বিক্ষোভ চলা অবস্থায় নামাজ আদায়, হাতে হাত রেখে প্রতিরক্ষা বলয় মেয়েদের !!
ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাসের পর থেকেই ফুঁসের উঠেছে দেশটির সাধারণ মানুষ। সরকারপক্ষ এই সহিংসতার পেছনে মুসলিমদের দায়ী করছে। এরই সুযোগ উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের অনেকে। ফেজটুপি আর লুঙ্গি পরে মুসলমানের বেশ ধরে সংহিংসতার আগুনে ঘি ঢালছে তারা।
চলমান নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ চলা অবস্থায় নামাজ আদায় শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় তাদের পুলিশের হাত থেকে রক্ষা করতে একদল মেয়ে হাতে হাত রেখে মানব প্রাচীর তৈরি করেন। বৃহস্পতিবার মুম্বাইয়ের আগস্ট ক্রান্তি ময়দান মাঠেই নামাজ আদায় শুরু করেন তারা। এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ছবিতে দেখা গেছে বোরখা এবং হিজাব পড়া কয়েকজন শিক্ষার্থী একজন আরেকজনের হাতে হাত রেখে একটি প্রতিরক্ষা বলয় তৈরি করেছেন। প্রতিরক্ষা বলয়ের ঠিক মাঝখানে নামাজ আদায় করছেন আন্দোলনকারীরা। এমন ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়ে যায়। মানবচেইন তৈরি করায় প্রশংসায় ভাসছেন ওই শিক্ষার্থীরা।
মো. হামিদুল হক শরীফ ছবি দু’টি পোস্ট করে লিখেছেন, কি সুন্দর দৃশ্য! গতকাল এনআরসি বিরোধী আন্দোলনে মুম্বাইয়ে মেয়েরা এভাবেই হাত দিয়ে ব্যারিকেড দিয়ে ছেলেদেরকে প্রটেক্ট করে যখন তারা মাঠেই নামাজ পড়তেছিলো।
ইউ কে মণ্ডল নামে একজন লিখেছেন, সময় এখন চোখের জল ফেলার জন্য নয়, চোয়াল শক্ত করে চোখে চোখ রেখে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা। এনআরসির বিরুদ্ধে গর্জে ওঠার, ডিটেনশন ক্যাম্পের লৌহ কপাট ভেঙ্গে নাগরিকদের ছাড়িয়ে আনার। আমার বোনদের সাধুবাদ জানাই।
মো. নুরনবী সেলিম লিখেছেন, সব সম্পদ সৃষ্টির মালিকের ক্ষমতার লোভে রাষ্ট্রের মালিক হওয়া যায় কিন্তু নিজে তো থাকা সম্ভব হয় না একটু চিন্তা করলে মানুষকে কষ্ট না দিয়ে থাকার সুযোগ করে দেওয়া যায়। সাবাস বোন। তোমাদের দেখে গর্ব হচ্ছে।
এদিকে বৃহস্পতিবারও রাজধানী দিল্লিসহ দেশটির দশ রাজ্যের ১৩টি শহরে হয়েছে বিক্ষোভ। এছাড়া কয়েকটি থানায় আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে তিনজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দু’জন মেঙ্গালুরুতে ও একজন লখনউয়ের বলে জানা গেছে।
সহিংসতা ঠেকাতে ভারতের বিভিন্ন যায়গায় কার্ফু জারি করা হয়েছে। এছাড়া ভারত জুড়ে প্রায় দেড় হাজার বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে। দিল্লিতে আটক হন সীতারাম ইয়েচুরি, ডি রাজা, নীলোৎপল বসু, বৃন্দা কারাট, যোগেন্দ্র যাদব, উমর খালিদের মতো নেতারা।