মেট্রোরেলের চেয়ে কম খরচে ‘চলন্ত রাস্তা’, কমাবে যানজট-দূষণ !!
যানজট ও যানবাহনজনিত বায়ুদূষণ কমাবে ‘চলন্ত রাস্তা’। এ ধরনের পরিবহন ব্যবস্থা বাস্তবায়িত হলে সম্ভাবনার এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে বলে জানিয়েছেন চলচ্চিত্র পরিচালক ও মডেলটির উদ্ভাবক (চলন্ত রাস্তা) আবু সাইয়ীদ।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশের পরও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন পাইলট প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ না নেয়ায় হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আশা করি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবেন।
বৃহস্পতিবার মিরপুরে সাইনপুকুর অ্যাপার্টমেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।
আবু সাইয়ীদ বলেন, চলন্ত রাস্তা নিয়ে প্রথম কনসেপ্ট উপস্থাপন করা হয় ২০১৭ সালের ২২ আগস্ট বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে। বিষয়টি সরকারি পর্যায়ে আমলে নেয়া হয় ও বিভিন্ন দফতরে বৈঠক হয়। এই প্রকল্পের অগ্রগতি রয়েছে। কিন্তু যে ধরনের অগ্রগতি হওয়া উচিত ছিল, তেমনটা এখনো হয়নি। ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সড়ক পরিবহন ও জনপথ বিভাগসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ধারণাটি বিবেচনার জন্য পত্র দেই। সড়ক পরিবহন ও জনপথ বিভাগ আমার আবেদনটি বিবেচনায় আনে এবং বিআরটিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য নির্দেশ দেয়। এরপর বিআরটি, ডিটিএসএ, সড়ক পরিবহন ও জনপথ বিভাগ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সভা হয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ১৮ আগস্ট ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনকে একটি পাইলটিং প্রকল্প করার জন্য পত্র দেয়া হয়। দুর্ভাগ্যজনক সিটি কর্পোরেশন থেকে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।
তিনি বলেন, পাঁচটি বিষয় মাথায় রেখে চলন্ত রাস্তা ধারণাটি উপস্থাপন করা হয়েছে। সেগুলো হল- শহর ট্রাফিক জ্যামমুক্ত হবে, এই পদ্ধতি পরিবেশবান্ধব, জ্বালানি খরচ কম, পরিবহন খাতে বার্ষিক ব্যয় কমে আসবে, বাস্তবায়ন খরচ কম এবং সাধারণ কারিগরি দক্ষতায় বাস্তবায়ন সম্ভব।
মেট্রোরেলের কথা উল্লেখ করে আবু সাইয়ীদ বলেন, মেট্রোরেল প্রকল্পে ব্যয় অনেক বেশি। বিভিন্ন দেশের মেট্রোরেলের খরচ পর্যালোচনা করে দেখা যায় তাদের খরচ অনেক কম। মনোরেলের খরচ আরও কম। আমাদের দেশের বিবেচনায় ভাবতে হবে কোন ধরনের ট্রান্সপোর্টেশনে যাব। আর্থিক ও অন্য সব বিষয় বিবেচনায় আনতে হবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকারি পর্যায়ে সেভাবে করা হচ্ছে না। সরকারকেও ভাবতে হবে কীভাবে প্রকল্পগুলো হাতে নেবে।
তিনি আরও বলেন, চলন্ত রাস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে গড়ে প্রতি কিলোমিটার দুইশ’ কোটি টাকার মধ্যে হয়ে যাবে। যেখানে মেট্রোরেল প্রতি কিলোমিটার ১১শ’ কোটি টাকা খরচ করে তৈরি করা হচ্ছে। যে পরিবহন ব্যবস্থা আমাদের রয়েছে তার চেয়ে অনেক খরচ কম হবে ‘চলন্ত রাস্তা’ প্রকল্পে। চলন্ত রাস্তা শুধু এলিভেটেড পরিবহন না, এতে সুবিধা পাওয়া যাবে অনেক। পাশের লেনে হাঁটার ব্যবস্থা থাকবে, বাইসাইকেল লেন থাকবে। এই প্রকল্পে একই সঙ্গে অনেক সুবিধা পাওয়া যাবে।