বাংলাদেশসহ ১০ দেশের নাগরিকদের কুয়েত প্রবেশে করোনামুক্তির সনদ লাগবে না !!
বাংলাদেশসহ ১০ দেশের নাগরিকদের কুয়েত প্রবেশে করোনামুক্তির সনদের বাধ্যবাধকতা তুলে নিয়েছে দেশটির মন্ত্রিসভা। গত মঙ্গলবার কড়াকড়ি আরোপের পর কয়েকটি দেশের আপত্তির কারণে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহ আল খালেদ আল সাবাহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।দেশটির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, মন্ত্রিসভার বৈঠকে জানানো হয়েছে- এসব দেশে থেকে আগত কর্মীদের ‘বিকল্প ব্যবস্থায়’ প্রমাণ দিতে হবে যে, তারা করোনাভাইরাসমুক্ত।
এর আগে গত মঙ্গলবার (৩ মার্চ) বাংলাদেশসহ ১০ দেশের নাগরিকদের কুয়েত প্রবেশের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করে দেশটির সরকার।বাংলাদেশ ছাড়াও ফিলিপাইন, ভারত, শ্রীলঙ্কা, মিশর, সিরিয়া, আজারবাইজান, তুরস্ক, জর্জিয়া ও লেবাননের নাগরিকদের ওপর ৮ মার্চ থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।
ওইদিন কুয়েতের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানায়, এই ১০ দেশের নাগরিকরা কুয়েত দূতাবাসের দেয়া সনদ দেখাতে পারলে কেবল তাদের সে দেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হবে। সেই সনদে লেখা থাকবে ‘ওই যাত্রী করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত’।
এর পরদিন বুধবার (৪ মার্চ) কুয়েতের বেসামরিক বিমান চলাচল এক টুইট বার্তায় জানায়, এ স্বাস্থ্যসনদ অবশ্যই কুয়েত দূতাবাস থেকে অনুমোদিত হতে হবে। উল্লেখিত দেশের মধ্যে যেসব দেশে কুয়েতের দূতাবাস নেই, সেসব দেশের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রত্যায়িত সনদ থাকতে হবে। অন্যথায় নাগরিককে ফেরত পাঠানো হবে।
কুয়েতের বেসামরিক বিমান চলাচল আরও জানায়, নির্দেশ অমান্য করা কোনো নাগরিককে ফেরত পাঠাতে অর্থ গুনবে না কুয়েত সরকার। নিজ খরচে তাকে ফিরে যেতে হবে। পাশাপাশি নির্দেশ অমান্য করার কারণে বহনকারী বিমান সংস্থাকে জরিমানা করা হবে।
মধ্যপ্রাচের দেশগুলোর মধ্যে ইরানের পর কুয়েতেই সবচেয়ে বেশি মানুষ নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৬ জনে।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে করোনাভাইরাস শনাক্তের পর এই কয়েক মাসে বিশ্বের ৮০টিরও বেশি দেশে আঘাত হেনেছে। শুধুমাত্র চীনের মূল ভূখণ্ডেই আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৪৩০ এবং মৃত্যু হয়েছে তিন হাজার ১২ জনের। চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা দক্ষিণ কোরিয়ায়। সেখানে এখন পর্যন্ত পাঁচ হাজার ৭৬৬ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৩৫ জন।
চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ইতালিতে। সেখানে এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা তিন হাজার ৮৯ এবং মৃত্যু হয়েছে ১০৭ জনের। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানেও এই ভাইরাসের প্রকোপ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানে এখন পর্যন্ত দুই হাজার ৯২২ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং ৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
জাপানে নোঙর করা প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসের ৭০৬ যাত্রী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৬ জন। অপরদিকে জাপানের বিভিন্ন স্থানে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩১ এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। ফ্রান্সে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২৮৫ এবং মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। জার্মানিতে এখন পর্যন্ত ২৬২ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। স্পেনে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২২৮ এবং মৃত্যু হয়েছে ২ জনের।
যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত ১৫৯ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ১১ জন, সিঙ্গাপুরে আক্রান্তের সংখ্যা ১১২, হংকংয়ে ১০৩ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ২ জন, সুইজারল্যান্ডে আক্রান্তের সংখ্যা ৯৩, যুক্তরাজ্যে ৮৭, নরওয়েতে ৫৯, কুয়েতে ৫৬, বাহরাইনে ৫২, সুইডেনে ৫২, অস্ট্রেলিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫০, মৃত্যু ২, মালয়েশিয়ায় আক্রান্ত ৫০, থাইল্যান্ডে ৪৩ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং ১ জন মারা গেছে।
তাইওয়ানে আক্রান্তের সংখ্যা ৪২ এবং মৃত্য ১, নেদারল্যান্ডসে আক্রান্ত ৩৮, ইরাকে আক্রান্ত ৩৫ এবং মৃত্যু ২, কানাডায় আক্রান্ত ৩৪, অস্ট্রিয়ায় ২৯, ভারতে ২৯, আরব আমিরাতে ২৮, আইসল্যান্ডে ২৬, বেলজিয়ামে ২৩, আলজেরিয়ায় ১৭, সান মেরিনোতে আক্রান্ত ১৬ এবং মৃত্যু ১, ভিয়েতনামে আক্রান্ত ১৬, ডেনমার্কে ১৫ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
ইসরায়েলে আক্রান্ত ১৫, লেবাননে ১৫, ওমানে ১৫, ম্যাকাউতে ১০, ক্রোয়েশিয়ায় ১০, ইকুয়েডরে ১০, গ্রিসে ৯, কাতারে ৮, ফিনল্যান্ডে ৭, বেলারুসে ৬, আয়ারল্যান্ডে ৬, মেক্সিকোতে ৬, পর্তুগালে ৬, রোমানিয়ায় ৬, পাকিস্তানে ৫, সেনেগালে ৪, ফিলিপাইনে আক্রান্ত ৩ এবং মৃত্যু ১, আজারবাইজানে আক্রান্ত ৩, ব্রাজিলে ৩, জর্জিয়ায় ৩, নিউজিল্যান্ডে ৩, রাশিয়ায় ৩ এবং চিলিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩।
মিসরে আক্রান্ত ২, এস্তোনিয়ায় ২, ইন্দোনেশিয়ায় ২, সৌদি আরবে ২, হাঙ্গেরিতে ২, আফগানিস্তানে ১, আন্দোরে ১, আর্মেনিয়ায় ১, কম্বোডিয়ায় ১, ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রে ১, জর্ডানে ১, লাটভিয়ায় ১, লিথুনিয়ায় ১, লুক্সেমবার্গে ১, মোনাকোতে ১, মরক্কোতে ১, নেপালে ১, নাইজেরিয়ায় ১, উত্তর মেসিডোনিয়ায় ১, সান মেরিনোতে ১, সৌদি আরবে ১, শ্রীলঙ্কায় ১, তিউনিসিয়ায় ১ এবং ইউক্রেনে ১ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।