দেশের খবর

সার্ভেয়ারদের বাসা যেন সরকারি অফিস-এজেন্ট ব্যাংকের শাখা !!

র‍্যাব-১৫ এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ বলেছেন, কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সার্ভেয়ারদের বাসা যেন সরকারি অফিস ও এজেন্ট ব্যাংকের শাখা। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ঘুষের প্রায় কোটি টাকাসহ আটক সার্ভেয়ার ওয়াসিম খানকে জিজ্ঞাসাবাদে ঘুষ লেনদেনের সঙ্গে জড়িত সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেটের সন্ধান পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজার র‍্যাব-১৫ এর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন তিনি এ কথা বলেন।

আজিম আহমেদ বলেন, র‍্যাব মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর পাশাপাশি সম্প্রতি সারাদেশে শুদ্ধি অভিযানের অংশ হিসেবে বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া ও তারাবনিয়ারছড়া এলাকায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের তিন সার্ভেয়ারের বাসায় অভিযান চালায়। শুরুতে সার্ভেয়ার ফরিদ উদ্দিনের বাসায় অভিযান চালিয়ে সার্ভেয়ার ওয়াসিম খানকে আটক করা হয়। তার দেয়া তথ্যে তারই ব্যাগ থেকে ৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকা, ফরিদ উদ্দিনের শয়ন কক্ষের ফক্স হুলের রুম থেকে ৬১ লাখ ২০ হাজার ৫৫০ টাকা, আরেক সার্ভেয়ার মো. ফেরদৌস খানের তারাবনিয়ারছরার বাসা থেকে ২৬ লাখ ৮৪ হাজার ৬০০ টাকা জব্দ করা হয়। কিন্তু অভিযানের খবর পেয়ে তারা আগেই পালিয়ে যান।

তিনি আরও বলেন, অভিযানে বিভিন্ন ব্যাংকের ১৫ লাখ টাকার চেক, লেনদেন রেজিস্ট্রার ও হিসাব বিবরণীসহ গুরুত্বপূর্ণ নানা কাগজপত্র জব্দ করা হয়। সেখানে সার্ভেয়ার, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের নাম এবং লেনদেন হিসাব বিবরণী রয়েছে। নাম এসেছে অনেক সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক নেতারও। এদের মধ্যে শীর্ষ হিসেবে প্রায় অর্ধশত দালালের নাম উঠে এসেছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না। তবে চিহ্নিত এসব দালালদের ধরতে অভিযান চলবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে র‍্যাব কর্মকর্তা আজিম আহমেদ বলেন, গ্রেফতার হওয়া সার্ভেয়ার ওয়াহিদ ২০১৮ সালে ঢাকায় এলএও অফিসে কর্মরত থাকার সময় দুর্নীতির দায়ে দুদকের মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন। কক্সবাজারে আসার পর পুরোনো অপকর্ম ছাড়তে পারেননি। সম্প্রতি বিভিন্ন জনকে ২ কোটি টাকা হস্তান্তর করার হিসাব মিলেছে তার কাছ থেকে। এসব টাকা ব্যবসায়ীক ধার হিসেবে দিয়েছেন বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন ওয়াসিম। এছাড়াও পলাতক সার্ভেয়ার ফেরদৌসের বাসা থেকে প্রায় ৭ বস্তা সরকারি নথিপত্র পাওয়া গেছে। বাসাটি দেখে সরকারি অফিস এবং টাকার যোগান দেখে মনে হয়েছে ব্যাংকের কোনো মিনি শাখা।

