সন্তানের সাফল্যের জন্য মায়ের দোয়াই যথেষ্ট !!
পৃথিবীর একমাত্র নিরাপদ আশ্রয়স্থান হলো মায়ের কোল। যত আবদার যত অ’ভিযো’গ সবই কিছু মায়ের কাছে। শুধু দশ মাস দশ দিন নয়, মা তার পুরো জীবন উৎস’র্গ করে দেন সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করতে। আমরা সেই মায়ের জন্য কতটুকুই বা করতে পারি?
গায়ের চামড়া দিয়ে মায়ের পায়ের জুতা বানিয়ে দিলেও তার ঋণ কখনো সন্তানরা শোধ করতে পারবে না। মায়ের দোয়া সন্তানের জন্য কত বড় আর্শীবাদ সেই বোধ অনেকেরই নেই। আর তাইতোবৃদ্ধাশ্রমে মা রেখেই শান্তিতে থাকেন তারা। আসলেই কি তারা সুখী হতে পারেন? একটি শিশু তার মায়ের প্রতি যথাযথা দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দোয়া অর্জন করে তার জীবনকে পরিবর্তন করতে পারে।
সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের গর্ব তিনি। একদিকে যেমন মাঠ সামলাম অন্যদিকে বাবা মায়ের প্রতি দায়িত্ব কর্তব্যও নিষ্ঠতার সঙ্গে পালন করেন তিনি। বিশেষ করে মায়ের প্রতি সাকিবের কৃতজ্ঞতার অন্ত নেই। বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেনছেন, বাবা-মায়ের দোয়া ছাড়া কখনো সফল হওয়া সম্ভব নয়। তারা আমাদের জন্য যে ত্যাগ স্বীকার করেন তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
জীবনের শেষ দিন অবধি মা তার সন্তানের জন্য দোয়া করে যান। অথচ এর বিনিময়ে কখনোই তিনি কিছু প্রত্যাশা করেননা। ঠিক বাবাও তেমন। বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসা সবচেয়ে খারাপ কাজ হিসেবেও উল্লেখ করেন এই অলরাউন্ডার। আমি বিশ্বাস করি আস্তে আস্তে পৃথিবীর সব বৃদ্ধাশ্রম বন্ধ হয়ে যাবে। বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসা সবচেয়ে নিকৃষ্ট একটি কাজ। একজন সফল ব্যবসায়ী আবদুল্লাহ মাহতাব। বাবা মা;রা যাওয়ার পর তার মা একা হাতেই তাকে মানুষ করেন। মাত্র ১৭ বছর বয়সেই ব্যবসা শুরু করেন তিনি। আজ তিনি এক মস্ত বড় ব্যবসায়ী। তিনিও তার মায়ের সেবা যত্ন কর গেছেন মায়ের মৃ;ত্যুর আগ অবব্দি তিনি তার সেবা যত্ন করে গেছেন। মৃত্যুর আগ মুহূর্তে তার মা ছিলেন বিছানাসহ্যা। তার মল-মূত্র নিজ হাতে শ্রেষ্ঠ সন্তানের ন্যায় পরিষ্কার করেছেন মাহতাব। তিনি জানান, মায়ের জন্য কতটুকু করতে পরেছি তা তিনি জানেন না। তবে নিজের অবস্থান দেখে ক্রমশ তিনি উপলব্ধি করেছেন একমাত্র মায়ের দোয়ার কারণেই এসব সম্ভব হয়েছে।
স্ত্রী-সন্তান ও দুনিয়ার মোহে পড়ে বর্তমানে অনেকেই মা-বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দেয়। যা মোটেও ঠিক নয়। এখনো সময় আছে তাদের কাছে মাফ চান। পিতা-মাতা সন্তানের জন্য এক মহান আশীর্বাদ। পৃথিবীর সমস্ত সফলতা একমাত্র মায়ের দোয়ার বদৌলতেই আসতে পারে। সময় থাকতে মায়ের সেবা করে দোয়া আদায় করে নিন। কর্তব্য পালনের মাধ্যমে মধুর সম্পর্ক তৈরি করুন। মাতৃ সেবা করার মাধ্যমে পরকালে জান্নাতের পথেও প্রবেশযোগ্য হবে।
ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষের কাছে তার মায়ের চেয়ে আপন আর কেউ নেই। শুধু মানুষ কেন? পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণীই তার মায়ের কাছে ঋণী। সে ঋণ শোধ করার কোনো উপকরণ আল্লাহপাক দুনিয়ায় সৃষ্টি করেননি।
ইসলাম মায়ের মর্যাদাকে মহিমান্বিত করেছেন। এ ব্যাপারে আল্লাহ কোরআনে বলেন, ‘আমি মানুষকে তার মা-বাবার সঙ্গে (সদাচরণের) নির্দেশ দিয়েছি। তার মা কষ্টের পর কষ্ট ভোগ
করে তাকে গর্ভে ধারণ করে। আর তার দুধ ছাড়ানো হয় দুই বছরে; সুতরাং আমার শুকরিয়া ও তোমার মা-বাবার শুকরিয়া আদায় করো- (সুরা লুকমান : ১৪)।
একবার এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার কাছে কে উত্তম ব্যবহার পাওয়ার বেশি হকদার? তিনি বললেন, মা। লোকটি বলল, তারপরকে? তিনি বললেন, তোমার মা। সে বলল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। সে বলল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার বাবা- (বোখারি-মুসলিম)।