যা রুখতে গণআন্দোলনের ডাক মমতার !!
ভারতে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (এনআরসি) এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি)’র বিরুদ্ধে গণআন্দোলোনের ডাক দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী সোমবার থেকে কলকাতাসহ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে মিছিল হবে। ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ছাড়া সব রাজনৈতিক দল ও সংগঠনসহ সাধারণ মানুষকে এই গণআন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মমতা। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকা জানিয়েছে, সোমবার বেলা ১টায় আম্বেদকরের মূর্তির পাদদেশ থেকে মিছিল শুরু হয়ে শেষ হবে জোড়াসাঁকোতে। মঙ্গলবার মিছিল শুরু হবে দক্ষিণ কলকাতায় যাদবপুরের ৮বি বাসস্ট্যান্ড থেকে এবং শেষ হবে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে গিয়ে। বুধবারও হবে মিছিল।
শুক্রবার দিঘায় মমতা বলেন, কোনো এনআরসি নয়, কোনো সিএবি নয়। আইন পাস হলেও আমাদের সরকার তা কার্যকর করবে না। সবাইকে বলছি, ধর্ম-বর্ণ-জাতি নির্বিশেষে সবাই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে প্রতিবাদ করুন। সব রাজ্যে গণআন্দোলন করুন। বাংলাতেও গণআন্দোলন গড়ে তুলুন। মমতার কথায়, বার বার বোঝানোর চেষ্টা করেছি কেন্দ্রকে। দেশের প্রত্যেকটি রাজ্যের আলাদা আলাদা আবেগ রয়েছে। সেই আবেগে আঘাত হানবেন না। তাতে আগুন জ্বলবে। আর সেই আগুনের হাত থেকে কেউ রেহাই পাবেন না। গোটা দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বিজেপিকে ‘ওয়াশিং মেশিন’ বলেও কটাক্ষ করেছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জিএসটি চালু হওয়ার পর বিজেপি ওয়াশিং মেশিন হয়ে গেছে। যে কোনো দুর্নীতি করে বিজেপি থেকে যারা গেছেন, তারাই দুর্নীতিমুক্ত হয়ে গেছেন। এনআরসি এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে আমাদের অবস্থানকে স্বাগত জানিয়ে যে সব বিরোধী দল আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাদেরকে ধন্যবাদ জানাব। মমতা বলেন, ইতোমধ্যে পাঞ্জাব, কেরালা রাজ্য সরকার সিএবি এবং এনআরসি চালু করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। তারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর জন্য আমাদের জেলে পাঠাতে পারে। আরও অনেক বেশি অত্যাচার করতে পারে আমাদের। কিন্তু তার জন্য আমরা প্রস্তুত। কোনো অবস্থাতেই দেশকে দ্বিখণ্ডিত-ত্রিখণ্ডিত হতে দেব না।
পরপর কয়েক দিনে প্রতিবেশী বাংলাদেশ এবং জাপানের রাষ্ট্র নেতৃত্ব যেভাবে ভারতে আসবেন না বলে জানিয়েছেন, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক বরাবরের। কিন্তু একটা দল ক্ষমতায় এসে দেশের স্থায়িত্বকে নষ্ট করে দিচ্ছে। মমতা আরও বলেন, বিজেপি সাম্প্রদায়িক ভাবে খেলছে। কিন্তু আমরা সাম্প্রদায়িক তাস খেলব না। আমরা চাই সব সম্প্রদায়ের লোকেরা মাথা ঠান্ডা রেখে গণতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করুক। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে উত্তাল পরিস্থিতির জন্য আগামী ১৭ ডিসেম্বর দিল্লি সফর বাতিল করার কথা এ দিন ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিকে মমতার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়েছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী এবং কেরালার মুখ্যমন্ত্রীও। যে কোনো মূল্যে নাগরিকত্ব বিল তাদের রাজ্যে আটকানো হবে বলে জানিয়েছেন তারা। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমারিন্দর সিং বলেছেন, এ বিল অসাংবিধানিক। পাঞ্জাবে এই বিল আটকাতে প্রয়োজনে আইন পাস করা হবে। কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নও বলেছেন, সংবিধানের দেয়া অধিকার খর্বকারী নাগরিত্ব সংশোধনী বিল কোনোমতেই কেরালা সরকার কার্যকর করতে দেবে না।