প্রবাসী যুবকদের সর্বস্বান্ত করাই ছিলো নোয়াখালীর এই দুই তরুণী কাজ !!
সামাজিক যোগাযোগ বিভিন্ন মাধ্যমে ফাঁদ পেতে প্রবাসীদের সর্বস্বান্ত করার অভিযোগে নোয়াখালী দুই তরুণীসহ তাদের সহযোগী বিকাশ এজেন্টকে নোয়াখালীর সিআইডি পুলিশ আটক করেছে।
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার প্রতারিত ও ভুক্তভোগী কুয়েত প্রবাসী সাইফুল ইসলামের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শনিবার রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন নোয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী বেগমগঞ্জ উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের খানপুর গ্রামের জিল্লুর রহমানের মেয়ে মারজাহান আক্তার (১৯), একই কলেজের ছাত্রী সেনবাগ উপজেলার কেশারপাড় ইউনিয়নের লেদুয়া গ্রামের গোলাম মাওলার মেয়ে শাহজাদী মজুমদার (২০) এবং তাদের সহযোগী বিকাশ এজেন্টের মালিক নোয়াখালী পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের হোসেন আহম্মদের ছেলে মোশারফ হোসেন মনু (৩০)।
অভিযুক্তদের আটকের পর তাদের ব্যবহৃত বিকাশ অ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ টাকা লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কুয়েত প্রবাসী সাইফুল ইসলামকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই দুই তরুণী রূপের জালে ফেলে কয়েক দফায় প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
একই পদ্ধতিতে কোম্পানীগঞ্জের মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী তানভীর হোসেন, মোস্তফা চৌধুরী নামে দুই প্রবাসী যুবকের কাছ থেকেও কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় এ চক্রটি।
এ ছাড়াও জেলার বেশ কয়েকজন যুবক এ বখাটে তরুণীচক্রের যৌনতার ফাঁদে পড়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে।
নোয়াখালী জেলা সিআইডি পুলিশের এসআই শাহ আলম চক্রটির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নোয়াখালীতে একাধিক সক্রিয় নারী প্রতারকচক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইমো, হোয়াটসআপ, ম্যাসেঞ্জারে ইউরোপ প্রবাসী কন্যা সেজে মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী যুবকদের বিয়ে করে ইউরোপে নেয়ার প্রলোভনে ফেলে প্রতারণা করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।
তিনি বলেন, চক্রটি প্রথমে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইমো, হোয়াটসআপ, ম্যাসেঞ্জারে আপত্তিকর আচরণ করে তা কৌশলে ধারণ করে নেয়। পরে এ সব ছবি ভিডিও অনলাইনে ফাঁস করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে হুমকি-ধামকি দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।
এ ছাড়াও গরিব অসহায় লোকজনকে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্তের কথা বলে মানবিক আবেদন দেখিয়ে অসুস্থ রোগীদের বানোয়াট ছবি প্রদর্শন করে সাহায্যের নামে টাকা হাতিয়ে নেয়।
এ ধরনের প্রতারণার উদ্দেশ্যে চক্রটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকগুলো আইডি ব্যবহার করে। টাকা হাতিয়ে নেয়ার পর প্রতারকচক্রটি আইডিগুলো পুরোপুরি নষ্ট করে দেয়।
এ বিষয়ে একটি গোয়েন্দা সংস্থাকে বাহরাইন প্রবাসী কবির হোসেন প্রবাস থেকে ফোনে জানান, গরিব অসুস্থ লোককে সাহায্যের কথা বলে তার কাছ থেকে ১৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। সম্প্রতি ইমোতে তাকে ব্ল্যাকমেইল করে মোটাঅংকের টাকা দাবি করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
এ সব তথ্য পাওয়া গেছে নোয়াখালীর পুলিশ ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) থেকে।