রাজধানীতে ট্রাকে করে অভিনব পদ্ধতিতে আসছে শত শত মানুষ !!
গার্মেন্ট কারখানা খুলে দেওয়ায় প্রতিদিনই রংপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ট্রাকে করে অভিনব পদ্ধতিতে ঢাকায় যাচ্ছে শত শত মানুষ। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় তারা যে যেভাবে পারছেন ঢাকায় যাচ্ছে। ট্রাকের ভেতরে ৩০-৪০ জন নারী-পুরুষ বসিয়ে দিয়ে চারদিকে ত্রিপল দিয়ে শক্ত রশি দিয়ে বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে ভেতরে পণ্য রয়েছে। এভাবেই রংপুর থেকে শত শত মানুষ ঢাকায় যাচ্ছে।ট্রাকে করে ঢাকায় যাওয়া বেশিরভাগই গার্মেন্ট শ্রমিক। তারা গাজীপুর, চন্দ্রা, সাভার, আশুলিয়ার বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে কাজ করে পোশাক শ্রমিক সহ বিভিন্ন পেশায় কাজ করে।
জেলার মিঠাপুকুরের পায়রাবন্দ এলাকায় আজ বুধবার (২৯ এপ্রিল) সকালে গিয়ে দেখা যায়, রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে শতাধিক নারী-পুরুষ জটলা করে দাঁড়িয়ে আছে। তারা সবাই গার্মেন্ট কারখানায় কাজ করে। তাদের বাড়ি রংপুরের তারাগঞ্জ, কাউনিয়া, বদরগঞ্জ, গঙ্গাচড়া উপজেলাসহ কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার বিভিন্ন স্থানে। সবাই ঢাকায় যাওয়ার জন্য গাড়ির অপেক্ষায়। করোনা পরিস্থিতির লকডাউনের কারণে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় তারা অপেক্ষা করছেন পণ্যবাহী ট্রাক বা অন্য যানবাহনের। পায়রাবন্দে বেগম রোকেয়ার বাড়ি যাওয়ার প্রবেশ পথে বিশাল তোরণের সামান্য দূরে একটি ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। সেখানে থাকা ট্রাকের দালালরা বললেন মালামাল লোড করা হচ্ছে।
অন্যদিকে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দুই যুবক বললো, মালামাল নয় মানুষ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ট্রাকে করে। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তড়িঘড়ি করে ট্রাকটি পায়রাবন্দের দিকে চলে যায়। কিছুদূরে গিয়ে ট্রাকটি থামায় ড্রাইভার। এরপর ট্রাকের ওপর এিপল দিয়ে ঢেকে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। ট্রাকের কাছে যেতেই মানুষের কথা বলার শব্দ ভেসে আসে। এরপর ট্রাকের ওপর উঠে পলিথিনের কিছু অংশ খুলে দেখা যায় ভেতরে ৩০-৩৫ জন বসে আছে। রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ থেকে আসা গার্মেন্টকর্মী আমিনা বেগম বলেন, ‘কাজে যোগ দিতে কর্তৃপক্ষ ফোন করছে। আর সরকার বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে। কী করবো? তাই জীবন বাজি রেখে যাচ্ছি। জানি না যেতে পারবো কিনা। ট্রাকচালক সালাহ উদ্দিন মিয়া বলেন, ‘এমনি ট্রাকে করে মানুষ নিয়ে গেলে পুলিশ ট্রাক আটকাবে। তাই বাধ্য হয়ে সবাইকে বসিয়ে ট্রাকের ওপর এিপল দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। তারপরেও ঘাটে ঘাটে টাকা দিতে হবে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানালেন, এভাবেই মঙ্গলবার সকাল থেকে চারটি ট্রাকে করে দুই শতাধিক গার্মেন্ট শ্রমিক ও মানুষ গেছে। এব্যাপারে মিঠাপুকুর থানার ওসি জাফর আলী বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, ‘এভাবে তো মানুষ নিয়ে যাওয়া অমানবিক। আমরা বিষয়টি দেখছি।’