মধ্যরাতে ফরিদপুরে সেহরি নিয়ে ছুটছেন পুলিশ সদস্যরা !!
শতাধিক রোজাদার মানুষ রোজা রাখতে পারে সেই জন্য সেহরি নিয়ে মধ্যেরাতে ছুটেছেন ফরিদপুর জেলা পুলিশের সদস্যরা। জেলা শহরের তিনটি স্পটে তারা প্রায় শতাধিক রোজাদার মানুষের জন্য মধ্য রাতে রান্না করে সেই খাবার নিয়ে তাঁরা ছুটে চলছেন তাদের সেহরি খাওয়াতে। গত কয়েকদিন যাবত তারা নিয়ম মেনে এই দৃষ্ঠান্ত মূলক কাজটি করে যাচ্ছেন।
জানা যায়, ফরিদপুর পুলিশ সুপার মোঃ আলিমুজ্জামান এর নির্দেশে রির্জাভ অফিসার মোঃ আনোয়ার হোসেন তাঁর সহকর্মীদের নিয়ে এই কাজটি করছেন। বিষয়টি পুলিশ সদস্যরা খুব গোপনে চালিয়ে যাচ্ছিলেন উত্তরবঙ্গ থেকে আসা এই সব শ্রমিকদের জন্য। তাঁরা শহরের তিনটি স্পট মাইক্রোষ্টান্ড, নতুন বাসষ্টান্ড ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে থাকা বিভিন্নস্থান থেকে আসা শতাধিক অভুক্ত মানুষের জন্য কাজটি করছেন। এর আগে তারা জেলার নিম্মবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের জন্য খাদ্য সামগ্রীর ব্যবস্থা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এবার এই কাজটি এক অন্যন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো বলে মনে করা হচ্ছে।
অফিসার মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, গত কিছুদিন হলো আমরা খুব গোপন করে এইসব অভুক্ত মানুষের জন্য রাতে সেহরি নিয়ে আসি খাওয়ানোর জন্য। তাদের খাওয়া দাওয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত এখানেই থাকি আমরা। তিনি বলেন এসপি স্যারের নির্দেশে আমরা এই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। এই রোজার পুরো মাস ধরে এই কার্যক্রম আমরা চালিয়ে যাব। তারা এতোদিন ভোরে খেয়ে না খেয়ে রোজা রাখতো এটা স্যার জানার সাথে সাথে তিনি আমাদের নির্দেশ দেন আমাদের সেহরির সাথে তাদের জন্য সেহরির ব্যবস্থা করতে। সেই মোতাবেক কাজটি আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।
এ ব্যাপারে জানতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোঃ সাইফুজ্জামান এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, কদিন আগে আমাদের এসপি স্যারের কাছে একটি ফোন কল আসে খাবার সহায়তার জন্য। যে লোকটি ফোন করে তার বাড়ি বগুড়ার জয়পুর এলাকার। এরপর স্যার রির্জাভ অফিসারকে দায়িত্ব দেন খোঁজ নেওয়ার জন্য। এসময় তাদের জন্য দুটি ত্রাণ সমাগ্রীর প্যাকেট নিয়ে সেখানে গেলে তারা জানায় তাদের প্লেট বা রান্না করে খাওয়ার মতো কোন ব্যবস্থা নেই। এরপর থেকে আমরা প্লেট ও খাবার রান্না করে সেহরির পূর্ব মূহুর্তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে তো কোন সরকারী মানবিক সহায়তা আসে না। তবে আমাদের পুলিশ সদস্যরা তাদের মাসিক বেতন থেকে অর্থ সংগ্রহ করে কিছু কিছু করে সহযোগীতা করেছি। তিনি আরো বলেন, একটি ফান্ড তৈরী করে এ পর্যন্ত প্রায় ৭০০ লোকের মানবিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের কাছে ত্রাণের কোন ফান্ড না থাকলেও হতদরিদ্ররা অফিসে এসে ভিড় করে যাচ্ছে। আমাদের সাধ্য অনুযায়ী মানাবিক সহায়তার ফান্ড তৈরী করে সহযোগীতা করতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।