দেশের খবর

যে কারণে নারায়ণগঞ্জ করোনার ‘হটস্পট’ !!

দেশের অন্যতম শিল্পসমৃদ্ধ ও বাণিজ্য নগরী নারায়ণগঞ্জ এখন প্রা’ণঘাতী করোনা’ভা’ইরাসের হটস্পট হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।দেশের অন্য ৬৩টি জেলায় নারায়ণগঞ্জ থেকে কোন লোক প্রবেশ করলেই তাকে নেয়া হচ্ছে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে।নারায়ণগঞ্জ থেকেই সারা দেশে করোনাভা’ইরাস ছড়িয়ে পরেছে, এমন অভিযোগের তীর ছোড়া হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে বিভিন্ন টিভি টক শো’তেও।

করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা আর দ্রুত সংক্রমণের কারণে নারায়ণগঞ্জ এখন করোনার ‘হটস্পট’ হিসেবে পরিচিত। কিন্তু কেন এই অবস্থা, সে বিশ্লেষণে বেরিয়ে এসেছে নানা কারণ।নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রতিনিধিদের দাবী, এ জেলা থেকে ছড়ায়নি বরং এখানে এ ভা’ইরাস ছড়িয়েছে অন্য জেলা থেকে আসা লোকজনের মাধ্যমে।

নারায়ণগঞ্জে গুচ্ছ সংক্রমণের নেপথ্যে প্রধান কারণ দেশের অন্য জেলা থেকে আসা লাখ লাখ শ্রমিক ও কর্মজীবি। তারা বলছেন, নারায়ণগঞ্জের চেয়ে রাজধানী ঢাকার বর্তমান পরিস্থিতি আরও বেশি ভ’য়ঙ্কর।

কিন্তু গুচ্ছ সংক্রমনের জন্য এককভাবে নারায়ণগঞ্জকে দায়ী করা হচ্ছে, অনেকে এই পরিস্থিতির জন্য মূলত দায়ী করছেন সংশ্লিষ্ট নীতি নির্ধারকদের।তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম তিন নভেল করোনাভা’ইরাস (কভিড-১৯) রোগী শনাক্ত হয়, যার মধ্যে ২ জন ছিলেন নারায়ণগঞ্জের ইতালি ফেরত।

মূলত, রোগী সনাক্তের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নারায়ণগঞ্জে প্রবাস ফেরতদের খোঁজে নামে প্রশাসন। কিন্তু ৬ হাজার ৬১জন প্রবাস ফেরতের মধ্যে কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা হয় মাত্র ১২শ’ ৮২ জনের।এরপর থেকেই বাড়তে থাকে সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা। তবে মূল বিপত্তি শুরু হয় চলতি মাসের ৪ এপ্রিল থেকে। কারণ গার্মেন্টসহ শিল্প কারখানা খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তে নারায়ণগঞ্জে প্রবেশ করেন কমপক্ষে ৫ থেকে ৬ লাখ শ্রমিক।

এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ ড. শিরিন বেগম যুগান্তরকে জানান, বিষয়টি একটু ভেবে দেখলেই প্রকৃত চিত্রটি উঠে আসবে। প্রথম ধাপের সাধারন ছুটি শেষ হওয়ার পরই কিন্তু ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে গুচ্ছ সংক্রমণের ঘটনা ঘটলো।অর্থাৎ যে বিপুল সংখ্যক লোকজন ছুটি ঘোষণার পর নিজ নিজ জেলায় ফিরে গেছেন, সে সব স্থানে প্রবাস ফেরতরাও ছিলেন। তখন আনুষ্ঠানিক লকডাউনও ছিলনা।

যখন তারা ফিরে আসলেন, তখন থেকেই সোশ্যাল ট্রান্সমিশন শুরু হল নারায়ণগঞ্জে। বিশেষ করে যারা সাধারণ ছুটিতে নারায়ণগঞ্জ ছেড়েছিলেন ঠিক ওই সময় ঢাকা থেকেও গ্রামে ছুটে গেছেন প্রায় ১ কোটি মানুষ।নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. মহসিন মিয়া জানান, গার্মেন্ট খুলে দেয়া ও বন্ধ করার সিদ্ধান্তে যে বিলম্ব হয়েছিল তাতেই কিন্তু ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে।

শুধু নারায়ণগঞ্জ কেন, ঢাকা ও গাজীপুরেও একই চিত্র ফুটে উঠছে। গত ৪ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ থেকে পালিয়ে শত শত মানুষ নিজ নিজ এলাকায় যাওয়ার চেষ্টা করছেন।গত ১৫ দিনে কমপক্ষে কয়েক হাজার মানুষকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঠেকিয়েছেন। যদি গার্মেন্ট সেকটরের বিশাল শ্রমিক জনগোষ্ঠীকে নিজ নিজ এলাকায় রাখা হতো, তাহলে করোনার এই ভ’য়াবহতা দেখা দিতো না।

কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে এখন নারায়ণগঞ্জকে দোষারোপ করা হচ্ছে। ভেবে দেখা উচিত, এই জেলায় কমপক্ষে ২০ লাখেরও বেশি শ্রমজীবী মানুষ থাকেন যারা দেশের প্রায় সব বিভাগের জেলাগুলো থেকে এসেছেন।নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও প্রবীন গণমাধ্যম কর্মী হাবিবুর রহমান বাদল জানিয়েছেন, ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলার মধ্যে ১১ জেলাতেই সংক্রমণ হয়েছে নারায়ণগঞ্জ ফেরত মানুষের মাধ্যমে।

চট্টগ্রাম বিভাগের ১০ জেলার মধ্যে নারায়ণগঞ্জ ফেরত মানুষের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়েছে ৮ জেলা। রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগের ১৬ জেলার মধ্যে ১২ জেলাতে প্রথম রোগী ধরা পড়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে যাওয়া কর্মজীবীদের শরীরে।খুলনা বিভাগের ১০ জেলার মধ্যে খুলনা ও নড়াইলে শনাক্ত রোগী নারায়ণগঞ্জ ফেরত। ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলাতেই প্রথম শনাক্ত রোগী গিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ থেকে।

এছাড়া, বরিশাল বিভাগের ৫ জেলায় ও সিলেট বিভাগের ২ জেলায় করোনাভা’ইরাস রোগী শনাক্ত হয় নারায়ণগঞ্জ থেকে যাওয়া মানুষের দেহে। সুতরাং এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে মূলত বাইরের জেলা থেকে আসা লোকজনের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ ক্লাস্টারে পরিণত হয়েছে এবং এরা ফেরত গিয়ে নিজ নিজ এলাকা সংক্রমিত করছেন।পাশাপাশি অনেকেই উপসর্গ গোপন করে চিকিৎসা নিয়েছেন এবং কোয়ারেন্টিন না মানায়র ঘটনাই এই জেলাকে হটস্পট বানানোর জন্য দায়ী।

J A Suhag

Local News: J A Suhag writes Local News articles for industries that want to see their Google search rankings surge. His articles have appeared in a number of sites. His articles focus on enlightening with informative Services sector needs. he holds the degree of Masters in Business and Marketing. Before he started writing, he experimented with various professions: computer programming, assistant marker, Digital marketing, and others. But his favorite job is writing that he is now doing full-time. Address: 44/8 - North Dhanmondi, Dhaka Email: [email protected]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button