দেশের খবর

প্রবাসী কর্মী নিয়োগে যেসব পরিবর্তন এনেছে মালয়েশিয়া !!

মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে। যেমন রিক্রটিং এজেন্সিগুলোকে অটো সিলেক্ট করা এবং ডিমান্ড লেটার ও পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দেয়া। ফলে আগে থেকেই এজেন্সিগুলোর ভিসা সংগ্রহ করার প্রয়োজন হবে না। এতে অভিবাসন খরচ কমে যাবে বলে এজেন্সিগুলো দাবি।

এ কারণে সকল এজেন্সি কর্মী পাঠানোর জন্য আন্দোলন করছে। আইনত কোনো অপরাধ ছাড়া লাইসেন্সপ্রাপ্ত এজেন্সিকে কর্মী প্রেরণ করা থেকে বিরত রাখার সুযোগ নেই। তবে অবশ্যই মালয়েশিয়া সরকারের নিয়ম-কানুনের মধ্যে হতে হবে। বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে মালয়েশিয়া নিশ্চয়তা চায় যে রিক্রটিং এজেন্সি উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকে বর্ণিত দায় দায়িত্ব পালন করবে।বাংলাদেশি নাগরিকদের বৈদেশিক কর্মসংস্থানের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে রয়েছে বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সি। বৈধ এজেন্সির পাশাপাশি দেশে এবং বিদেশে রয়েছে দালাল, মিডলম্যান বা মধ্যস্বত্বভোগী।

বাংলাদেশ সরকার অভিবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান আইন, বিধি ইত্যাদি করেছে যা প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং অধীন দফতর বাস্তবায়ন করে। আইন অনুযায়ী রিক্রটিং এজেন্সির মাধ্যমেই বৈদেশিক কর্মসংস্থান হতে হবে। এছাড়াও উচ্চতর পেশার ক্ষেত্রে ব্যক্তি নিজেই ভিসা সংগ্রহ করে। বৈধ বা অবৈধ যে উপায়ে যাক না কেন সুনির্দিষ্ট নিয়ম-কানুনের মধ্য দিয়েই যেতে হয় এবং সে সব নিয়ম-কানুন পরিপালনের ক্ষেত্রে অজ্ঞতা থাকায় দালালের কাছে যেতে হয় একজন অভিবাসন প্রত্যাশীর।

অর্থাৎ কোন দেশে, কোন কাজের জন্য, বেতন ও সুযোগ-সুবিধা কেমন, নিজ দেশে পাসপোর্ট, মেডিকেল, ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স, ভিসা নেয়া, বিমান টিকিট এবং বিমানবন্দরে যাওয়া ইত্যাদি সম্পর্কে দালালের কাছে থেকেই খুব সহজে ধারণা পায়। পাচারকারীদের কাছে থেকেও লোভনীয় ধারণা পায়। এভাবেই অধিকাংশ অভিবাসন প্রত্যাশী সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।

এই সেবা ঘাটতি থেকেই দালাল বা মধ্যস্বত্বভোগী বা পাচারকারীর আবির্ভাব হয়েছে। এই সার্ভিসের স্বীকৃতি দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, তাহলে প্রতারণা প্রতিরোধ হবে। অভিবাসন প্রত্যাশীর খরচ ব্যাপক প্রশ্ন হিসেবে দেখা দিয়েছে। ধার-দেনা করে সংগ্রহ করা বিপুল পরিমাণ টাকা তোলার জন্যই সে অভিবাসী বিদেশে অবস্থান করে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থার এক রিপোর্টে দেখা গেছে, যে অভিবাসী যা আয় করে সব ধার-দেনা শোধ এবং পরিবারের লোকজন খেয়ে ফেলে, সঞ্চয় থাকে না বা আয় বর্ধক কাজে লাগানো হয় না। অভিবাসন ব্যয় যৌক্তিক করার দাবি শুধু আন্তর্জাতিক সংস্থা বা দেশীয় এনজিও বা অভিবাসীর নয় এটি সরকারের অন্যতম এজেন্ডাও বটে। অভিবাসীদের নিয়ে গবেষণা করছেন বাংলা ভিশনের অভিবাসন বিষয়ক সাংবাদিক মিরাজ হোসেন গাজী।তিনি বলেন, ‘বাস্তবতা হচ্ছে, একজন অভিবাসী চাকরি নিয়েই বিদেশে আসেন। কিন্তু তার এ অর্থ বিনিয়োগের রিটার্ন বড়ই করুণ।’

বিদেশে যাওয়ার পরে-বেতন নাই, যে কাজ দেয়ার কথা সে কাজ দেয়নি, থাকার দজায়গা ভালো না, মালিক ভালো না, এখন ধারের টাকা শোধ হয়নি ইত্যাদি অভিযোগগুলো শোনা যায়। এ কারণে কর্মস্থল থেকে পালিয়ে যায়, অবৈধ হয় এবং জেল জরিমানা শেষে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয় সংশ্লিষ্ট দেশ। অবস্থানকারী দেশে এমন কিছু স্বদেশি থাকেন যারা চাকরি ও ভিসার ব্যবস্থা করে থাকেন। এতে কিছুটা হলেও আয়ের উপায় হয়। এসবই ঘটে বিদেশে যাত্রা করার আগের অবস্থা ও আবেগের ফলে।

বৈদেশিক কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে রিসিভিং কান্ট্রি অর্থাৎ যে দেশ চাকরি দেয় সে দেশের নিয়ম-কানুন এবং চাহিদা অন্যতম বিষয়। বাংলাদেশের ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিংয়ে বিদেশে চাকরির সুযোগ সম্পর্কে হালনাগাদ তথ্য আছে এবং তাদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো সে অনুযায়ী তৈরি করে।

সরকারও একই তথ্যের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তি করে। যার উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের রিক্রটিং এজেন্সি লোক প্রেরণ করে। রিক্রটিং এজেন্সিগুলো নিয়োগকারী দেশের শ্রম বাজারের হালহকিকত সবচেয়ে ভালো জানে কারণ তাদের সে বাজারের সাথেই প্রতিযোগিতা করতে হয়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ভিসা ট্রেডিং হয়। নিয়োগকারীর তথা ভিসা স্পন্সর প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছ থেকে ভিসা ক্রয় না করলে বাংলাদেশ থেকে সে ভিসায় কাউকে প্রেরণ করা যায় না। এই ট্রেডিং পদ্ধতিতে বাংলাদেশের রিক্রটিং এজেন্সিগুলো অভিবাসন প্রত্যাশীর জন্য ভিসা যোগাড় করে।

এদিকে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে ২০০৬/০৭ সালের ঘটনার পর থেকে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের (আউটসোর্স) নামে প্রকৃত চাহিদার অতিরিক্ত লোক আনা হয় বাংলাদেশ থেকে এবং চাকরি নেই, থাকা নেই, খাওয়া নাই, অর্থাৎ অমানবিক পরিস্থিতির উদ্ভব হলে মালয়েশিয়া বাংলাদেশ থেকে লোক নিয়োগ বন্ধ করে।

মালয়েশিয়া ২০১৬ সালে বাংলাদেশকে লেবার সোর্স কান্ট্রির স্বীকৃতি দেয়। জি-টু-জি চুক্তির মাধ্যমে সরাসরি মালয়েশিয়া নিয়োগ দেয় শুধু প্লান্টেশন সেক্টরে। পরবর্তীতে জি-টু-জি প্লাস অর্থাৎ বাংলাদেশ প্রান্তে বাংলাদেশ রিক্রটিং এজেন্সি সুযোগ দেয়া হয়। মালয়েশিয়া ১০টি এজেন্সিকে নির্ধারণ করে ১৩শ এজেন্সির মধ্য থেকে।

