মেয়ে বলেছিলেন, ‘মা আমারে বাঁচাও’ !!
‘রাইত তিনটার দিকে ট্রেনে একটা ধাক্কা লাগলো এরপর সব অন্ধকার। খালি চিল্লাচিল্লির আওয়াজ আর রক্ত আর রক্ত। আমি খালি পোলা মাইয়া গুলারে খুঁজতেছিলাম। পরে পাইলাম কিন্তু মাইয়াটা আধা মরা! কইলো মা আমারে বাঁচাও। এরপর আর কিচ্ছু মনে নাই। কারে কই নিয়া গেলো।’ বুধবার (১৩ নভেম্বর) বিকেল তিনটায় জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালের (পঙ্গু হাসপাতাল) বেডে শুয়ে বিলাপ করতে করতে অগোছালোভাবে কথাগুলো বলছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ফারজানা আক্তারের (১৬) মা রোজিনা বেগম (৪৫)।
কত জীবনপ্রদীপ অকালেই ঝরে যায়। ফারজানাও এমনই এক হতভাগ্য মেয়ে। পরিবারের সবাই মিলে চাঁদপুর থেকে সিলেটে গিয়েছিলেন খালাতো বোনের বিয়েতে। ফিরছিলেন উদয়ন এক্সপ্রেসে করে। লাকসাম নামার কথা ছিল তাদের। কিন্তু আর বেঁচে বাড়ি ফিরতে পারলেন না ফারজানা। বুধবার (১৩ নভেম্বর) চাঁদপুরে ফারজানাদের বাড়িতে চারদিক ছেয়ে আছে শোকের কালো ছায়া। ফারজানা ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা গেলেও তার পরিবারের অন্য সদস্যরা এখনও বেঁচে আছেন। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এরা হলেন-ফারজানার মা (৪০), ভাই হাসান বেপারী (২৮), নানি ফিরোজা বেগম (৭০), মামি শাহিদা বেগম (৪০), মামাতো বোন মিতু (১৭), ইলমা (৭) ও মামাতো ভাই জুবায়ের (৩)।
উল্লেখ্য, সোমবার রাত ৩টার দিকে কসবা উপজেলার মন্দবাগে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা ও সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ১৬ জন নিহত হন।