প্রবাসীদের করোনা সচেতনতা বাড়াতে সিঙ্গাপুরে লিফলেট বিতরণ !!
করোনাভাইরাস বিষয়ে সিঙ্গাপুর প্রবাসীদের সচেতনতার লক্ষ্যে পেঞ্জুরু ডরমিটরি, সিডিপিএল ডরমিটরি, মেগা শিপইয়ার্ড ডরমিটরিতে ও অন্যান্য ডরমিটরিগুলোতে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।
চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত ২ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এতে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৭৫ হাজার ৭৫২ জন। শুধুমাত্র চীনেই করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৭৪ হাজার ৫৭৬ জন।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সিঙ্গাপুরে নতুন করে তিনজনের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৫ জন। এর মধ্যে পাঁচজন বাংলাদেশি রয়েছে।
পাঁচজন আক্রান্ত হওয়ায় সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশিরা আতঙ্কে দিন পার করছেন। খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে যেতে চায় না। অনেকেই চাকরি ছেড়ে দেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাই প্রবাসী বাংলাদেশিদের আতঙ্কিত না হওয়ায় সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।
দুই পৃষ্ঠার লিফলেটের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের করোনাভাইরাস সম্পর্কিত নির্দেশনা এবং অপর পৃষ্ঠায় বাংলাদেশ দূতাবাসের বিজ্ঞপ্তি রয়েছে। লিফলেটে প্রবাসীদের করোনাভাইরাস থেকে নিজেকে রক্ষায় উপায়ের বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে।
লিফলেটের শেষের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হলো- অহেতুক ভয় না পেয়ে স্বাভাবিক কাজকর্ম ও জীবনযাপন চালিয়ে যান। করোনাভাইরাস সম্পর্কিত করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়ে সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, জনশক্তি মন্ত্রণালয় ও সরকারি সংশ্লিষ্ট সংস্থার নির্দেশনা মেনে চলুন।
বিভিন্ন ধরনের গুজব ও অসমর্থিত সূত্রের খবরে আতঙ্কিত হয়ে সিঙ্গাপুরের কর্মস্থল ছেড়ে বাংলাদেশে চলে গিয়ে নিজের ভবিষ্যৎ বিপন্ন করবেন না। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা ব্যবস্থা যথেষ্ট উন্নত। তাছাড়া বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কিংবা বাংলাদেশ সরকারের অন্য কোনো সংস্থা কর্তক সিঙ্গাপুর থেকে প্রবাসী কর্মী দেশে ফেরত যাওয়ার কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। এ ধরনের কর্মকাণ্ড সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশী কর্মীদের সুনাম ক্ষুণ্ন করতে পারে, যা ভবিষ্যতে শ্রম বাজারে প্রভাব ফেলবে।
দূতাবাসের এই উদ্যোগকে অনেকেই স্বাগত জানিয়েছে। আহাদ নামের এক প্রবাসী বলেন, আমরা খুব আতঙ্কে ছিলাম। দূতাবাস থেকে দেয়া এই লিফলেট আমাদের আতঙ্ক কিছুটা হলেও দূর করেছে। দূতাবাসের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। আশা করি দূতাবাস প্রবাসীদের সচেতনতায় আরও বেশি কাজ করবে।
লিফলেট বিতরণ সম্পর্কে দূতাবাসের কাউন্সেলর (শ্রম ও কল্যাণ উইং) মো. আতাউর রহমান বলেন, আমরা প্রথম থেকেই করোনাভাইরাস নিয়ে সচেতনতামূলক বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি। এর মধ্যে সিঙ্গাপুর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচেতনতামূলক ভিডিও বাংলায় আমাদের ফেসবুক পেইজে আপলোড করেছি। এছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সচেতনতামূলক বিজ্ঞপ্তি বাংলা অনুবাদ দূতাবাসের ফেসবুক পেইজ, দূতাবাসের ওয়েবসাইট, দূতাবাসের নোটিশ বোর্ড, ডরমিটরির নোটিশ বোর্ড ও মাইগ্রান্ট ওয়ার্কার্স সেন্টারের কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন ডরমিটরিতে প্রবাসীদের বিফ্রিং করে করোনাভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতার পাশাপাশি বিভিন্ন সচেতনতামূলক বিবৃতি দেয়া হচ্ছে। সর্বশেষ বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ও দূতাবাস কর্তৃক বিজ্ঞপ্তি প্রত্যেকটি ডরমিটরিতে গিয়ে প্রবাসীদের হাতে হাতে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। আজ পর্যন্ত ২৫টি ডরমিটরিতে লিফলেট বিতরণ শেষ হয়েছে। সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ অব্যাহত থাকবে এবং পাশাপাশি প্রবাসীদের মাঝে বিনামূল্যে হ্যান্ডওয়াশ বিতরণ করা হবে।