প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা না দেওয়ায় লজ্জিত বিএনপি !!
প্রধানমন্ত্রী কিছুদিন আগে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের টাকা খরচ করে কলকাতা সফর করে আসলেন। বলা হচ্ছে, তিনি নাকি সরকারি আমন্ত্রণে কলকাতা গিয়েছেন। সেখানকার বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে কোনো অভ্যর্থনা পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে আমরা লজ্জিত, বিস্মিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী তো দূরের কথা, কোনো সিনিয়র সচিবকেও পাঠানো হয়নি। তাকে রীতিমতো অপমান করা হয়েছে। জনগণের অধিকার হরণ করে, আগের রাতে ভোট ডাকাতি করে কিংবা বিনা ভোটে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হয়েও দাম্ভিকতার সহিত যিনি জনসম্মুখে বক্তব্য রাখতে পারেন, তিনি একটি স্বাধীন দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েও পার্শ্ববর্তী দেশের কোনো প্রটোকল না পেলেও লজ্জিত না হয়ে যে উল্লসিত হবেন, এটাই স্বাভাবিক।
এসব কর্মকাণ্ডে দেশবাসী লজ্জিত হয়। জাতি হিসেবে বাংলাদেশের জনগণের মান-সম্মানের হানি ঘটলেও প্রধানমন্ত্রীর টনক নড়ে না। তিনি বাংলাদেশের মানুষের আত্মমর্যাদা, মান-সম্মান মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছেন বলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
‘আপনারা দেখবেন, এখন কথায় কথায় বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নাকি সর্বোচ্চ পর্যায়ে। আসলে অপ্রিয় হলেও বাস্তবতা এখন এমনি পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে, শেখ হাসিনা এখন রাষ্ট্রের টাকা খরচ করে, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে তথাকথিত উচ্চপর্যায়েই ঘুরছেন, উড়ছেন। কিন্তু নিচে যে স্বাধীন দেশের আঠারো কোটি মানুষের স্বার্থ জড়িত রয়েছে, সম্মান জড়িত রয়েছে, সেগুলো এখন নতজানুর চোরাবালিতে ডুবে যাচ্ছে। তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বাংলাদেশ বঞ্চিত। ‘গরু চোর’ অপবাদ দিয়ে প্রায়শ:ই সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিকদের নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। অথচ প্রতিবাদ করার সামর্থ হারিয়ে ফেলেছে বর্তমান অবৈধ সরকার। শিরদাঁড়া সোজা না থাকলে, শির উঁচু করে কথা না বলতে পারলে, বুকের পাটা না থাকলে এমনই হয়। গদিরক্ষা বিপজ্জনক হবে ভেবেই শেখ হাসিনার সরকার প্রতিবাদ করতে পারে না।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, দেশ থেকে নয় লাখ কোটি টাকা পাচার হয়ে গেল। বালিশ, খাতা, কম্বল কেনার নাম করে লুটে নেওয়া হলো কোটি কোটি টাকা। লুটেরারা অধরাই থেকে গেল। অথচ মিথ্যা মামলায় দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে দেশনেত্রীকে ধীরে ধীরে হত্যার চক্রান্ত চলছে। এই চক্রান্তের দায় কেউ এড়াতে পারবে না।রিজভী আহমেদ বলেন, পেঁয়াজ ও চালের দাম বেড়েই চলেছে। দেশে-বিদেশে পেঁয়াজ নিয়ে নিশিরাতের প্রধানমন্ত্রী রঙ্গরস করলেও বর্তমান বাজার পরিস্থিতি এখন স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য আতঙ্কের। মাসের পর মাস পার হলেও নিত্যপণ্যের বাজারের কোনো উন্নতি হয়নি।
তিনি বলেন বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত শাক-সবজি সরবরাহ থাকলেও শুধুমাত্র সিন্ডিকেটের কারণে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সবজির দাম। পেঁয়াজের জন্য হাহাকার চলছে। আজকেও গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে, ৩৮ টাকায় পেঁয়াজ কিনে সিন্ডিকেটের সদস্যরা তা বিক্রি করছেন দুইশ’ টাকার উপরে। ১৯৭৪ সালেও এমন হাহাকার ছিল লবণের জন্য।