যে কারণে রোহিঙ্গাদের মাঝে বাড়ছে এইচআইভি !!
বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মাঝে বিস্তার ঘটছে এইচআইভি এইডসের। সেইসাথে নানা যৌন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক। কয়েক মাসে তাদের মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণের বিস্তার লক্ষ্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, সামাজিকতা ও রোগ সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে এ ঘটনা ঘটছে। বাংলাদেশ সরকার প্রকাশিত সর্বশেষ ডাটা অনুযায়ী, কক্সবাজারে বসবাসকারী শরণার্থীদের মধ্যে ৩৯৫ জন রোহিঙ্গা এই ভাইরাসে আক্রান্ত। এ বছর নতুন ১০৫ জনের ক্ষেত্রে এই ভাইরাস সনাক্ত করা হয়েছে।
চলতি সমীক্ষা অনুযায়ী এইচআইভি সংক্রমণে মারা গেছেন ১৯ জন। এ খবর দিয়ে জার্মানভিত্তিক গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলে’র অনলাইনে প্রকাশ করা হয়েছে, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন সরকারি এই সংখ্যার চেয়ে আক্রান্তদের প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি হতে পারে। তারা সরকার ও কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এই রোগের বিস্তার রোধে পদক্ষেপ নিতে। রোহিঙ্গারা কক্সবাজারে আসার দু’এক মাস পরেই বাংলাদেশ সরকার বেসরকারি সংগঠনগুলোর সহায়তায় রোহিঙ্গাদের মেডিকেল টেস্ট সম্পন্ন করে।
এ সময় ৮৫ জনের দেহে এইচআইভি পাওয়া যায়। তারপর থকে এই সংখ্যা বাড়ছেই। এক জরিপে দেখা যায়, ২০১৮ সালের আগস্টে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে সরকারিভাবে ২৭৩ জনের দেহে এইচআইভি আছে বলে রেকর্ড করা হয়েছে। এই সংখ্যা ২০১৯ সালের ৮ই মার্চে এসে দেখা যায় বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৩১৯। এক্ষেত্রে আরো অনেক মানুষের পরীক্ষা সম্পন্ন হয় নি। ৩১৯ জনের দেহে এইচআইভি ভাইরাস পাওয়া যাওয়ার পর ২৭৭ জন চিকিৎসা নেয়া শুরু করেছেন। মারা গেছেন ১৯ জন। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্প্রতি যে ডাটা প্রকাশ করেছে তাতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৩৯৫ জন এইচআইভিতে আক্রান্ত।
এইচআইভির বিস্তারের নেপথ্যে অসচেতনতাকেই দায়ি করেছেন জনস্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা। আরও রয়েছে সামাজিক নানা কুসংস্কার। এসব মিলে পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলেছে। অন্য সব রক্ষণশীল সমাজের মতোই কারো দেহে এইচআইভি পাওয়া গেলে তাকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখে। তাদের ভয়, ওই ব্যক্তির দেহ থেকে এইচআইভি ছড়াতে পারে। আবার যাদের দেহে এই ভাইরাস পাওয়া গেছে তারা চিকিৎসা নিতে গড়িমসি করেন। কক্সবাজারে নিয়োজিত একজন চিকিৎসক মোহাম্মদ আবদুল মতিন এ কথা বলেছেন।
আবার অনেক রোহিঙ্গা এইচআইভিকে জ্বর, ঠান্ডার মতো সাধারণ অসুস্থতা হিসেবে দেখে থাকেন বলে মনে করেন ঢাকা ভিত্তিক পপুলেশন সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেইনিং সেন্টারে কর্মরত মেডিকেল অফিসার আসিফ হোসেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদেরকে এই রোগের ভয়াবহতা সম্পর্কে বোঝানো খুবই কঠিন। অনেক রোগি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসরণই করেন না। বিশেষ করে যখন তারা যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেন।