বেড়াতে এনে জিম্মি করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি !!
বান্দরবানের লামায় এক কিশোরকে বেড়াতে নিয়ে এসে জিম্মি করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে এক অপহরণকারীকে আটক ও অপহৃত কিশোরকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। অপহৃত কিশোর মোঃ মফিজুর রহমান (১৮) যশোর জেলার বেনাপোল থানার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ঘিবা হুজুর পাড়ার মৃত হবিবুর রহমান ও ফিরোজা খাতুনের ছেলে।
অপহরণকারী মোঃ আবু বক্কর ছিদ্দিক (২৭) লামা উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের মোহাম্মদ পাড়া গ্রামের মোঃ বাবুল এর ছেলে। আবু বক্কর ছিদ্দিকের বিরুদ্ধে পূর্বেও অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় সহ লোহাগাড়া ও লামা থানায় মাদকের মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।অপহৃত কিশোর মোঃ মফিজুর রহমান বলেন, বাড়িতে টিউবয়েল বসানো বিষয়ে ১৫ দিন তাদের বাড়িতে কাজ করেছিল মোঃ আবু বক্কর ছিদ্দিক। সে থেকে তার সাথে পরিচয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে, তাকে পাহাড় দেখানোর কথা বলে গত সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) যশোর থেকে যাত্রা করে মঙ্গলবার লামায় নিয়ে আসে আবু বক্কর ছিদ্দিক।
মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩দিন অপহরণকারী আবু বক্কর ছিদ্দিক লামা সদর ইউনিয়নের চিউনীমুখে তার খালা রহিমা বেগমের বাড়িতে তাকে রাখে মফিজুরকে। তারপর সেখান থেকে বের হয়ে গত ২দিন তাকে বিভিন্ন পাহাড়ে ঘোরায়। অবশেষে রোববার দুপুরে তাকে গজালিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ১০ মাইল নামক এলাকায় একটি পাহাড়ে হাত, পা বেঁধে মুক্তিপণের দাবিতে মফিজুর রহমানের বাড়িতে ফোন করতে বলে। প্রথমে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে, পরে ৩ লাখ টাকার বিনিময়ে মুক্তি দেয়ার শর্তে রাজি হয়। আজ সোমবার মুক্তিপণের টাকা নিয়ে আসার কথা ছিল। এদিকে আজ সোমবার সকাল ৮টার দিকে আবু বক্কর ছিদ্দিক অপহৃত কিশোরকে বেঁধে রেখে একটু অন্যত্র গেলে সুযোগ বুঝে পালিয়ে এসে ফাইতং ছিউবতলী বাজারে আলমগীরের চায়ের দোকানে আশ্রয় নেয় মফিজুর।
লামার ফাইতং ছিউবতলী বাজারের চা দোকানদার মোঃ আলমগীর বলেন, সকাল ৯টার দিকে অচেনা এই ছেলেটি (মোঃ মফিজুর রহমান) আমার কাছে এসে আশ্রয় কামনা করে ও খুব ক্ষুধা লেগেছে বলে খাবার চায়। আমি তাকে খেতে দিলে একটু পরে আবু বক্কর ছিদ্দিক তাকে ছিনিয়ে নিতে আমার দোকানে আসে। আমি বিষয়টি বাজারের ভিডিপির প্লাটুন কমান্ডার মোঃ মাহাবুব মিয়াকে জানাই।
ভিডিপির প্লাটুন কমান্ডার মোঃ মাহাবুব মিয়া জানান, আমি দ্রুত ভিডিপি সদস্যদের নিয়ে এসে অপহরণকারীকে আটক ও অপহৃত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে ভিডিপি অফিসে নিয়ে আসি এবং ফাইতং ফাঁড়ির পুলিশকে খবর দিই। পরে বেলা ১১টার দিকে ফাইতং ফাঁড়ির পুলিশের এএসআই নিক্কন চাকমা সঙ্গীয় পুলিশ নিয়ে এসে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে দুইজনকে নিয়ে যায়।
ফাইতং ফাঁড়ির পুলিশের এএসআই নিক্কন চাকমা বলেন, সরল বিশ্বাসে মোঃ মফিজুর রহমান যশোর থেকে আবু বক্কর ছিদ্দিকের সাথে বেড়াতে আসে। এখানে এনে তাকে জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। আমরা অপহৃত পরিবারকে খবর দিয়েছি। তারা আসছে। এদিকে অপহরণকারীকে আটক ও অপহৃত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে লামা থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, দুইজনই লামা থানায় আছে। ভিকটিমের পরিবারের লোকজন আসার পরে তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।