ভারতের নাগরিকত্ব আইনে ক্ষুব্ধ মুসলিম বিশ্ব, উদ্বেগে নয়াদিল্লি !!
কাশ্মীর ও এনআরসি ইস্যুতে গত কয়েক মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে ভারত তথা মোদি সরকারের সমালোচনা করে আসছে মালয়েশিয়া ও তুরস্কের মতো দেশগুলি। এ অবস্থাতেও অর্থনৈতিক স্বার্থেই নয়াদিল্লির পাশে ছিলো সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো আরব দেশগুলি।
কিন্তু সম্প্রতি ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (এসিসি) পাস হওয়ার পর সেই পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে গেছে, যা নিয়ে শঙ্কিত নয়াদিল্লি। বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার।
চলতি পাসে পাস হওয়া এই নতুন আইনে আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে আগত হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ ছয়টি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের শরণার্থীদের সে দেশের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে ওই তিন দেশ থেকে আগত মুসলিমরা এই সুবিধা পাবেন না। এই বৈষম্যমূলক আইনটি পাশ হওয়ার পর থেকেই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে গোটা ভারত।
এ অবস্থায় এসিসি ও এনআরসি নিয়ে মোদি সরকারের ওপর গোটা মুসলিম দুনিয়ারই ক্ষোভ বাড়ছে। ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছে তারা।
এক কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার বলছে, ‘বিষয়টি সরকারের কাছে আগামী দিনগুলিতে বড় চাপের কারণ হয়ে উঠতে পারে। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির কাছ থেকেও নেতিবাচক বার্তা পাচ্ছে ভারত।’
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ‘প্রসারিত সম্পর্ক’ যে অনেকটাই ধাক্কা খেতে চলেছে তা একের পর এক ঘটনায় স্পষ্ট। ঘরোয়া রাজনীতি ও কেন্দ্রীয় নীতি প্রণয়নের জন্য পররাষ্টনীতির প্রশ্নে কতটা সমঝোতা করা হবে, এখন সেটাই বড় চ্যালেঞ্জ সাউথ ব্লকের সামনে।
ভারত সরকারের কাছে সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হল, যে সুরে ও ভাষায় ৫৭টি মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন ওআইসি সমালোচনা করতে শুরু করেছে, তার প্রভাব সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত সম্পর্কে পড়তে পারে। এ অবস্থায় ফায়দা নিতে পারে প্রতিবেশী প্রতিদ্বন্ধী দেশ পাকিস্তান।
আনন্দবাজার জানায়, ‘দু’দিন আগেই ওআইসি-র পক্ষ থেকে বলা হয়, ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় কোণঠাসা হচ্ছে। গোটা প্রক্রিয়া এবং পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে উদ্বিগ্ন ওআইসি।
রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে ধর্মীয় বৈষম্যের বিরুদ্ধে যে যে সনদ রয়েছে, তার থেকে যদি ভারতে অন্য কিছু হয়, তা হলে তা গোটা অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক। মুসলিমদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য ভারত সরকারকে ওআইসি-র পক্ষ থেকে সরাসরি অনুরোধ করা হচ্ছে।’
অথচ এই ওআইসি সম্মেলনে গত বছরেই প্রথমবারের মতো ‘সম্মানিত অতিথি’হিসেবে ডাক পেয়েছিলো ভারত। যার প্রতিবাদে গতবার ওআসি সম্মেলন বয়কট করেছিলো পাকিস্তান। বিষয়টিকে তখন কূটনৈতিক বিজয় হিসেবে জোরেসোরে প্রচার করেছিলো নয়াদিল্লি।