মুদি দোকানির এক মাসের বিদ্যুৎ বিল ৪৭ লাখ টাকা !!
মোফাজ্জল মিয়া একজন সাধারণ মুদির দোকানদার। নেত্রকোনা সদর উপজেলার দক্ষিণ বাজারে তার দোকানটি। এ দোকানের আয় দিয়েই কোনো রকমে চলে তার সংসার। কিন্তু গত মাস ডিসেম্বরে তার দোকানে ব্যবহৃত পল্লীবিদ্যুতের বিল এসেছে ৪৭ লাখ ২৭ হাজার ৬০৩ টাকা। এতে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। অবশ্য ভুতূরে এ বিলের বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে জানা যায় ডিসেম্বর মাসে এ ব্যবসায়ীর বিদ্যুৎ বিল এসেছে মাত্র ১০১৫ টাকা।
বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন মানুষের মুখে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। মাসুদুল করিম নামের একজন তার ফেসবুকে লিখেছেন ‘নেত্রকোনা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির এমন কাণ্ডে আমি হতবাক হয়েছি! নেত্রকোনা সদর উপজেলার দক্ষিণ বিশিউড়া বাজারের সামান্য মুদির দোকানদার মোফাজ্জল মিয়া। বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার পর থেকে সর্বনিম্ন এক হাজার থেকে সর্বোচ্চ দুই হাজার ৩০০ টাকা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিল আসতো। কিন্ত ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে তার বিদ্যুৎ বিল এসেছে ৪৭ লাখ ২৭ হাজার ৬০৩ টাকা।
তিনি আরও লিখেছেন, কতটুকু দায়িত্বহীনতা আর অজ্ঞতার ফলে এমনটা হয়েছে এটা ভাবা যায়? যদি এটি ভুলবশত হয়ে থাকে তাহলে দায়িত্বের এমন একটি জায়গা থেকে এত বড় ভুল মেনে নেয়ার মতো নয়। বিষয়টি গুরুতর। কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হোক।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মোফাজ্জল মিয়া জানান, আমি এ ছোট মুদির দোকানের সামান্য আয় দিয়েই চলি। বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার পর থেকেই সর্বনিম্ন এক হাজার থেকে সর্বোচ্চ দুই হাজার ৩০০ টাকা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিল আসতো। কিন্তু ২০১৯ সালের ডিসেম্বর বিদ্যুৎ বিল এসেছে ৪৭ লাখ ২৭ হাজার ৬০৩ টাকা।
তিনি আরও জানান, মাসুদুল করিমের ফেসবুকে লেখা পোস্টটি নেত্রকোনা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসে এবং তারা আবার আমার দোকানে এসে বিলটি সংশোধন করে দেন। এতে আমার প্রকৃত বিল এসেছে মাত্র এক হাজার ১৫ টাকা। তিনি বলেন, পল্লীবিদ্যুৎ মাঝে মধ্যেই এমন উদাসিনতার কাজ করে।
নেত্রকোনা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. মাহবুব আলী শুক্রবার রাত সাতটার দিকে মুঠোফোনে বলেন, এ বিষয়টি আমাদের ভুল হয়েছিল। হয়তো টাইপিং ভুলের জন্য এক হাজার ১৫ টাকার বদলে ৪৭ লাখ ২৭ হাজার ৬০৩ টাকার বিলের কাগজ গ্রাহকের কাছে চলে গিয়েছে। বিষয়টি আমাদের নজরে আসা মাত্রই গত বৃহস্পতিবার বিকেলে অফিসের লোক দিয়ে সংশোধিত বিলের কাগজ গ্রাহকের কাছে পাঠায়েছি। বিল সংক্রান্ত গাফলতির এ বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে বের করে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে।