ভোটার কার্ডে স্বামীর নাম দেওয়া ‘হাসপাতাল’ !!
ভারতের সর্বত্র সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বেশিরভাগ নাগরিকই ভোটার কার্ড বা আধার কার্ড সংরক্ষণ করেননি। যে অল্পসংখ্যক লোকের পরিচয়পত্র রয়েছে সেগুলোও ভুলে ভরা।নাম-ঠিকানা-বয়সের ভুলের কারণে উদ্বিগ্ন মুর্শিদাবাদের সীমান্ত লাগোয়া একের পর এক গ্রাম।
সংশোধনের জন্য রাত জেগেও অনেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। কোথাও পুরুষ নামের পাশে নারীর ঘোমটা টানা ছবি। কোথাও বা নারীর নামের উপরে পুরুষের ছবি।ডোমকলের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের উনজিলা বিবি ক্ষোভ উগরে দিলেন, ‘হাসপাতালে গেলে ওষুধ নেই, ডাক্তারের দেখা মেলে না। আর আমার স্বামীর নাম কিনা ডোমকল হসপিটাল!’
উনজিলার দাবি, এত দিন ভুল ছিল তার বিশ বছরের পুরোনো পাড়ার নাম। নতুন ভোটার তালিকায় সেটুকু সংশোধন হল বটে। তবে এবার নাম বিভ্রাটে স্বামীর পরিচয়টাই বদলে গেল। মতিউর শেখ রাতারাতি হয়ে গেলেন ডোমকল হাসপাতাল!
জলঙ্গির ভাদুরিয়া পাড়ার মমতাজ বিবিও নতুন ভোটার তালিকায় নিজের এবং মায়ের নাম দেখে আঁতকে উঠেছেন।সংশোধিত নতুন কার্ড আসার পর তার নাম দাঁড়িয়েছে, বীরেন্দ্রনাথ মণ্ডল খাতুন! আর ষাটোর্ধ্ব মা হয়েছেন মেঘনাদ মণ্ডল বিবি!হাইকোর্টে ঘন ঘন মামলা করার সুবাদে ইসলামপুরের মোল্লাডাঙার আশরাফ মণ্ডলের পাড়াপড়শি তাকে ‘হাইকোর্ট চাচা’ বলে চিনতেন। আধার কার্ড হাতে পেয়ে চমকে উঠেছেন তিনি। সেখানেও স্পষ্ট হরফে লেখা ‘হাইকোর্ট মণ্ডল!’
সবাই মরিয়া হয়ে নিজ নিজ নামে ফেরার জন্য এখানে সেখানে ছুটছেন।ডোমকলের মহকুমা শাসক সন্দীপ ঘোষ বলেন, আধার কার্ডের ব্যাপারে আমাদের তো করণীয় কিছু নেই। সংশোধন যেখানে হচ্ছে সেখানে গিয়েই ফর্ম ৮ পূরণ করে আবেদন করতে হবে।’
জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা ক্ষোভ জানালেন, অত্যন্ত নিম্নমানের অপারেটর দিয়ে ভোটার লিস্ট তৈরি করালে যা হয় তা-ই হয়েছে। এত মানুষের হয়রানির দায় এখন কে নেবে।