সিএএ বিতর্কে সেনাপ্রধান, পাশে দাঁড়ালেন ভি কে সিং !!
ভারতের বিতর্কিত সংশোধিত নাগরিক আইন নিয়ে মন্তব্য করায় বিরোধী রাজনৈতিকদের সমালোচনায় পড়া সেনাপ্রধানের পাশে দাঁড়ালেন সাবেক সেনাপ্রধান ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ভি কে সিং। তিনি বলেন, সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াতের মন্তব্যে ‘কোনো রাজনীতি দেখছি না’।
শুক্রবার ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে তিনি এ কথা বলেন।তিনি বলেন, প্রসঙ্গ না বুঝেই সংবাদমাধ্যম ও বিরোধীরা এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করছে। বিরোধীদের উদ্দেশ্যে ভি কে সিং বলেন, ‘ফুটবল খেললেও বিরোধীরা বলবেন, রাজনীতি করছি’।
আগামী ৩১ ডিসেম্বর সেনাপ্রধানের পদ থেকে অবসর নেবেন বিপিন রাওয়াত। তবে কয়েকদিন আগেই তিন বাহিনীর প্রধান হিসেবে ‘চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ’ নামে নতুন পদ সৃষ্টি করেছে ভারত। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, সেই পদে বিপিন রাওয়াতের নাম নিয়ে জল্পনাও রয়েছে।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই গতকাল বৃহস্পতিবার দিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান নাগরিক সংশোধনী আইন নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তার কথায়, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অগ্নিসংযোগ ও হিংসা ছড়াচ্ছেন। এটা কখনও নেতৃত্ব হতে পারে না। যারা মানুষকে ভুল পথে চালিত করেন, তারা কখনও নেতা হতে পারেন না।
কংগ্রেসসহ বিরোধীরা বলছে, একজন সেনাপ্রধান হিসেবে রাজনৈতিক কোনো বিষয়ে মত প্রকাশ করার এখতিয়ার না থাকলেও কীভাবে তিনি ওই মন্তব্য করলেন। এ নিয়ে নানা মহলে সমালোচিত হন তিনি।
এমন বিতর্কে সেনাপ্রধান রাওয়াতের পাশে দাঁড়ান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভি কে সিং। তিনি বিরোধীদের পাল্টা আক্রমণ করে বলেন, ‘বিরোধীরা আমাদের মহান দেশে যে কোনো বিষয়কেই বিতর্কিত বানিয়ে ফেলতে পারে। কোনো প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত এ কথা বলেছেন, সেটা আগে দেখা উচিত। তাকে জিজ্ঞেস করুন, ঠিক কী বলতে চেয়েছেন। আমি যদি অযথা সম্পদ ভাঙচুর না করার জন্য ছাত্রদের বলি, সেটা কি রাজনীতি? নিজের বিবেককে প্রশ্ন করুন। সেনাপ্রধানের সঙ্গে কথা বলে জানুন, কোন্ প্রেক্ষিতে তিনি ওই কথা বলেছেন।’
বিরোধীদের উদ্দেশে ভি কে সিং বলেন, ‘আমি ফুটবল খেললেও বিরোধীরা বলবেন রাজনীতি করছি। আপনারা যদি বুঝতে না পারেন যে, কোন্ প্রেক্ষিতে উনি (সেনাপ্রধান) এ কথা বলেছেন। জানতে তার কাছে যান আর যাচাই করুন। উনি যদি ভাঙচুর-হিংসা থেকে বিরত থাকার জন্য শিক্ষার্থীদের উপদেশ দেন, সেটা খারাপ নয়। জানি না এর মধ্যে দোষের কী আছে?’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ছাত্রদের উপদেশ দেয়া বা নেতা কেমন হওয়া উচিত, তা নিয়ে মন্তব্য করা দোষের নয়। কিন্তু সেনাপ্রধান হিসেবে ওই মন্তব্য অবশ্যই ‘অন্যায়’। তাদের যুক্তি, সেনাবাহিনীর আইনেই বলা হয়েছে, বাহিনীর কোনো সদস্য রাজনৈতিক কর্মসূচি বা বিক্ষোভে যোগ দেয়ার অধিকার নেই। সংবাদমাধ্যমে বা অন্য কোথাও রাজনৈতিক মতামত দিতে পারবেন না। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে মন্তব্য করে সেই নিয়ম ভেঙেছেন সেনাপ্রধান।