউজকে বলেন, এই বাড়ি আমার বেঁচে থাকার স্বপ্ন জুগিয়েছে। মানুষের ঘরে কাজ করে খেতাম, এখানে-সেখানে থাকতাম। কখনও মানুষ তাড়িয়ে দিত, কখনও প্রকৃতি (বন্যা-ঘূর্ণিঝড়) সব কেড়ে নিয়েছে। বেঁচে থাকার কোনো অবলম্বন ছিল না। শেখ হাসিনা জমি ও পাকাঘর করে দিয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিলেন। বাকি জীবন অন্তত নিশ্চিন্তে কাটিয়ে দিতে পারব।

একই এলাকার ইব্রাহীম শিকদার (৩০) বলেছেন, আমরা কাজ করে কোনোমতে দিনের খাবার জোগাড় করতে পারি। কিন্তু থাকার ঘর করার সাধ্য নেই। পলিথিনের চালের ঘরে রোদ-বৃষ্টিতে কষ্ট হতো। এখন আর সে অনিশ্চিয়তা নেই। শেখ হাসিনা আমাদের দুঃশ্চিন্তা ঘুচিয়ে দিয়েছেন।

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ইশ্বরীপুর গ্রামের অজিয়ার সরদার (৭০) বলেন, গত চার বছর বন্যার পানিতে সব ডুবে গেছে। থাকার যায়গা নেই। নেই কোনো ঘরও। চেয়ারম্যানের কাছ থেকে এক হাজার টাকা অনুদান নিয়ে টিন আর পলিথিন দিয়ে ঘর বানাইছি। এক ঘরে ৮/১০ জন থাকতে হতো। সেটিও মসজিদের যায়গা হওয়ায় মানুষের নানা কথা শুনতে হতো। শেখ হাসিনার দেয়া জমি ও পাকাঘর আমার শেষ জীবনের সহায় হবে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বন্দনা মণ্ডল (১৭) জানিয়েছেন, ৬ষ্ঠ শ্রেণি শেষ করতেই অসহায় বাবা-মা তাকে বিয়ে দিয়ে দেন। কোলজুড়ে আসে সন্তানও। চিংড়ির ঘেরে কাজ করে পাওয়া স্বামী তাপস মন্ডলের ৭ হাজার টাকায় কোনো রকমে সংসার চলে। বেঁচে থাকার লড়াইটাই ছিল বড়। কোনো স্বপ্ন ছিল না। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার পেয়ে এখন স্বপ্ন দেখছেন, মেয়ে তিশাকে (৩) পড়াশোনা করিয়ে মানুষ করবেন।

এভাবে সারাদেশের নয় লাখ পরিবারকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন শেখ হাসিনা। বেঁচে থাকার স্বপ্ন। টিকে থাকার স্বপ্ন। স্বাবলম্বী ও সমৃদ্ধ হওয়ার স্বপ্ন। নিশ্চিত করছেন তাদের অধিকার। বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরদার মোস্তফা শাহীন বলেন, আমি ঘরের কাজ করতে গিয়ে কত শত মানুষের দুঃখ-দুর্দশার গল্প শুনেছি। মানুষের অসহায়ত্ব দেখেছি। এই উপজেলায় ২০০ পরিবার বাড়ি পাচ্ছে। এটা প্রধানমন্ত্রীর মহান উদ্যোগ। আর আগে কেউ এমন উদ্যোগ নেয়নি। এই উদ্যোগে মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে, এটা অনেক বড় প্রাপ্তি।

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আ ন ম আবুজর গিফরী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই আশ্রয়ণ প্রকল্প পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মানবিক উদ্যোগ। এতে মানুষ অনেক খুশি। এর কারণে মানুষের জীবনযাত্রা পাল্টে যাবে। দারিদ্র্য বিমোচন হবে। স্বাবলম্বী হবে, বোঝা না হয়ে সম্পদে পরিণত হবে।

ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তত্ত্বাবধানে আশ্রয়ণ নামে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। উদ্দেশ্য ছিল— ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন, ঋণপ্রদান ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহে সক্ষম করে তোলা এবং আয়বর্ধক কার্যক্রম সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূর করা। এই প্রকল্পের আওতায় ১৯৯৭ সাল থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত তিন লাখ ২০ হাজার ৫২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় প্রায় নয় লাখ মানুষকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া চলছে। আগামী মাসে আরও এক লাখ পরিবার বাড়ি পাবে অসহায় এসব মানুষ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলছেন, বাংলাদেশের একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। আমি জনগণের জন্য বিনিয়োগে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নের জন্য ক্ষুধা, দারিদ্র্য, অসুস্থতা, লিঙ্গ বৈষম্য, অবিচার আর অজ্ঞতার শেকল থেকে তাদের মুক্ত করতে চাই।

এর আগে শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উদ্বাস্তু পরিবারের জন্য কক্সবাজারে ‘খুরুশকুল বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প’ করেন। সেটিও বিশ্বের সর্ববৃহৎ একক জলবায়ু উদ্বাস্তু পুনর্বাসন প্রকল্প। এতে পাঁচতলা বিশিষ্ট ২০টি ভবনে ৬০০ জলবায়ু উদ্বাস্তু পরিবারকে ফ্ল্যাট দেয়া হয়।এছাড়াও ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে থাকার জায়গা দিয়ে বিশ্বে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ উপাধিতে ভূষিত হন শেখ হাসিনা। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন তার (শেখ হাসিনা) যুগান্তকারী পদক্ষেপ।-জাগো নিউজ

J A Suhag

Local News: J A Suhag writes Local News articles for industries that want to see their Google search rankings surge. His articles have appeared in a number of sites. His articles focus on enlightening with informative Services sector needs. he holds the degree of Masters in Business and Marketing. Before he started writing, he experimented with various professions: computer programming, assistant marker, Digital marketing, and others. But his favorite job is writing that he is now doing full-time. Address: 44/8 - North Dhanmondi, Dhaka Email: [email protected]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button