শুধু বাংলাদেশ নয়, ১২ দেশে ‘ফ্রি ভ্যা’কসিন’ পাঠাচ্ছে ভারত !!
ভারত থেকে ২০ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে আসবে বুধ অথবা বৃহস্পতিবার। দেশে টিকা কার্যক্রম ব্যাপকভাবে শুরু হওয়ার আগে কিছু স্বেচ্ছাসেবক এবং স্বাস্থ্যকর্মীর ওপর এই টিকা প্রয়োগ করে অন্তত সাত দিন পর্যবেক্ষণ করা হবে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।
তবে বন্ধুপ্রতীম বাংলাদেেই শুধু নয়, শুভেচ্ছার নিদর্শন হিসেবে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমারের মতো প্রতিবেশীসহ মোট ১২টি দেশকে বিনামূল্যে করোনাভাইরাসের ভ্যা’কসিন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। তবে নেপাল-ভুটানের মতো ছোট জনগোষ্ঠীর দেশগুলোকে সব ফ্রি আর বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে ২০ লাখ ভ্যা’কসিন দেবে মোদি সরকার।
বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ করোনা সংক্রমিত দেশ ভারত গত ৩ জানুয়ারি একসঙ্গে দুটি ‘ভ্যা’কসিনের অনু’মোদন দিয়েছে। এর একটি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিশিল্ড, অপরটি ভারত বায়োটেকের কোভ্যা’ক্সিন। অক্সফোর্ডের অনুমতি সাপেক্ষে কোভিশিল্ড উৎপাদন করছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট। এটি নিয়ে খুব একটা উচ্চবাচ্য না হলেও ভারতীয়দের আবিষ্কৃত কোভ্যা’ক্সিনের অনুমোদন নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। কারণ সেটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালই এখনও শেষ হয়নি, নেই সুরক্ষা সংক্রান্ত পর্যাপ্ত তথ্যও।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট বলছে, গত সোমবার ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, রাসায়নিক ও সার মন্ত্রণালয়ের (এর অধীনে রয়েছে দেশটির ফার্মাসিউটিক্যালস বিভাগ) কর্মকর্তারা সিরাম ইনস্টিটিউট এবং ভারত বায়োটেকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে ভ্যা’কসিন রফতানির বিষয়ে কথা হয়েছে তাদের।সরকারি সূত্রের বরাতে দ্য প্রিন্ট জানিয়েছে, বেশকিছু দেশের জরুরি প্রয়োজন মেটাতে প্রথম ধাপের ভ্যা’কসিন সহায়তা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় সরকার।
বৈঠকে অংশ নেয়া এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, শুভেচ্ছার নিদর্শন হিসেবে ভারত সরকার মঙ্গোলিয়া, ওমান, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, বাহরাইন, মালদ্বীপ ও মরিশাসে কোভ্যা’ক্সিন পাঠাবে। ভুটান, আফগানিস্তান, নেপাল, বাংলাদেশ ও সিশেলসে পাঠানো হবে কোভিশিল্ড।বৈঠকে কর্মকর্তারা রফতানির পর দেশীয় ব্যবহারের জন্য ভ্যা’কসিনের প্রাপ্যতা নিয়েও আলোচনা করেন।
ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, আমরা ঠিক করেছি, এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ড্রাগস ল্যাবরেটরি থেকে অনুমোদিত ডোজগুলোর অর্ধেক রফতানি করা যেতে পারে। প্রতিটি দেশকে ততটুকুই দেয়া হবে, যতটা তারা চাহিদা দেখিয়েছে। ভারতে বর্তমানে পাঁচ কোটির [ডোজ] মতো মজুত রয়েছে, এর মধ্যে আড়াই কোটি রফতানি করা যাবে।অবশ্য মোট কতগুলো দেশে ভারত ফ্রি ভ্যা’কসিন পাঠাবে, তা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিয়েছে দেশটির একাধিক গণমাধ্যম।
টাইমস নাউ টেলিভিশনের একটি ভিডিওর ভিত্তিতে ইকোনমিক টাইমস বলেছে, সুসম্পর্কের খাতিরে মোট ছয়টি দেশে ফ্রি ‘ভ্যা’কসিন পাঠাবে ভারত।অর্থনীতিপ্রধান পত্রিকা মিন্ট বলছে, নেপালের কাছ থেকে করোনা ভ্যা’কসিনের জন্য কোনো অর্থ নিচ্ছে না ভারতীয় সরকার। বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে ২০ লাখ ডোজ দেবে তারা।এছাড়া, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী নিশ্চিত করেছেন, তাদেরও বিনামূল্যে ভ্যা’কসিন দিচ্ছে ভারত।