গ্রেফতার মো. ওয়াসিম খান (৩৭) বরিশাল সদরের নবগ্রাম রোডের ৫৬ নম্বর বাসার মনসুর কোয়ার্টারের মো. দলিল উদ্দিন খানের ছেলে। আর পলাতক ফরিদ উদ্দিন (৩৬) পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার গোসিংগার আবু বক্কর সরদারের ছেলে, ফেরদৌস খান (৩৬) রাঙ্গামাটি সদরের দক্ষিণ কালিন্দিপুরের ময়নাল খানের ছেলে। তাদের নাম উল্লেখ করে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা করা হয়েছে। তাদের অপকর্মে ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পিছপা হবে না র‍্যাব।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব কর্মকর্তা মেজর মেহেদী হাসান, রবিউল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কক্সবাজার সদর থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) মো. খায়রুজ্জামান বলেন, র‍্যাব থেকে একটি মামলা আসার কথা। তবে বিকেল পর্যন্ত আসেনি। মামলাটি এলে নথিভুক্ত করা হবে। মানি লন্ডারিং ধারা যুক্ত হবে বিধায় মামলাটি দুদক বা সিআইডি তদন্ত করবে।

সূত্র মতে, কক্সবাজারে সরকারের অর্ধ শতাধিক মেগা-প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এসব উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য সরকারের ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রমও চলমান। এ ভূমি অধিগ্রহণকে ঘিরে সংঘবদ্ধ একটি চক্র জমির মালিকদের নানাভাবে জিম্মি করে বড় অংকের টাকা কমিশন হিসেবে আদায় করছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাবের একটি দল বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানে ঘুষের ৯৩ লাখ ৬০ হাজার নগদ টাকাসহ একজন আটক হন। তিনি আটক হওয়ার পর থেকে সার্ভেয়ারদের মূল দালাল হিসেবে হোছন ড্রাইভার , মাসুম, তোফায়েল, সোহেল, সাগরসহ আরও কয়েকজনের নাম আলোচনায় এসেছে। তাদের ধরতে অভিযান চালানোর অনুরোধ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগীদের মতে, শুধু এরা নয়, এলএ অফিসের সিংহভাগ সার্ভেয়ার, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অফিসাররা ঘুষের চক্রে জড়ানো। এর একটি অংশ এলআর ফান্ডে যায় বলে জেলার শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছেও কোনো প্রতিকার মেলে না। বাধ্য হয়ে দালাল ও সার্ভেয়ারের দ্বারস্থ হতে হয় ভূমি মালিকদের। ফলে নিম্নে ২০ শতাংশ থেকে ক্ষেত্র বিশেষে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন ছেড়ে দিতে হয় জমির মালিকদের। অনেক ক্ষেত্রে দালালদের সঙ্গে চিহ্নিত কয়েকজন সাংবাদিকও এসব কমিশন বাণিজ্যে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। পলাতক সার্ভেয়ার ফরিদ উদ্দিন বাউফলে থাকাকালীন একই কায়দায় মানুষকে জিম্মি করে অঢেল টাকার মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার বলেন, আমাদের অফিসে সার্ভেয়ারের সংখ্যা অনেক। কে কোন সময়ে এসেছে না দেখে বলা যাচ্ছে না। ওয়াসিম কবে এখানে এসেছে বা ঢাকায় থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ ছিল তা আমাদের জানা নেই। বাকিদের বিষয়েও একই অবস্থা। এরপরও র্যাবের আইনানুগ প্রক্রিয়ার নথি হাতে পেলে আমরাও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া শুরু করব।

সার্ভেয়ারদের অপকর্মের সঙ্গে এলআর ফান্ডের কোনো সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে তিনি বলেন, চেক হস্তান্তরের সময় ভূমি মালিকদের বলা হয় কোনো হয়রানি হয়ে থাকলে সরাসরি বলতে সমস্যা হলে গোপনে এসে বলে যাবেন। এরপরও তারা আসেন না।

সূত্রঃ জাগো নিউজ

J A Suhag

Local News: J A Suhag writes Local News articles for industries that want to see their Google search rankings surge. His articles have appeared in a number of sites. His articles focus on enlightening with informative Services sector needs. he holds the degree of Masters in Business and Marketing. Before he started writing, he experimented with various professions: computer programming, assistant marker, Digital marketing, and others. But his favorite job is writing that he is now doing full-time. Address: 44/8 - North Dhanmondi, Dhaka Email: [email protected]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button