বিএমইটির তথ্যে পাওয়ার অ্যাটর্নী এবং ডিমান্ড লেটার ১০টি এজেন্সির নামে হলেও ৩০৮টি রিক্রটিং এজেন্সি মালয়েশিয়ায় লোক প্রেরণ করেছে। কারণ মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজারের প্রকৃতি অনুযায়ী রিক্রটিং এজেন্সি অনেক আগেই নিয়োগকারী বা প্রতিনিধির কাছ থেকে আর্থিক মূল্য দিয়ে ভিসা সংগ্রহ করেছিল। পাওয়ার অব অ্যাটর্নি ও ডিমান্ড লেটার ১০টি এজেন্সি পেয়েছে এবং বাকি এজেন্সি এই ১০টির মাধ্যমেই লোক প্রেরণ করেছে। এই সিদ্ধান্ত ছিল বিদ্যমান শ্রম মার্কেটের প্রকৃতির বিপরীত।

ফলে খরচ বেড়েছে এবং একই লাইসেন্সধারী হওয়া সত্ত্বেও এজেন্সিগুলো অবমূল্যায়িত হয়েছে বলে মনে করে। রিক্রটিং এজেন্সিগুলো এর পুনরাবৃত্তি চায় না।উল্লেখ্য, এই প্রক্রিয়াকে মনোপলি হিসেবে চিহ্নিত করে বাংলাদেশের হাইকোর্টে রিট হয় এবং মাহাথির সরকার লোক নিয়োগ বন্ধ করে।

বর্তমানে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে বন্ধ শ্রমবাজার খোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো সিন্ডিকেট বিরোধী আন্দোলন করছে। আলাপ করে জানা গেছে, এজেন্সিরা দুর্নীতিমুক্তভাবে যৌক্তিক খরচে মালয়েশিয়ায় লোক পাঠাতে চায়। প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমেদ বলেছেন, ‘ক্ষতিকর হবে এমন ধরনের সিন্ডিকেট করবেন না এবং মালয়েশিয়ার চাহিদা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।’

মালয়েশিয়ার শ্রম বাজারের প্রচলিত পদ্ধতি অনুযায়ী ভিসা সংগ্রহ করেছে, নিয়োগকর্তার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে, আগে থেকেই লোক সাপ্লাই দেয়া বাংলাদেশের রিক্রটিং এজেন্সিগুলো বিনিয়োগ ও কমিটমেন্ট নিয়ে শঙ্কিত। রিক্রটিং এজেন্সির এ ধরনের স্বার্থকে সরকার রক্ষা করবে বলে আশা করে।তবে নির্দিষ্ট সংখ্যক এজেন্সির মাধ্যমে লোক নিয়োগের ফলে ভালো দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, ফলে কাজ না পাওয়া বা প্রতারিত হওয়ার নজির নাই। এ ধরনের ব্যবস্থাপনা এজেন্সিগুলোরই সুনাম বয়ে আনে।

বাংলাদেশ সরকার রিক্রটিং এজেন্সিগুলোর পারফরমেন্স মূল্যায়ন করে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করার বিধি করেছে। ফলে মালয়েশিয়া বা অন্যান্য দেশ সহজেই রিক্রটিং এজেন্সি পছন্দ করে নিতে পারবে বা অভিবাসন প্রত্যাশীরা চিনে নিতে পারবে। অভিবাসন প্রত্যাশীদের ডাটা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার ফলে নিয়োগকারীরা কর্মী বাছাই করে নিতে পারবে।জানা গেছে, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অভিবাসন খরচ শোধ করার উপায় চালুর জন্য বায়রা থেকে সরকারের নিকট প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বায়রা বীমা চালু করেছে। রিক্রটিং এজেন্সিগুলোর এ ধরনের উদ্যোগ অভিবাসীদের কল্যাণ বয়ে আনবে।

 

J A Suhag

Local News: J A Suhag writes Local News articles for industries that want to see their Google search rankings surge. His articles have appeared in a number of sites. His articles focus on enlightening with informative Services sector needs. he holds the degree of Masters in Business and Marketing. Before he started writing, he experimented with various professions: computer programming, assistant marker, Digital marketing, and others. But his favorite job is writing that he is now doing full-time. Address: 44/8 - North Dhanmondi, Dhaka Email: [email protected]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button