ভারতে এক গ্রামের ৩ হাজার জনের ইসলাম ধর্ম গ্রহণের ঘোষণা !!
এবার ভারতের তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটুরের কাছের একটি গ্রামের ৩ হাজারেরও বেশি দলিত জাতিগত বৈষ’ম্যের অভিযোগ তুলে হিন্দু ধর্ম ত্যা’গ করে মুসলিম হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে। অঞ্চলটি হিন্দু অধ্যুষিত হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে তাদের সাথে সামাজিক বৈ’ষম্যমূলক আচরণ করা হয় বলে অভিযোগ ওই দলিত বাসিন্দাদের।
জানা যায়, এই ঘটনার সূত্রপাত একটি পাঁচিল ভে’ঙে ১৮ জন দলিতের মৃ’ত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে। চেন্নাই থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে নাদুর গ্রামের কাছে গত ২ ডিসেম্বর একটি দেয়াল প্ৰবল বৃষ্টির কারণে ভে’ঙে পড়ে। পাঁচিলের পাশেই ছিল দলিতদের বাস।
এদিকে পাঁচিল ভাঙার ফলে ১০ জন মহিলা ও দুজন শিশু সহ মোট ১৮ জন দলিত অধিবাসীদের মর্মান্তিক মৃ’ত্যু ঘটে। ঘটনার পরে পুলিশ ওই ভে’ঙে পড়া পাঁচিলের বাড়ির মালিক শিবসুমব্রমানিয়মকে গ্রেপ্তার করলেও পরে জামিনে মুক্তি পেয়ে যায় সে।
জানা যায়, উচ্চবর্ণের হিন্দুদের থেকে দলিতদের পৃথকভাবে বাস করতে বাধ্য করার জন্য ওই পাঁচিল তোলা হয়েছিলো বলে অভিযোগ দলিত বাসিন্দাদের। ১৫ ফুট লম্বা পাঁচিলটি কোনও রকম পিলার ছাড়াই নির্মিত হয়েছিল।এদিকে শিবসুমব্রমানিয়মের বিরুদ্ধে তফসিলি জাতি ও উপজাতির নি’র্যাতন প্রতিরোধ আইনের ধারা অনুযায়ী মামলা রুজু করার কথা বললেও পুলিশ তা এড়িয়ে যায় বলে অভিযোগ।
এদিকে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা ও শুধুমাত্র দলিত হওয়ার কারণে বৈ’ষম্য মূলক আচরণের জন্য ওই দলিত সম্প্রদায়ের মানুষেরা ঘোষণা করেছে যে আগামী ৫ জানুয়ারী ১৭ জন মৃ’তের পরিবারের সদস্য সহ মোট প্রায় ৩০০০ দলিত ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে চলেছেন।
এ ব্যাপারে দলিতদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইলাভেনিল বলেন, ‘যে ব্যক্তি এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য দায়ী তাকে ২০ দিনের মধ্যে জামিনে মুক্তি দিয়ে দেওয়া হলো। কিন্তু সংগঠনের সভাপতি নাগাই তিরুভল্লুয়ান গণতান্ত্রিক উপায়ে ন্যায় বিচার চাইতে গেলে তাকে আটক করা হয়।’
তাছাড়া বর্ণহিন্দুদের দ্বারা নিপী’ড়নে অতিষ্ঠ স্থানীয় দলিতরা। ইলাভেনিল বলেন, ‘নিপী’ড়ন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, আমাদেরকে কূপ থেকে পানি খেতে দেয় না। মন্দিরের ধারেকাছে যেতে দেয় না। রাস্তায় ধরে মারধর করে আবার মামলাও দেয়। আমাদেরকে বলা হয়েছে রাস্তায় যেন মোবাইল ফোনে কথা না বলি। কী ধরনের অমানবিক আচরণ এগুলো?’
এই ঘটনার মাধ্যমে তামিলনাড়ুর সামাজিক জাতিগত বৈ’ষম্যের চিত্রটি আরও প্রকট হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। সূত্র: দ্য প্রিন্ট, ওয়ান ইন্ডিয়া, টাইমস নাও।