প্রবাসী স্বামীর সাথে ফোনে তর্ক, ৪ বছরের শিশুপুত্রকে গলা কেটে হত্যা!
তার প্রবাসী স্বামীর সঙ্গে ফোনে তর্ক -বিতর্কের পর মা ঘুমন্ত অবস্থায় ছুরি দিয়ে গলা কেটে তার শিশু পুত্রকে হত্যা করে। এরপর তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
সোমবার দুপুর ১২ টার দিকে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের লাহারকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
শিশুটির নাম অয়ন রহমান (৪)। হত্যাকারীর মায়ের নাম সাবিনা। তিনি সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের তেওয়ারীগঞ্জ গ্রামের সৌদি প্রবাসী আজগর রহমানের স্ত্রী।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হত্যাকারীর মা সাবিনাকে দুপুর ২ টার দিকে গ্রেফতার করে পুলিশ হেফাজতে নেয়। একই সঙ্গে পুলিশ শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
পুলিশ ও আত্মীয়দের মতে, সাবিনা শিশু আয়ানসহ যৌথ পরিবার নিয়ে লাহারকান্দি গ্রামে হাফিজ খানের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। সাম্প্রতিক সময়ে তাদের পরিবারে আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে। স্বামী -স্ত্রীর মধ্যেও ঝগড়া শুরু হয়। গত রোববার সন্ধ্যায় সাবিনা ও তার স্বামীর মোবাইল ফোনে তর্ক হয়। পরে, যথারীতি, সে আয়ানের সাথে তার রুমে গেল এবং দরজা বন্ধ করল কিছুক্ষণ পর, সেই ঘর থেকে একটা বিকট আওয়াজ এল। এরপর পরিবারের সদস্যরা দ্রুত দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখেন সাবিনা সিলিং ফ্যানের সাথে উড়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছে। তার শরীরে রক্ত দিয়ে তাকে উদ্ধার করা হয়। তারা তৎক্ষণাৎ ইয়ানের লাশ বিছানায় পড়ে থাকতে দেখে। পাশে একটা ধারালো পাত্র পড়ে ছিল রক্তে ঢাকা।
সাবিনার শ্বশুর হুমায়ুন কবির ও শ্যালক আবির জানান, সাবিনার স্বামী আজগর সৌদিতে ছিলেন। সন্ধ্যায় তাদের মোবাইল ফোনে তর্ক হয় সাবিনা ঝগড়ার কারণে অনেক বেশি রেগে যায়। তারা তাকে শান্ত করার চেষ্টা করে। পরে, যথারীতি, তিনি তার রুমে যান, দরজা বন্ধ করেন, অয়নকে হত্যা করেন এবং আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মহব্বত আলী জানান, তিনি সাবিনাসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি (সাবিনা) বলেন, তর্কের এক পর্যায়ে আজগর তাকে ‘তালাক’ দিয়েছিল। বিষয়টি সহ্য করতে না পেরে তিনি তার ছেলেকে হত্যা করেন এবং তারপর আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন জানান, হত্যার ঘটনায় গৃহবধূকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।